যদিও কূটনৈতিকমহল মনে করছে, এর নেপথ্যে বিশেষ কৌশল থাকতে পারে মুজিব-কন্যার। কূটনীতিদের একাংশ মনে করছে, তিস্তার জলবণ্টনের সমস্যা এখনও সম্পন্ন হয়নি। মূলত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্যই সেই চুক্তি চূড়ান্ত হয়নি বলে মনে করে বাংলাদেশ। আর এই বছরই ভারত সফরে আসার কথা শেখ হাসিনার। তাই সেই সফরেই যাতে তিস্তা জলবণ্টন সমস্যার সমাধান হয়, সেই কারণেই হাসিনার আগাম এই চেষ্টা বলে মনে করছেন কেউ কেউ।
আগেও চুক্তির চেষ্টা হয়েছে
ভারত ও বাংলাদেশ একে অপরকে মিত্র রাষ্ট্র হিসেবে দাবি করলেও, দু’দেশের মধ্যে এখনও পর্যন্ত তিস্তার জলবণ্টন চুক্তি সম্পন্ন হয়নি। এর আগেও একাধিকবার চুক্তি সম্পন্ন করার চেষ্টা হয়েছে। কিন্তু কোনওবারেই বাস্তবায়িত হয়নি। গত ২০১১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ঢাকায় গিয়েছিলেন ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। সেই সময়েই তিস্তার জলবণ্টন চুক্তি হওয়ার সম্পন্ন কথা ছিল। অস্থায়ী চুক্তির মেয়াদ ছিল ১৫ বছরে। চুক্তি অনুয়ায়ী তিস্তার জলের ৩৭.৫ শতাংশের ওপর অধিকার থাকত বাংলাদেশের, আর ৪২.৫ শতাংশ জলের অধিকার পেত ভারত। কিন্তু রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আপত্তিতে চুক্তিটি চূড়ান্ত হয়নি।
এরপর ২০১৪ সালে ভারত সফরে আসেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই ভারত সফরে তিস্তা চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে বলে আশা করা হয়। সেই সফরে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখাও করেন হাসিনা। তা সত্ত্বেও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী বোর্ডে ছিলেন না। মূলত উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ অঞ্চলের মানুষের চাষবাসের কথা ভেবেই তিস্তা চুক্তিতে সম্মতি দেননি মমতা। পরের বছর অর্থাৎ ২০১৫ সালে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঢাকা সফরে যান। সেই সময়ও এই চুক্তি নিয়ে বিস্তর জল্পনা তৈরি হলেও কোনও সমাধান সূত্রই উঠে আসেনি।
এক্ষেত্রে বাংলাদেশিদের একাংশের দাবি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বাস্তব পরিস্থিতি বুঝতে হবে। কারণ তিস্তার জলের ওপরে বাংলাদেশেরও অধিকার আছে বলেই মনে করেন তাঁরা। সেক্ষেত্রে এখন দেখার এবারের সফরে বহুদিনের এই সমস্যার সমাধান করতে পারেন কি না হাসিনা।