জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: দেশের অন্যতম সেরা সেন্ট্রাল মিডফিল্ডার অনিরুদ্ধ থাপা (Anirudh Thapa)। আগামী পাঁচ বছর টিম ইন্ডিয়ার (Indian Football Team) এই তারকা ফুটবলারকে সবুজ-মেরুন জার্সি গায়ে চাপিয়ে খেলতে দেখা যাবে। তিনি মোহনবাগান সুপার জায়ান্টে (Mohun Bagan Super Giant) যোগ দেওয়ায় জুয়ান ফেরান্দো ও আন্তোনিও লোপেজ হাবাসের (Antonio Lopez Habas) মাঝমাঠের শক্তি বাড়ল অনেকটাই।
চেন্নাইয়িন এফসি-র হয়ে গত পাঁচ মরসুম খেলেছেন অনিরুদ্ধ। সেন্ট্রাল মিডিও হিসেবে খেললেও অ্যাটাকিং থার্ডে তিনি সমান সাবলীল। ঠিকানা লেখা পাস বাড়ানোয় সমান দক্ষ। তাঁর সবচেয়ে বড় গুণ হল যে কোনও ফর্মেশনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারেন তিনি।
অনিরুদ্ধ থাপা বলছেন, “মোহনবাগান গতবারের আইএসএল চ্যাম্পিয়ন। মোহনবাগানের হয়ে খেলার সুযোগ পেয়ে আমি সত্যিই খুশি। ভারতীয় ফুটবলে সবুজ-মেরুন জার্সির ঐতিহ্য এবং প্রভাব অপরিসীম। সেই জার্সি পরে খেলতে নামব ভেবে রোমাঞ্চিত হচ্ছি।”
দক্ষিণের দলের হয়ে ১২৫টি ম্যাচ খেলেছেন তিনি। মাঝমাঠ সামলানোর পাশাপাশি আক্রমণেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকেন। চেন্নাইনের হয়ে মোট ১২টি গোল করেছেন এবং রয়েছে ১৭টি গোলে অ্যাসিস্ট। গত আইএসএল মরসুমে ১৬টি ম্যাচ খেলে দুটি গোল ও একটি অ্যাসিস্ট করেন অনিরুদ্ধ। এছাড়া ডুরান্ড কাপেও পাঁচটি ম্যাচে দুটি গোল করেছিলেন। ভারতীয় সিনিয়র দলের হয়েও ৪৫টি ম্যাচ খেলা হয়ে গিয়েছে তাঁর। চলতি সাফ চ্যাম্পিয়নশিপেও খেলছেন তিনি। আন্তর্জাতিক ফুটবলে চারটি গোল ও তিনটি অ্যাসিস্ট করা এই তারকা ফুটবলার এবার কলকাতার ক্লাবেও কার্যকরী সদস্য হয়ে উঠতে পারেন কি না, সেটাই দেখার।
আরও পড়ুন: Neymar Jr: জেলের গারদে নেইমারের বাবা, বিপাকে ব্রাজিলের ‘পোস্টার বয়’! কিন্তু কেন?
আরও পড়ুন: Mohun Bagan Super Giant: স্বাধীনতা দিবসে অভিযান শুরু করছে সবুজ-মেরুন, প্রতিপক্ষ কে?
ডার্বিতে খেলার স্বপ্ন দেখতেন অনিরুদ্ধ। সেই স্বপ্ন এবার পূরণ হবে তাঁর। ডার্বি নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই অনিরুদ্ধ ফের যোগ করেন, “কলকাতা ভারতীয় ফুটবলের হাব। যেদিন থেকে খেলা শুরু করেছি, সেদিন থেকেই শুনতাম ডার্বির কথা। আমি যখন ছোটবেলায় পৈলান অ্যারোজে খেলতাম বা কল্যাণীর অ্যাকাডেমিতে অনুশীলন করতাম, তখন ডার্বি থাকলেই যুবভারতীতে গিয়ে খেলা দেখতাম। গ্যালারিতে বসে মোহনবাগান সদস্য-সমর্থকদের আবেগ দেখতাম। সবাই বলতেন, ডার্বি খেলতে হলে তারকা হতে হয়। সেই স্বপ্ন এবার আমার পূরণ হবে। বিশ্বাস করুন ভাবতেই পারছি না, হাজার-হাজার সমর্থকদের সামনে আমি মাঠে নামব। সবুজ-মেরুন পতাকা, ব্যানার আর আবির নিয়ে ওরা আসবেন আমাকে এবং আমাদের দলকে সমর্থন করতে।”
ডার্বির সঙ্গে সঙ্গে আরও দুটো লক্ষ্য রয়েছে অনিরুদ্ধের। গতবার আইএসএল চ্যাম্পিয়ন হয়েছে মোহনবাগান। অনিরুদ্ধ বলছেন, “সেই ধারাটা ধরে রাখতে হবে। মোহনবাগান এবার আরও শক্তিশালী। এবার এএফসি কাপে খেলার সুযোগ আমাদের সামনে। দেশের জার্সিতে একাধিকবার আন্তর্জাতিক ম্যাচে জয়ের স্বাদ পেয়েছি। এবার সবুজ-মেরুন জার্সিতে আন্তর্জাতিক ম্যাচ জেতার চ্যালেঞ্জ।”
মোহনবাগান কোচ জুয়ান ফেরান্দোর কোচিং স্টাইল বেশ পছন্দ অনিরুদ্ধর। তিনি বলছেন, “জুয়ান ফেরান্দোর খেলানোর স্টাইল আমি জানি। উনি বল ধরে খেলতে বলেন। আক্রমণাত্মক ফুটবল পছন্দ করেন। এবারের মোহনবাগান তারকা সমৃদ্ধ দল। দলের বেশিরভাগ ফুটবলারই ফেরান্দোর স্টাইল জানে। আমাকে সেটা রপ্ত করতে হবে। কোচের স্ট্র্যাটেজির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিজের জায়গাটা পাকা করতে হবে। আমি আশাবাদী আমার স্বপ্নের জার্সিতে খেলতে নেমে আমি সাফল্য পাবই।”
২০১৭ সালে ভারতীয় দলে অভিষেক তাঁর। ভারতের হয়ে প্রথম গোল থাইল্যান্ডের বিরুদ্ধে ২০১৯। দ্বিতীয় গোলও করেন থাইল্যান্ডেরই বিরুদ্ধে। এ ছাড়াও নেপাল ও মায়ানমারের বিরুদ্ধে গোল করেছেন তিনি। এমন একজন মিডফিল্ডার দলে আসায় মোহনবাগান মাঝমাঠের শক্তি যে বাড়বে, এই নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই।