Buddhadeb Bhattacharya Daughter : ‘বিয়িং বোল্ড’, বুদ্ধ-কন্যা চান সুচেতন হতে – west bengal former chief minister buddhadeb bhattacharya daughter suchetana bhattacharya to undergo sex change surgery


এই সময়: সুচেতনা থেকে সুচেতন হতে চান তিনি। সু-চেতনার এই বার্তা ছড়িয়ে পড়তেই তাঁর নাম ছড়িয়ে পড়েছে বহু মানুষের মুখে মুখে। সামাজিক মাধ্যম থেকে কলেজ ক্যাম্পাসের আলোচনায় সুচেতনার সুচেতন হয়ে ওঠার বার্তাই যেন ‘টক অফ দ্য টাউন’। সুচেতনার আবার অন্য একটি পরিচয়ও আছে। তিনি রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের মেয়ে। তবে মেয়ে থেকে ছেলে হয়ে ওঠার সিদ্ধান্তের সঙ্গে তাঁর পিতৃ-পরিচয়কে যে ভাবে জুড়ে দেওয়া হচ্ছে, তাকে অবশ্য সুচেতন ততটা গুরুত্ব দিতে নারাজ।

Buddhadeb Bhattacharjee Daughter: ‘অনেককে অনুপ্রেরণা দেবে…’, বুদ্ধ কন্যা সুচেতনার লিঙ্গ বদল নিয়ে মুখ খুললেন সুজয়প্রসাদ
তবে এ দিন তিনি স্পষ্ট ভাবেই বলেন, ‘অনেকদিন থেকেই আমি লিঙ্গ পরিবর্তন করার কথা ভাবছিলাম। ধীরে ধীরে আমি মানসিকভাবে আরও বোল্ড হয়েছি। তারপর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’ তাঁর সংযোজন, ‘বহুদিন ধরেই আমি মানসিক ভাবে ট্রান্স ম্যান (রূপান্তরিত পুরুষ)। কিন্তু এবার শারীরিক ভাবেও সেই লিঙ্গ পরিচিতি চাইছি।’ আর সেই কারণে তিনি ইতিমধ্যে আইনি ও চিকিৎসকদের পরামর্শ নিতেও শুরু করেছেন।

Ajit Doval On Netaji : ‘ইতিহাস নির্দয়! নেতাজির মৃত্যুর পর…’, অজিত ডোভালের মন্তব্যে কীসের ইঙ্গিত?
এই খবর প্রথম জানা যায় মঙ্গলবার সুপ্রভা রায় নামে এক বাম কর্মীর করা ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে। তিনি নিজেও রূপান্তরিত নারী। পিপলস রিলিফ কমিটি আয়োজিত এলজিবিটিকিউআইএ+ মানুষদের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত কর্মশালায় গিয়েছিলেন সুচেতনা ভট্টাচার্য। সেখানে গিয়েছিলেন সুপ্রভাও। এরপর দুজনের সাক্ষাতের কথা, সুচেতনার নতুন পরিচয়ের কথা জানিয়ে একটি দীর্ঘ ফেসবুক পোস্টও লিখেছেন সুপ্রভা।

Ashish Vidyarthi Birthday : ‘কালো বলে খোঁটা দিত…’, বর্ণবিদ্বেষের শিকার জাতীয় পুরস্কারজয়ী আশিস বিদ্যার্থীও
সুচেতন বা সুচেতনা অবশ্য মনে করেন, তাঁর এই সিদ্ধান্ত একান্তই তাঁর ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। সুচেতনের কথায়, ‘আমার বয়স এখন ৪১ বছর। সিদ্ধান্তটা আমার। অনেকেই আমার মতো আছেন। তাঁদের পিতৃ পরিচয় বা মাতৃ পরিচয় এখানে খুব একটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। আমি নিজের মতো করেই গোটা প্রক্রিয়াটা নিয়ে লড়ে যাব।’

একই সঙ্গে তিনি মনে করেন, তাঁর থেকেও লড়াইটা আরও দুর্গম বহু প্রান্তিক মানুষের কাছে। গ্রামে-মফঃস্বলে এমনকী শহরেও এমন বহু মানুষকে কেবলমাত্র তাঁর লিঙ্গপরিচিতির জন্যই মুখ গুজে লড়াই করতে হচ্ছে। তাঁদের জন্য মন কাঁদে সুচেতনের। তিনি বলছেন, ‘এলজিবিটিকিউআইএ+ মানুষের সপক্ষে সংবাদমাধ্যমের ভূমিকাকে আমি কুর্নিশ জানাই।

Tantrik Killed UP Woman : পুরুষ হওয়ার আকাঙ্খায় তান্ত্রিকের শরণাপন্ন, লেসবিয়ান তরুণীর ভয়ংকর পরিণতি
আর প্রতিটা রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনকেও আমি আবেদন জানাই তাঁরা যেন ওই মানুষগুলোর কথা ভাবেন। আমাদের সাহায্য করেন।’ সুচেতন এ ব্যাপারে অবশ্য সচেতন যে বহু মানুষকে কেবলমাত্র এই কারণের জন্যই পরিবারের মধ্যেও অসম লড়াই চালিয়ে যেতে হচ্ছে। তাই তাঁর বক্তব্য, ‘আমার পরিবার কখনও কোনও আপত্তি করেনি।’

অনেক বিশেষজ্ঞরই মতে, পরিবর্তনের যে ধাপে সুচেতনা রয়েছেন তেমন পরিস্থিতিতে শারীরিক ও মানসিকভাবে দৃঢ় হতে হবে। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, লিঙ্গ পরিবর্তনের প্রস্তুতিটা কমপক্ষে দু’-তিন বছরের। যার মধ্যে কাউন্সেলিং, চিকিৎসা ও অপারেশন সবই থাকে। মনোরোগ বিশেষজ্ঞ সুজিত সরখেল বলেন, ‘শরীরে পুরুষ মনে নারী বা উল্টোটা হলে অনেকেই লিঙ্গ পরিবর্তন করতে চান। কিন্তু এই সেক্স রি-অ্যাসাইনমেন্ট পর্বটা চটজলদি কোনও প্রক্রিয়া নয়। সাইকিয়াট্রিস্ট, এন্ডোক্রিনোলজিস্ট, গাইনেকোলজিস্ট এবং প্লাস্টিক সার্জেনদের নিয়ে তৈরি একটি বোর্ড এ ব্যাপারে ধাপে ধাপে সিদ্ধান্ত নেন।’

তবে সুচেতনার এই সিদ্ধান্ত নিয়ে উচ্ছ্বসিত অনেকেই। সিপিএম নেতা শতরূপ ঘোষের বক্তব্য, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে সুচেতনা ভট্টাচার্যের জন্য গর্বিত। দলীয় ভাবেও আমরা মনে করি প্রতিটি মানুষের যৌন দৃষ্টিভঙ্গি, লিঙ্গ পরিচিতি, জাতিসত্তা এবং ধর্মীয় স্বাধীনতা থাকা উচিত।’ অভিনেত্রী ঊষশী চক্রবর্তীর সংযোজন, ‘যে আলোচনায় সুচেতনা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, সেখানে আমি বক্তা হিসেবে ছিলাম।

Adipurush Sunil Lahiri: ‘ডুবে মরা উচিত…’, আদিপুরুষ দেখে নির্মাতাকে কটাক্ষ রামায়ণের লক্ষ্মণের
সুচেতনার মতো যে সব মানুষের সামাজিক পরিচিতি রয়েছে, তাঁদের পক্ষে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়াটা সাহসিকতারই পরিচয়।’ রাজ্যের ট্রান্সজেন্ডার বোর্ডের ভাইস চেয়ারপার্সন মানবী বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য, ‘সুচেতনাকে আমার অভিনন্দন ও ভালোবাসা।’ প্রত্যেকেই আশা রাখেন, সুচেতনার এই চেতনার রঙ হবে সাত রঙে রাঙানো। আরও বহু মানুষের সাহসের অনুপ্রেরণা হয়ে উঠবেন তিনি।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *