শ্রেয়সী গঙ্গোপাধ্যায় ও বিক্রম দাস: ইংরেজি মাধ্যম ছাড়া আর কোনও পড়ুয়া বিএ/বিএসসিতে ভর্তির আবেদন করতে পারবেন না। এমনটাই বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল কলকাতার লোরেটো কলেজ কর্তৃপক্ষের। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের চাপে পড়ে সেই ফরমান থেকে পিছু হঠতে বাধ্য হল কলেজ কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালের তরফে জানিয়ে দেওয়া হল, ছাত্রী ভর্তির জন্য কলেজ কর্তৃপক্ষকে নতুন করে আবেদন গ্রহণ করতে হবে। সেক্ষেত্রে বাংলা-সহ সব অঞ্চলিক ভাষার পড়ুয়াদের সমান গুরুত্ব দিতে হবে। নতুন করে মেরিট লিস্ট প্রকাশ করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিল কলেজ কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুন-যে খেলা খেলতে চাইবেন সেটাই খেলব; অনুব্রতর কায়দায় হুঁশিয়ারি কাজল শেখের
বাংলার কোনও কলেজ কেন শুধুমাত্র ইংরেজি মাধ্যমের পড়ুায়দেরই ভর্তি নেবে। এনিয়ে তোলপাড় শুরু হয় সোশ্যাল মিডিয়া সব বিভিন্ন মহলে। পরিস্থিতি বিচার করে লোরটো কলেজের অধ্যক্ষকে ডেকে পাঠান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। তলবে পেয়ে আজ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের সঙ্গে দেখা করেন লোরেটোর অধ্যক্ষ। সেখানে কলেজ কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দেওয়া শুধুমাত্র ইংরেজি মাধ্যমের পড়ুয়াদের ভর্তি নেওয়া যাবে এমন কোনও নিয়ম বিশ্ববিদ্যালয়ে নেই। এক্ষেত্রে নতুন করে ভর্তির আবেদন গ্রহণ করতে হবে। সব মাধ্য়মের পড়ুয়ারা আবেদনের সুযোগ পাবেন। নতুন করে মেধা তালিকা প্রকাশ করতে হবে।
ওই নির্দেশ পেয়ে বিজ্ঞপ্তির ভাষা বদল করল লোরেটো কলেজ। তবে কলেজ কর্তৃপক্ষের বক্তব্য ছিল, প্রতি বছর বহু ভালো ছাত্রী ভর্তি হলেও ভাষার কারণে সমস্যায় পড়ছেন। হতাশায় ভুগছেন। কেউ কেউ কলেজ ছেড়েও দিয়েছেন। ফলে একদিকে যেমন পড়ুয়ারা সমস্যায় পড়ছেন তেমনি কলজেও সমস্য়ায় পড়ছে। সিট ফাঁকা পড়ে থাকছে। কিন্তু কলকাতা বিশ্ববিদ্যালের নির্দেশ, ভাষা নিয়ে এরকম বিভেদ তৈরি করা যাবে না। কলেজদের তরফে জানানো হয়েছে প্রথম মেরিট লিস্ট বাতিল হবে না। তবে পরের একটি মেরিট লিস্টের জন্য অ্যাডমিশন হবে। সেখানে এখনওপর্যন্ত যারা আবেদন করতে পারেননি তারা আবেদন করতে পারবেন।
বিতর্ক প্রসঙ্গে লোরেটো কলেজের গভর্নিং বডির সদস্য কাবেরী দত্ত বলেন, নোটিস প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। এনিয়ে আমরা যে দুঃখিত তা আমরা ওয়েবসাইটে জানিয়েছে। গত বছর এরকম একটি নোটিস দেওয়া হয়েছিল। তার আগে এরকম নোটিস দেওয়া হতো না। আসলে বাস্তবে যে হয় সেটা হল, শিক্ষকরা লক্ষ্য় করেছেন যারা বাংলা মিডিয়াম থেকে আসে তাদের লেকচার বোঝার সমস্যা হচ্ছে। কারণ লোরেটোতে ইংরেজিতে পড়ানো হয়। সেক্ষেত্রে অনেক পড়ুয়ারি মানসিক সমস্যা হয়। তাদের দিকে তাকিয়েই ওই বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। কোনও বিভেদ তৈরির জন্য কিছু করা হয়নি।