গতকাল রাতে হাসনাবাদে একটি পালাগান গাইতে যান তিনি। সেখান থেকে আর বাড়ি ফেরেননি। সকালে মৃত্যুর সংবাদ আসে তাঁর বাড়িতে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের হাতে গোনা কয়েকদিন আগেই বোমা বিস্ফোরণে পেশায় বাউল শিল্পী পরিতোষ মণ্ডলের মৃত্যুকে ঘিরে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়েছে গ্রামে।
তৃণমূলের সক্রিয় কর্মী হিসেবে পরিচিত ছিলেন তিনি, বলছেন পরিবারের সদস্য থেকে শুরু করে গ্রামের মানুষ সকলেই। মৃতের স্ত্রী সুষমা মণ্ডল এই খবর শোনার পর থেকে শোকে আচ্ছন্ন হয়ে গিয়েছেন। মেয়ে পুরবি মণ্ডল বলেন, ‘হাসনাবাদে গতকাল বাউল গান করার কথা ছিল বাবার। হাসনাবাদে গান করতে যাওয়ার আগে পাঁচ হাজার টাকা চুক্তি হয়েছিল। কিন্তু আর যাওয়া হল না ওনার।’
জানা গিয়েছে, পরিতোষ বাবুর সঙ্গে একটি মোবাইল ফোন, নগদ ৫০০০ টাকা ও একটি সাইকেল ছিল। সেগুলিও আর পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছে পুলিশ।ইতিমধ্যেই উত্তর ২৪ পরগনা জেলা থেকে একাধিক বোমা উদ্ধার হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে খবর, শালিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের পালিত পাড়ার একটি বাগানে বোমা বিস্ফোরণ হয় গত কাল রাতে। সেখানেই মৃত্যু হয় হাড়োয়ার সোনাপুকুর শংকরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কুচিয়া মোড় এলাকার বছর পঞ্চাশের পরিতোষ মণ্ডলের।
আহত হয়েছেন আরও এক জন। ঘটনাস্থলে গিয়েছে হাড়োয়া থানার পুলিশ। গিয়ে বোমার নমুনা, সুতুলি, স্প্রিংটার, একটি কাটা আঙুল উদ্ধার করেছে পুলিশ। মৃতদেহ ময়না তদন্তের জন্য বসিরহাট জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
মৃতের স্ত্রী ও মেয়ের দাবি, তাঁর বাবাকে পরিকল্পনা করে হত্যা করা হয়েছে, প্রথমে কুপিয়ে খুন করা হয়েছে তারপরে বোমা মারা হয়েছে। পুলিশের সঠিক তদন্ত দাবি করে অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তিনি। তবে গ্রামবাসীদের অভিযোগ, পারিবারিক শত্রুতা ও সম্পত্তি সংক্রান্ত অশান্তির জেরেই খুন হয়েছেন পরিতোষ মণ্ডল।
এক গ্রামবাসী জানিয়েছেন, ‘এই এলাকায় সেরকম রাজনৈতিক হিংসা নেই। আর তৃণমূল ছাড়া কোনও রাজনৈতিক দলের খুব বেশি অস্তিত্বও নেই। তাই আমাদের মনে হয় এই হত্যার পিছনে সম্পত্তি নিয়ে দ্বন্দ্ব থাকতে পারে।’ পুরো ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।