কলকাতার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে বেহালা পূর্বের তৃণমূল বিধায়ক রত্না চট্টোপাধ্যায়ের বিবাহ বিচ্ছেদের মামলার কথা কারও অজানা নয়। শোভন-রত্নার ডিভোর্সের মামালা ঘিরে একাধিকবার উত্তপ্ত হয়েছে আলিপুর কোর্ট চত্বর। সম্প্রতি অতীতের সব কিছুকে ফিকে করে আদালতের মধ্যেই চরম বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন শোভন ও রত্না। চুপ করে দাঁড়িয়ে দেখতে থাকেন শোভনের বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়।
আদালতের ভিতরে দাঁড়িয়ে একে অপরের উদ্দেশে কটূক্তি করেন শোভন-রত্না। পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যে শোভনের উদ্দেশে রত্নাকে একসময় বলতে শোনা যায়, ‘এক থাপ্পড় মারতে হয়।’ আদালতে বেনজির পরিস্থিতির পর কী ভাবছেন রত্না? মাথা গরমের বশে স্বামীকে থাপ্পড় মারার কথা বলে তিনি কি অনুতপ্ত? এই সময় ডিজিটালের প্রশ্নের মুখোমুখি হয়ে সব বিষয়ের সোজাসাপটা জবাব দিয়েছেন বেহালা পূর্বের বিধায়ক।
‘প্রিয়’ স্বামীকে থাপ্পড় মারার কথা বলে অনুতপ্ত রত্না? বেহালা পূর্বের বিধায়ক বলেন, ‘না বাড়ি ফিরে আমার কোনও অনুতাপ হয়নি। বহুদিন ধরে শোভনবাবু কোর্টরুমের ভিতের আমাকে ইনডাইরেক্টলি বাজে কথা বলছিলেন। সেদিন আদালত কক্ষের ভিতরে উনি আমাকে ‘ফ্রড’ বলেন। আমাকে আগে একদিন ‘নোংরা মেয়ে’ বলেছেন। সেদিন আমার মনে হয়েছিল উচিত জবাব না দিলে আমি সব অভিযোগ মেনে নিচ্ছি। আদালতের কক্ষের বাইরে এক দু-কথায় আমি মেজাজ হারাই। শোভনবাবু আমাকে উৎসাহিত করেছেন।’
রত্না আরও বলেন, ‘শোভনবাবুকে থাপ্পড় মারার কথা বলে আমি কোনও ভুল কাজ করিনি। তবে হ্যাঁ পরে আমার মনে হয়েছে, একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে আদালতে সকলের সামনে এটা না বললেই পারতাম। আগেও একাধিকবার এরকম করা হয়েছিল। তখন আমি চুপ ছিলাম। আমি ঠান্ডার মানুষ। কিন্তু কোনও কিছু না করা সত্ত্বে মেনে নিতে নিতে মানুষের পিঠ যখন দেওয়ালে ঠেকে যায়, তখন প্রতিক্রিয়া আসেই।’
এদিন ফের একবার শোভনকে নিয়ে রত্নার গলায় শোনা গিয়েছে হতাশার সুর। তিনি বলেন, ‘কিছুই করিনি আমি। এত কিছুর মধ্যেই দুই ছেলেমেয়েকে মানুষ করেছি। শোভনবাবু তাদের কোনও খোঁজ নেন না। তাঁদের ফোন নম্বর ব্লক করে রাখা হয়েছে। ছেলেমেয়ে বেঁচে আছে না মরে গিয়েছে তাও উনি খোঁজ নেন না। এদিকে ধুমধাম করে অন্যের মেয়ের জন্মদিনে নাচানাচি করছেন। এইসব দেখে আমার ছেলেমেয়ের মনে খারাপ প্রভাব পড়ে।’
শোভনের রাজনৈতিক অবস্থান নিয়েও মুখ খুলেছেন রত্না। বেহালা পূর্বের বিধায়ক বলেন, ‘ওঁর রাজনৈতিক অবস্থান সম্পূর্ণ জিরো। ২০১৭ সালের আগে ওঁর জীবনযাপন যেমন ছিল, তেমনটা আবার হলে উনি তৃণমূলে ফিরতে পারবেন। নইলে ফিরে আসার কোনও সম্ভাবনাই নেই।’