Rambabu Kharagpur Don : বাংলার ডন সাম্রাজ্যের শেষ পিদিম! জেল থেকে বেরিয়ে ফের রামবাবুর খেলা হবে? – kharagpur don basab rambabu complete profile


শীর্ষেন্দু দেবনাথ | এই সময় ডিজিটাল

মঙ্গলবার সকালে মেদিনীপুর আদালতে পুলিশের গাড়িতেই তিনি এলেন। তাঁকে দেখেই এক সাংবাদিকের প্রশ্ন ছিল, ‘আজ কেয়া হোগা?’ স্মিত হেসে সেই ব্যক্তি উত্তর দিলেন, ‘উপরওয়ালা বাতা সাকতা হ্যা।’ পরে বেকসুর খালাস হলেন। চোয়াল শক্ত করে এজলাস ছাড়লেন যিনি, তিনি বাসব রামবাবু।

সাংবাদিকদের সঙ্গে সেভাবে কোনওদিনই অসহযোগিতা করেননি রেলশহরের বেতাজ বাদশা রামবাবু। কিন্তু, তিন দশক আগেও রামবাবুকে এমন প্রশ্ন করতে অনেকেরই বুক কাঁপত। তিনি এবং তাঁর গ্যাং দেখলে ভয়ে সিঁটিয়ে যেতেন অনেকেই। খুন, অপহরণ, তোলাবাজি সব অভিযোগই রয়েছে তাঁর নামে। শ্রীনু নাইডু খুনের মামলায় নিঃশর্ত মুক্তি পেয়েছেন একদা রেল শহরের ত্রাস ‘ডন’ বাসব রামবাবু। এখনই তিনি ছাড়া পাবেন কি না তা নিশ্চিত নয়, কারণ তাঁর নামে একাধিক মামলা আছে। তবে বলা যেতে পারে, জেলে হলেও মাফিয়া বলতে ঠিক যা বোঝায়, তার মধ্যে বাংলায় রামবাবুই একমাত্র রয়েছেন।

Srinu Naidu Kharagpur: শ্রীনু হত্যায় বেকসুর খালাস রামবাবু, খড়গপুরের সেই শ্যুটআউট হার মানাবে বলিউডকেও
একসময় খড়গপুরের অন্ধকার জগতের সম্রাট ছিলেন বাসব রামবাবু। রেলের স্ক্র্যাপ বিক্রির গোটা কারবার চলত তাঁরই অঙ্গুলি হেলনে। সাম্রাজ্যের বিস্তার ছিল কলকাতা থেকে বিশাখাপত্তনম পর্যন্ত। আদতে অন্ধপ্রদেশের বাসিন্দা হলেও বাবার চাকরি সূত্রে খড়গপুরে চলে আসেন তিনি। আটের দশকেই অপরাধে হাতেখড়ি হয়। সেই সময় স্ক্র্যাপের এই ব্যবসা দখল নেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন মানস চৌবে ও গৌতম চৌবে। তাঁরাও যদিও খুব একটা ‘সাধারণ’ ছিলেন না। খুন হন মানস। ভাইয়ের খুনের বদলা নেওয়ার চেষ্টা করেন গৌতম। লাভ হয়নি। খুন হন। গৌতমকে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার হন রামবাবু। আরও গুচ্ছ অভিযোগ। অনেকেই বলেন, পুলিশও তাঁকে খানিক সমীহ করে চলত। এমনকী খড়গপুরের বহু মানুষের কাছে ত্রাতাও তিনি। তাঁর হয়ে বুকে গুলি খাওয়ার লোকও কম ছিল না সেই সময়।

Ambikesh Mahapatra : অম্বিকেশের বিরদ্ধে আরও এক মামলা! আদালতের অনুমতির পরেও মিলল না ১০ বছরের পাসপোর্ট
২০০৩ সাল থেকে জেল খাটেন। এরপর ২০১০ সালে জামিন পান। তবে শ্রীনু নাইডু খুনে ফের গ্রেফতার হন তিনি। শারীরিকভাবেও ভেঙে পড়তে থাকেন রামবাবু। প্রভাবও কমে। মাফিয়া রামবাবুর বিস্তারও ধীরে ধীরে কমে যায়।

খড়গপুরে রামবাবুর বাড়িও ছিল রহস্যে মোড়া। সেখানে সকলের প্রবেশ করার অধিকার ছিল না। মূল ফটক থেকে একতলা পর্যন্ত একাধিক জায়গায় কোলাপসিবেল গেট, সেখানে হাজির থাকতেন তাঁর অনুগামীরা। বলাবাহুল্য, প্রত্যেকেরই কাছে ‘বস’কে নিরাপত্তা দেওয়ার যাবতীয় সবকিছুই থাকত। এহেন রামবাবু কিন্তু ঠাকুর ভক্ত। পুজোর সময় তাঁর সঙ্গে কেউ দেখা করতে আসলেও বসেই থাকত হত।

WB Panchayat Election : হাসপাতালে শুয়েও কেষ্টবন্দনা! বাবার ‘খুন’ ভুলে পাড়ুইয়ের হৃদয় এখন ‘দাদার অনুগামী’
মেদিনীপুর সংশোধনাগার ঘুরে সেই রামবাবু এখন প্রেসিডেন্সি জেলে। কবে ছাড়া পাবেন তিনি? মেদিনীপুর আদালতের আইনজীবী অজয়কুমার ঘোষ সংবাদমাধ্যমে বলছেন, ‘তিনি কবে ছাড়া পাবেন তা নির্ভর করছে আর কী কী মামলা তাঁর নামে আছে।’ তবে বাংলার ‘নামি’ ডনেদের তালিকায় তাঁর নাম কিন্তু এখনও রয়ে গিয়েছে এবং তিনি এখনও অতীত নন! ফলে রামবাবু ফিরলে কি খেলা হবে আবার? প্রশ্ন অনেকের।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *