Covid : কোভিডের ওষুধ, কিট নষ্টে অভিযুক্ত স্বাস্থ্য আধিকারিক – the health official has been accused of wasting covid treatment drugs and test kits


পার্থসারথি সেনগুপ্ত
সে ছিল অতিমারীর দুঃস্বপ্নের দিন। কোভিডের চিকিৎসায় নানা প্রাণদায়ী ওষুধ এবং টেস্ট কিটের জন্যে তখন হাহাকার চলছে। আর সেই সময়েই এক স্বাস্থ্য আধিকারিক সেই সব ওষুধ, টেস্ট কিট, মাস্ক, পালস অক্সিমিটার, ব্লাড প্রেশার মাপার যন্ত্র-সহ বহু জরুরি সামগ্রী নিয়মমাফিক সেফ হাউস বা স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানগুলিতে না-পাঠিয়ে নিজের টেবিলের তলায় অবহেলায় ফেলে রেখে নষ্ট করেছেন বলে অভিযোগ সামনে এল।

Indian Syrups: ভারতে তৈরি 7 সিরাপ বিভিন্ন দেশে মৃত্যুর কারণ? কালো তালিকাভুক্ত করল WHO
ফেলে রাখার ফলে বেশির ভাগ ওষুধেরই এক্সপায়ারি ডেট পার হয়ে যায়। বিভাগীয় তদন্তে এমনও দেখা গিয়েছে যে, জয়দেব মুখোপাধ্যায় নামে পাণ্ডুয়া হাসপাতালের ওই হেড ক্লার্ক বিধি ভেঙে কিছু সামগ্রী নিজের পছন্দের লোকেদের বিলিবণ্টনও করেছেন। সেই তালিকায় বেশ কয়েক জন ‘প্রভাবশালী’ও ছিলেন বলে সরকারি সূত্রে খবর।

Panchayat Election 2023 : রাজীব এবং ভোটের ভবিষ্যতে জল্পনা
ঘটনা মূলত ২০২১-এ কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময়কার। তদন্ত রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, ফেলে রেখে নষ্ট করা ওষুধের তালিকায় রয়েছে দুশোটিরও বেশি আইভারমেকটিন ৬ মিলিগ্রাম ট্যাবলেট। কোভিডের চিকিৎসায় একটি পর্যায়ে যে ওষুধটির চাহিদা ছিল আকাশছোঁয়া। একই ভাবে এক্সপায়ারি ডেট পেরিয়ে নষ্ট হয়েছে ৪৫০টি বি কমপ্লেক্স ক্যাপসুল, অ্যাসকরবিক অ্যাসিড ৫০০ মিলিগ্রামের ৩০০টি ট্যাবলেট। নষ্ট হয়েছে ৫০০টি কোভিড-১৯ র‍্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট-কিটও।

বিভাগীয় তদন্তে জয়দেবের টেবিলের তলায় মিলেছিল ১৫০টি তিন লেয়ার ফেস মাস্ক, ৪৭ বোতল হ্যান্ড স্যানিটাইজার, ৯০ জোড়া স্টেরাইল ও ৮০ জোড়া নন-স্টেরাইল দস্তানা, ৯৩০টি জিঙ্ক ট্যাবলেট, ২৬১টি অ্যাজিথ্রোমাইসিন ট্যাবলেট, ১২৬০টি ফ্যামোটিডিন ৪০ মিলিগ্রাম ট্যাবলেট, ১০০টি ক্যালসিয়াম কার্বোনেট প্লাস ভিটামিন ডি-৩ ট্যাবলেটও। একটি করে ব্লাড প্রেশার মাপার মেশিন এবং পালস অক্সিমিটারেরও সন্ধান মেলে টেবিলের তলায়!

Dengue Fever: বর্ষা আসতে না আসতেই চোখ রাঙাচ্ছে ডেঙ্গি, জেলায় লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা
২০২২-এর শেষাশেষি স্বাস্থ্যকর্তারা তল্লাশি চালিয়ে টেবিলের তলা থেকে এগুলি উদ্ধার করেন। তদন্ত রিপোর্টে বলা হয়েছে, ব্লক মেডিক্যাল অফিসার অফ হেলথ এই ঘটনার আঁচ পেয়ে পাণ্ডুয়া হাসপাতালের ফার্মাসিস্টকে নির্দেশ দিয়েছিলেন জয়দেবের টেবিলের তলা থেকে ওই সব ওষুধ ও উপকরণ এক্সপায়ারি ডেট পেরোনোর আগেই ফেরত নিয়ে আসতে। কিন্তু জয়দেব ফের জোর করে সেগুলি ফার্মাসিস্টের কাছ থেকে ফেরত নিয়ে আসেন।

তদন্ত রিপোর্টে এমন মারাত্মক তথ্য রয়েছে যে, কোনও চিকিৎসকের সুপারিশ ছাড়াই ল্যাব টেকনিশিয়ানকে না জানিয়েই কিট ব্যবহার করে কোভিডের পরীক্ষাও করতেন জয়দেব। ফলাফল পজিটিভ না নেগেটিভ, তা তিনি কারও কারও সাহায্যে আইসিএমআর-এর পোর্টালেও তুলে দিতেন। এমনকী কর্তৃপক্ষের অজ্ঞাতসারে বেশ কয়েক জন ‘প্রভাবশালী’কে ভ্যাকসিন দেওয়ারও ব্যবস্থা করেন।

Child Health Committee : শিশুস্বাস্থ্যের কমিটিতে নেই শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ, বিতর্ক
‘এর জেরে রাজ্য সরকার ও সাধারণ মানুষ, দুয়েরই অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে’ বলে মন্তব্য করা হয়েছে তদন্ত রিপোর্টে। এই পরিপ্রেক্ষিতেই বৃহস্পতিবার রাজ্য সরকারি কর্মচারী পরিষদের সভাপতি দেবাশিস শীল স্বাস্থ্য-অধিকর্তা সিদ্ধার্থ নিয়োগীর কাছে স্মারকলিপি দিয়ে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন। দেবাশিসের কথায়, ‘এটা ভারতীয় দণ্ডবিধি অনুযায়ী গুরুতর অপরাধ।’ যদিও জয়দেবের প্রতিক্রিয়া, ‘এই নিয়ে আমার কিছু বলার নেই। আর যে সময়ের কথা বলা হচ্ছে, সেই সময়ে আমি বলাগড়ে ডিউটিতে ছিলাম।’ সিদ্ধার্থ বলেন, ‘আমি পুরো বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *