মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জমানায় কন্যাশ্রী থেকে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার—প্রচুর জনমুখী প্রকল্প চালু হয়েছে। এই প্রকল্পের পরিষেবা পেতে পঞ্চায়েতে কোনও মাথাকে টাকা দেওয়ার প্রয়োজন হয় না—এই কথাই আমজনতাকে বুঝিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। তাঁর কথায়, ‘যদি কেউ আপনাদের কোনও দুঃখ দিয়ে থাকে, তা হলে আমি তাদের হয়ে আপনাদের কাছে ক্ষমা চাইব। কিন্তু আমাকে ভুল বুঝবেন না। কেউ যদি দুষ্টুমি করে, দু’টো চড় মারবেন। সেই অধিকার আমি আপনাদের দিয়ে গেলাম।’
পঞ্চায়েতে অনিয়ম ঠেকাতেই এবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে জোড়াফুল শিবির প্রার্থী নির্বাচনে অভিনব উদ্যোগ নিয়েছিল বলে তৃণমূলের বক্তব্য। প্রায় দেড় মাস ধরে নবজোয়ার যাত্রা হয়েছে। যে পঞ্চায়েত প্রধানদের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে, তাঁদের টিকিট না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল শাসক দল। প্রার্থী নির্বাচনে তৃণমূলের নিচুতলার নেতা-কর্মী থেকে আমজনতার অভিমত গ্রহণও করা হয়েছিল তৃণমূল।
পঞ্চায়েত ব্যবস্থাকে দুর্নীতিমুক্ত করার প্রসঙ্গে এ দিন মমতা বলেন, ‘এতদিন আমরা পঞ্চায়েতকে বিশেষ গুরুত্ব দিইনি, কিন্তু এবার দেবো। তাই অভিষেকের নেতৃত্বে একটি টিম দু’মাস ধরে জেলায় জেলায় ঘুরেছে। মতামত নিয়েছে। হয়তো ৯৯ শতাংশ জায়গায় প্রার্থী ঠিক হয়েছে। কিন্তু ১ শতাংশ রয়েছে, যারা চুরিও করবে প্রার্থীও হতে চাইবে। সেটা আমরা এবার হতে দিচ্ছি না।’ মুখ্যমন্ত্রীকে কটাক্ষ করে বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী হুগলির জাঙ্গিপাড়ায় বিজেপির সভায় বলেন, ‘উনি বলছেন, গত দশ বছর পঞ্চায়েত দেখতেন না।
তা হলে কি পঞ্চায়েত ভূতে দেখছিল? ২০০৮ সালেই তৃণমূল পঞ্চায়েতের ৪০ শতাংশ আসন জিতেছিল। গত দশ বছর ধরে পঞ্চায়েতের টাকা মেরেছে তৃণমূলের পঞ্চুরা। যার ভাঙা সাইকেল ছিল, বিড়ি খেত–এখন স্করপিও গাড়ির সঙ্গে ১০-১২টা বাইক হয়েছে।’ সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য শমীক লাহিড়ির বক্তব্য, ‘ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণের জন্য বামফ্রন্ট ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত গড়ে তুলেছিল। উনি নিজে নিয়ন্ত্রণ করবেন–এর অর্থ কী? পঞ্চায়েতকে তুলে দিতে চাইছেন? দুর্নীতি থেকে নজর ঘোরাতেই গিমিক তৈরি করছেন উনি।’
যদিও মমতা এদিনও একশো দিনের টাকা, আবাস, রাস্তার টাকা না দেওয়ার জন্য কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকারকে তুলোধোনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘পঞ্চায়েতের পর লোকসভায় জিতে দিল্লিতে নতুন সরকার আসবে। আমরা টাকা নিয়ে আসব। মোদীবাবু বিলিয়ন ডলার খরচ করে নেতা হতে আমেরিকা গিয়েছেন। কখনও রাশিয়া যাচ্ছেন। ফ্রান্সে গিয়ে প্লেন কিনছেন। কিন্তু আমাদের গরিব ভাই-বোনদের একশো দিনের টাকা দিতে পারছেন না!’ তাঁর সংযোজন, ‘পঞ্চায়েত নির্বাচনে হেরে গেলেও এখানে আমাদের সরকার থাকবে। কিন্তু ডাবল ইঞ্জিন সরকার এবার বিদায় নেবে। চিন্তার কোনও প্রয়োজন নেই।
‘