একুশের বিধানসভা নির্বাচনে আসানসোল দক্ষিণ থেকে তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছিলেন অভিনেত্রী সায়নী ঘোষ। সেসময় তাঁর জমা দেওয়া সম্পত্তির খতিয়ানেই জানা গিয়েছিল তাঁর স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি সহ আয়ের খতিয়ান। সেই খতিয়ান থেকেই জানা যায়, সায়নীর মাথার উপর রয়েছে একাধিক লোনের বোঝা। রয়েছে বিলাসবহুল গাড়ি ও একাধিক ফ্ল্যাট।
নির্বাচন কমিশনে বিধানসভা ভোটের আগে জমা দেওয়া সায়নীর তথ্য অনুযায়ী, গাড়ি, বাড়ি, ক্রেডিট কার্ড বিভিন্ন খাতে একাধিক লোন রয়েছে সায়নীর। এমনকী নিজের মায়ের থেকেও ১৯ লাখ ৩৮ হাজার ১৯৫ টাকা ঋণ নিয়েছেন অভিনেত্রী। নির্বাচনী হলফনামায় প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী যাদবপুরে লীলাদীপ অ্যাপার্টমেন্টের ফ্ল্যাট, গাড়ির জন্য ঋণ ছাড়াও একটি পার্সোনাল লোনও রয়েছে তাঁর নামে। ২০২০-২১-এর তথ্য অনুযায়ী ঋণের মোট পরিমাণ ৬৪ লাখ ৪৫ হাজার ৫৫৬ টাকা। বর্তমানে তাঁর ঋণের পরিমাণ বেড়েছে বা কমেছে তা নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি।
২০১৯-২০ অর্থবর্ষে ৪৯ লক্ষ ২ হাজার ৫৬৮ টাকা ৩২ পয়সা আয় করলেও ভোটে লড়ার সময় তাঁর হাতে মাত্র ৩২ হাজার ৭৭৫ টাকা নগদ অর্থ ছিল। যা দেখে অনেকেই বিস্মিত। যদিও এই নগদের হিসাবটিও দুবছর আগে। কিন্তু যুব তৃণমূলের রাজ্য সভানেত্রী তথা অভিনেত্রী বিনিয়োগের তালিকাও বেশ লম্বা। সায়নীর একাধিক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট রয়েছে। মায়ের সঙ্গে জয়েন্ট ছাড়াও ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টেও সঞ্চয় রয়েছে তাঁর। টার্ম ডিপোজিট সহ ব্যাঙ্কে বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে রয়েছে মোট ১০ লাখ ৩৩ হাজার ৮২৫ টাকা।
এছাড়া জীবনবীমা, পোস্টাল সেভিংস সহ, ইনসিওরেন্সেও রয়েছে লাখ লাখ টাকার বিনিয়োগ। ২০১৯-২০ অর্থবর্ষের হিসেব অনুযায়ী মোট বিনিয়োগ ৮ লাখ ৫২ হাজার ৩৭৬ টাকা।
নির্বাচনী নথিতে উল্লেখ, ২০১৭ সালে একটি হন্ডা জ্যাজ গাড়ি কিনেছিলেন সায়নী। গাড়িটির দাম ৬ লাখ ৭৭ হাজার ৩৬৯ টাকা। ঘনিষ্ঠদের দাবি, পরে সায়নীর গ্যারাজে গাড়ির সংখ্যা বেড়েছে যদিও তাঁর সমর্থিত কোনও নথি মেলেনি। সায়নী ঘোষের যাদবপুরের ফ্ল্যাটটির বাজার মূল্য ৩৪ লাখ টাকার বেশি।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অভিনেত্রী তথা যুব তৃণমূলের রাজ্য সভানেত্রী সায়নী ঘোষকে ইডি জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৩০ জুন ডেকে পাঠায়। তাঁর আয় ও সম্পত্তির হিসেবে খতিয়ে দেখছে ইডি। এই প্রতিবেদনে তুলে ধরা সমস্ত তথ্য ২০২১ সালে ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতার সময় অভিনেত্রী সায়নী ঘোষ যে হলফনামা জমা দিয়েছিলেন তাতে উল্লেখিত। তারপর চলতি অর্থবর্ষ অবধি তাঁর সম্পত্তির বৃদ্ধি বা নগদ ও ঋণ বাড়া কমা নিয়ে তথ্য নেই।