Elephant Attack : হাতির ‘অনুপ্রবেশ’ নিয়ে ‘হাতাহাতি’ ঝাড়খণ্ড ও বঙ্গের – forest minister jyotipriya mallick claimed that there was a deliberate pushback of sick and rabid elephants from one state to another


তাপস প্রামাণিক
আন্তর্জাতিক সীমান্ত টপকে বেআইনি ভাবে এক দেশের নাগরিক অন্য দেশে ঢুকে পড়লে অনেক সময়ে তাকে পুশব্যাক করে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়। বন্যপ্রাণীরা সেই নিয়মের ঊর্ধ্বে হলেও নজিরবিহীন ভাবে এ বার এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে অসুস্থ ও উন্মত্ত হাতিকে ইচ্ছাকৃত পুশব্যাক করা হয়েছে, এমন অভিযোগ উঠল!

Elephant Attack : ‘হাতুড়ে’ বনকর্মীর হাতেই কি মৃত হাতি!
রাজ্যের বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের দাবি, ‘ঝাড়খণ্ডের দিক থেকে মাঝেমধ্যেই অসুস্থ ও উন্মত্ত হাতিদের বাংলার দিকে জোর করে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। তারা বাংলায় ঢুকে তাণ্ডব চালাচ্ছে। তাতে প্রাণহানির ঘটনা যেমন বাড়ছে, তেমনই নষ্ট হচ্ছে জমির ফসল।’ ঝাড়খণ্ড সরকারের তরফে আবার পাল্টা অভিযোগ- দুই রাজ্যের সীমানা বরাবর পরিখা কেটে হাতির স্বাভাবিক রুট ব্লক করে বা আটকে দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। ফলে, তাদের স্বাভাবিক চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। বাংলায় ঢুকতে না-পেরে হাতিরা ঝাড়খণ্ডে ফিরে গিয়ে তাণ্ডব চালাচ্ছে। এ বছর এখনও পর্যন্ত ঝাড়খণ্ডে হাতির আক্রমণে মোট ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।

Panchayat Election 2023 : হাতির ভয়ে বন্ধ প্রচার, প্রশ্নে ভোটের ভবিষ্যৎ!
ঝাড়খণ্ডের প্রিন্সিপাল চিফ কনজারভেটর অফ ফরেস্ট সঞ্জয় শ্রীবাস্তব ‘এই সময়’-কে ফোনে বলেন, ‘আমরা কোনও হাতিকে বাংলায় জোর করে পাঠাই না। বরং, পশ্চিমবঙ্গ সরকার পরিখা কেটে হাতির রুট ব্লক করে দিয়েছে। তাতে আমাদের খুব ক্ষতি হচ্ছে। গত বছর অক্টোবর মাসে কলকাতায় বাংলা, ওডিশা ও ঝাড়খণ্ড সরকারের মিটিং হয়েছিল হাতি নিয়ে। সেই মিটিংয়ে বিষয়টি নিয়ে সবিস্তার আলোচনা হয়েছিল।’

Jhargram Elephant Attack : হাতির হানায় মৃতের পরিবারকে চাকরি
যদিও পশ্চিমবঙ্গের বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক জানাচ্ছেন, সম্প্রতি ঝাড়খণ্ডের দিক থেকে আসা কয়েকটা জখম হাতিকে নিয়ে রীতিমতো নাস্তানাবুদ হতে হয়েছে রাজ্য বন দপ্তরকে। দিন কয়েক আগে ঝাড়গ্রামে এরকমই একটি অসুস্থ হাতিকে ট্র্যাঙ্কুলাইজ় করতে গিয়ে তার মৃত্যু হয়। হাতিটির গলায় ঘা ছিল। তা থেকে তার গোটা শরীরে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছিল। সেই জন্য হাতিটি পাগল হয়ে যায়। ঝাড়খণ্ডে থাকার সময়ে হাতিটি চার জনকে পিষে মারে। তাকে এক রকম জোর করেই বাংলার দিকে ঠেলে দেওয়া হয়। এই রাজ্যে ঢোকার পর সে আরও চার জনকে প্রাণে মারে। কয়েক দিন আগে হাতিটিকে ট্র্যাঙ্কুলাইজ় করে ঝাড়গ্রামের রেসকিউ সেন্টারে নিয়ে আসা হয় এবং পরে সেখানেই তার মৃত্যু হয় বলে বাংলার বনমন্ত্রী জানিয়েছেন।

Elephant Story: উপহারের গজরাজের উপর নির্যাতন! রেগে আগুন হয়ে কী নির্দেশ থাই রাজার?
মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয়র ব্যাখ্যা অনুযায়ী, বহু পশুর শরীরে ঘা হলে তারা জিব দিয়ে চাটতে থাকে। জিবর লালায় অনেক ক্ষেত্রে ঘা শুকিয়ে যায়। কিন্তু হাতিরা শরীরের কোনও অংশে জিব বোলাতে পারে না। শরীরের কোথাও ঘা বা ক্ষত তৈরি হলে হাতিরা গাছের গুড়িতে কিংবা পাথরের দেওয়ালে গা ঘষতে থাকে। তাতে ঘা আরও বেড়ে যায়। সেই সময়েই ক্ষিপ্ত হয়ে যায় হাতিরা।

West Bengal Government : পাচার ও পকসোর শিকার শিশুদের উদ্ধারে রাজ্যের তহবিল, জোর মানসিক স্বাস্থ্যে
বন দপ্তর সূত্রের খবর, গত কয়েক মাসে ঝাড়খণ্ডের দিক থেকে আসা মোট চারটি হাতিকে অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের প্রথমে ট্র্যাঙ্কুলাইজ় করে রেসকিউ সেন্টারে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করা হয়। সুস্থ হওয়ার পর তাদের জঙ্গলে ছাড়া হয়েছে। এ রকম মোট তিনটি হাতিকে সম্প্রতি উত্তরবঙ্গের বক্সা জঙ্গলে ছাড়া হয়েছে।

Cancer Research: কেন ক্যানসার হয় না হাতির? জবাব লুকিয়ে অণ্ডকোষে
বন দপ্তরের এক শীর্ষ আধিকারিকের ব্যাখ্যা, ‘সবাই তার নিজের এলাকাকে নিরাপদ রাখতে চায়। হাতির পাল ঢুকলে স্থানীয় বনকর্মী ও গ্রামবাসীরা মিলে তাদের তাড়ানোর চেষ্টা করেন। তাদের চেষ্টা থাকে হাতির পালকে অন্যত্র পাঠানোর। নেপালে এমন ঘটনা প্রচুর ঘটে।’

রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্য বনপাল অতনু রাহা বলছেন, ‘একবার হাতির পাল আটকাতে ওডিশার দিকে পরিখা কেটে দেওয়া হয়েছিল। সেখানে বাধা পেয়ে সেই হাতির দলটি বাংলার সীমানাবর্তী গ্রামগুলিতে ঢুকে পড়েছিল।’ হস্তী বিশেষজ্ঞ পার্বতী বড়ুয়ার বক্তব্য, ‘ঝাড়খণ্ডের দিক থেকে হাতিকে পুশব্যাক করা হচ্ছে কি না, সেটা বন দপ্তরের লোকজন বলতে পারবেন। তবে কংসাবতী ব্যারাজ হওয়ার পর থেকে দলমা থেকে আসা বহু হাতি এখন দক্ষিণবঙ্গের জঙ্গলে পাকাপাকি ভাবে থেকে গিয়েছে।’ তাঁর মতে, রাজ্যের সীমানা বরাবর নজরদারি বাড়ালেই হাতির ‘অনুপ্রবেশ’ আটকানো সম্ভব।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *