WB Gram Panchayat : পঞ্চায়েতের শ্মশান কবে সভ্য সমাজ-উপযোগী হবে – cremation without death certificate crimes said west bengal police


রূপক মজুমদার, বর্ধমান

স্বামীকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে শ্বাসরোধ করে মারার অভিযোগ উঠেছে স্ত্রী ঝুমা ধঁক, প্রেমিক শামসুদ্দিন ও তার সহযোগী শেখ মুস্তাক আলির বিরুদ্ধে। স্বামী প্রশান্ত ধঁককে মাধবডিহি থানা এলাকার শুঁড়িপুকুর শ্মশানে দাহও করে দেওয়া হয়। এর পরেই গ্রামের শ্মশানগুলিতে নজরদারি নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন।

ডেথ সার্টিফিকেট ছাড়াই শ্মশানে দেহ দাহ করায় চাপা পড়ে যাচ্ছে বহু অপরাধ বলে মনে করছে পুলিশ। প্রশান্ত ধঁক মৃত্যুকাণ্ডের তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, স্থানীয় পঞ্চায়েতের কোনও ডেথ সার্টিফিকেট জমা না দিয়েই শ্মশানে পোড়ানো হয়েছে দেহ। এরপরেই প্রশ্ন উঠেছে, প্রতি ৫ বছর অন্তর পঞ্চায়েত ভোট হলেও কেন গ্রামের শ্মশানগুলির হাল ফিরল না?

WB Panchayat Election 2023: চোপড়ায় বিনা নির্বাচনেই ‘জয়ী’ তৃণমূল, ২১৭-এর মধ্যে ২১৬ শাসক দলের
পূর্ব বর্ধমানে ২১৫টি পঞ্চায়েতের মধ্যে মাত্র ৬৭টি পঞ্চায়েতে নিয়ম মেনে শ্মশানে দেহ সৎকার হয়। সৎকারের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করতে হয় আত্মীয়-স্বজনদেরই। জানা গিয়েছে, দেহ দাহ করতে গেলে দেড় থেকে দুই কুইন্টাল কাঠ প্রয়োজন। জেলায় কুইন্টাল প্রতি জ্বালানি কাঠের দাম সাতশো টাকা।

স্বচ্ছল পরিবারগুলির কাছে এই টাকা জোগাড় করা সম্ভব হলেও আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া বহু পরিবারই কাঠের পরিমাণ কমিয়ে দেন। ফলে বহু সময়ে শ্মশানগুলিতে আধপোড়া দেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। খণ্ডঘোষের বাসিন্দা সায়ন্তন ঘোষ বলেন, “এখানে শাসক-বিরোধী সবাই সমান। দীর্ঘ ৩৪ বছরের বাম শাসনে পঞ্চায়েত স্তরে এই বিষয়ে কেউ ভাবেনি। তৃণমূলের আমলেও কেউ কিছু করেনি। শহরে কেউ মারা গেলে নির্দিষ্ট শ্মশানে দেহ দাহ করতে হয়। সে ব্যবস্থা কেন গ্রামে করা যাবে না?”

Bengal Panchayat Polls : পঞ্চায়েত আসনে প্রার্থীই নেই রায়নায়, নেপথ্যে গোষ্ঠীকোন্দল
বর্ধমানের উল্লাসের বাসিন্দা সমাজতত্ত্বে স্নাতকোত্তরের ছাত্রী অনন্যা ভট্টাচার্য বলেন, “এই প্রথম এমন প্রশ্ন কেউ তুলল। এখন যদি অবস্থার পরিবর্তন হয়। অদ্ভুত পরিস্থিতিতে দেহ দাহ করা হয় গ্রামে। আমাদের গবেষণায় উঠে এসেছে, গ্রামের পিছিয়ে পড়া মানুষেরা ঠিক মতো দেহ সৎকার করতে পারেন না। পরে মৃত্যুর কাগজও তৈরি হয় না। ফলে সরকারি ভাবে মৃত্যুর তথ্য অজানা রয়ে যাচ্ছে। অবিলম্বে এই অবস্থার বদল হওয়া উচিত।”

বাম আমলে কেন শ্মশানকে আধুনিক করে গড়ে তোলা গেল না? সিপিএম জেলা সম্পাদক সৈয়দ হোসেন বলেন, “আমাদের সময়েই জন্ম-মৃত্যুর শংসাপত্র বাধ্যতামূলক করা হয়। তাছাড়া বাম আমলে যেখানে সেখানে দেহ দাহও করা যেত না যা গত ১০-১২ বছরে হচ্ছে। আমাদের একটা নজরদারিও ছিল। তৃণমূল আমলে কোনও নজরদরি, নিয়ন্ত্রণ কিছুই নেই। ফলে যা হওয়ার তাই হচ্ছে।”

Kestopur Incident : বিষক্রিয়া থেকেই অঘটন! কেষ্টপুরে জোড়া দেহ উদ্ধারে কী জানাল পুলিশ?
জেলা পরিষদের বিদায়ী সভাধিপতি তৃণমূল বিধায়ক শম্পা ধাড়া বলেন, “আপনারা সার্বিক চিত্র তুলে ধরেছেন। নির্বাচনে আমাদের দল যদি ফের ক্ষমতায় আসে তাহলে কথা দিচ্ছি, পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের প্রথম কাজ হবে এই বিষয়টি স্থায়ী সমিতির বৈঠকে অনুমোদন করানো। তার পর রাজ্যের অনুমোদন নিয়ে তা প্রয়োগ করা হবে পঞ্চায়েতে।”



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *