জানা গিয়েছে, চুঁচুড়া বড়বাজার এলাকায় বাসিন্দা পিঙ্কি গুপ্তার বাড়িতে গতকাল দুপুরে জন্মদিনের পার্টি ছিল। পিঙ্কির পাতানো দিদি হুগলির কপিডাঙার বাসিন্দা মামন ওড়াও ও তাঁর স্বামী ভিম ওড়াও তাঁদের ৬ মাসের সন্তানকে নিয়ে সেই পার্টিতে যান। সেখানে মদ্যাপান হয়। এরপর পার্টি শেষে বাড়ি ফিরে যান ভীম। ছেলেকে নিয়ে সেখানেই ঘুমিয়ে পড়েন মামন। ঘুম ভাঙার পর আর নিজের ছেলেকে দেখতে পাননি তিনি। জিজ্ঞাসা করতে পিঙ্কি জানায়, ভীম ছেলেকে নিয়ে গিয়েছেন। কিন্তু ভীমকে জিজ্ঞাসা করে জানা যায় তিনি ছেলেকে নিয়ে আসেননি।
এরপরেই চুঁচুড়া থানার দ্বারস্থ হন মামন ওড়াও। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নামে পুলিশ। চুঁচুড়া থানার আইসি-র নেতৃত্বে একটি দল গঠন করে তদন্ত শুরু হয়। প্রথমেই কপিডাঙার বাড়ি থেকে ভীম ওরাওকে থানায় নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। সেখানেও ভীম জানান তিনি তাঁর ছেলেকে নিয়ে যাননি। এরপরেই পিঙ্কি ও তার বাড়িতে যারা সেসময় উপস্থিত ছিল তাদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে পুলিশ। কিন্তু তারা শিশু কোথায় আছে জানে না বলেই দাবি করে।
অন্যদিকে ইতিমধ্যেই এলাকার সিসিটিভি ফুটেজও খতিয়ে দেখতে শুরু করে পুলিশ। বড়বাজার ও জোরাঘাট এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হয়। তাতে দেখা যায় একটি স্কুটারে করে শিশুটিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এরপরই ভেঙে পরে পিঙ্কি। অপরাধ স্বীকার করে। পিঙ্কি জানায়, দের লাখ টাকায় শিশুটিকে বিক্রি করা হয়েছে চন্দননগররের বাসিন্দা রমেন দেবনাথের কাছে। টাকার ভাগ পায় পিঙ্কি ও তার সঙ্গীরা। শিশুটিকে প্রথমে স্কুটারে চাপিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করে পিঙ্কির নাবালক ছেলে। পরে অটো করে চন্দননগর বিবিটহাটে রমেনের বাড়ি পৌঁছ দেওয়া হয়। এরপর চুঁচুড়া থানার আইসি অনুপম চক্রবর্তীর নেতৃত্ব একটি টিম চন্দননগরে অভিযান চালায়। রমেনের বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয় শিশুটিকে।
ঘটনায় রমেন দেবনাথ, পিঙ্কি গুপ্তা, সঙ্গীতা বিশ্বাস, বেবি অধিকারী ও কাকলি চক্রবর্তী নামে ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে এই শিশু বিক্রি চক্রে আরও কে বা কারা যুক্ত তা জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা।