মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সেদিন যদি আর ৩০ সেকেন্ড সময় নিত, তাহলে ক্র্যাশ হয়ে যেত হেলিকপ্টার। প্রবল ঝড়বৃষ্টিতে দিগভ্রষ্ট হয়ে গিয়ে ক্র্যাশ করার মতোই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। ৩ মিনিট কোনও যোগাযোগ ছিল না এটিসির সঙ্গে। তাঁর সঙ্গে মারাত্মক ঝ়ড়। ওড়ার পর হঠাৎ যেন সুনামির মতো ঝড় এল। পাইলট দেখতে পান যে দুটি বড় বিমান বাগডোগরায় নামার পরিবর্তে মুখ ঘুরিয়ে চলে যাচ্ছে। তারা নামতে পারছে না। তখনই পাইলট ধারণা করে নেন বড় এয়ারক্রাফট যেখানে নামতে পারছে না। সেখানে হেলিকপ্টারের কী অবস্থা হতে পারে ধারণা করেই অভিমুখ ঘুরিয়ে সেনা এয়ার বেসে চলে যান।’
একাধারে পাইলটের প্রশংসা তো অন্যদিকে বিরোধীদের তাঁর চোট নিয়ে আক্রমণ ও কটাক্ষে এদিন সরব হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেন, ‘যেখানে এমারজেন্সি ল্যান্ডিং হয়েছিল, সেখানে না ছিল কোনও সিঁড়ি না ফায়ার ব্রিগেড। অতউঁচু থেকে লাফ দিতে গিয়ে, মানে না লাফিয়ে উপায় ছিল না৷ তখন ঝড়-ঝঞ্ঝায় পরিস্থিতি এমন ছিল না৷ ওই ঝাঁপ দিয়েই আমার বাঁ হাঁটুটা স্ম্যাশ হয়ে গিয়েছে। কোমরে চোট পেয়েছি। হাঁটুর টিস্যু ও লিগামেন্ট ছিঁড়ে গিয়েছে। একটা অপারেশনও করাতে হবে। ওরা আমাকে বলেছিল হাসপাতালে থেকে চিকিৎসা করাতে৷ কিন্তু আমি ভাবলাম, হাসপাতালে থেকে চিকিৎসা করালে একটা বেড দখল হবে, কয়েকজন চিকিৎসকে সারাদিন ব্যস্ত রাখা হবে৷ তাই ভাবলাম, ঘরে বসে কাজগুলো করেনি৷ তার মাঝে সাত-আটদিন ট্রিটমেন্ট করিয়ে নেব ভাবলাম, তারপর হাসপাতালে যাব৷ এখন দিনে ৪ ঘণ্টা থেরাপি চলছে৷ থেরাপি চললে মনের উপর একটা ঝড় যায়৷ এখন সোজা হাঁটতে পারছি একটু-একটু৷ তবু হাঁটু আর কোমরে লাগছে ৷’
এত গুরুতর চোট সত্ত্বেও বিরোধীদের টিপ্পনি থামেনি। তিনি বলেন, এদিকে সংবাদমাধ্যম একটা ছবি দেখিয়েছে। যেটা পুরনো। ওই হইচই। আমি নাকি ওখানে জলখাবার খেয়েছি। আমি এমনিই খাই না। ওরকম সময়ে কী খাব! তখন আতঙ্কের ঘোর কাটছে না।’ সাক্ষাৎকারটি চলাকালীন কথা প্রসঙ্গে জানা যায় যিনি সাক্ষাৎকার নিচ্ছেন অর্থাৎ বেসরকারী ওই সংবাদমাধ্যমের শীর্ষ কর্তাও মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ওই হেলিকপ্টারে ছিলেন। তাঁদের অবস্থা কাঁদো কাঁদো হলেও কুল ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বরং তিনি সামলাচ্ছিলেন বাকিদের।