তৃণমূল বিধায়ক হয়েও নির্দল প্রার্থীদের হয়ে ভোট প্রচারে বের হতে দেখা গেল হুমায়ুন কবীরকে। দলের নির্দেশকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে নির্দল প্রার্থীদের হয়ে প্রচার সারলেন ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক। শুধু প্রচারে অংশ নেওয়াই নয়, নির্দল প্রার্থীদের হয়ে ভোটভিক্ষাও চাইলেন তিনি। দলের জেলার নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন তাঁর বক্তৃতায়।
হাই কমান্ডের হুঁশিয়ারির তোয়াক্কা না করে নিজের সিদ্ধান্তই অনড় রয়েছেন ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। দলের নির্দেশের বাইরে গিয়েই কার্যত নির্দল প্রার্থীদের সমর্থনে ভোট প্রচার করলেন ‘বিতর্কিত’ তৃণমূল বিধায়ক। একের পর এক জেলায় তৃণমূল কংগ্রেস থেকে টিকিট না পেয়ে যেসব প্রার্থীরা নির্দল হয়ে ভোটে লড়ছেন, তাদের বহিষ্কার করতে শুরু করেছে দল। তার মাঝেই নির্দলদের পাশে দাঁড়িয়ে কার্যত দল বিরোধী বার্তা দিলেন তিনি।
বুধবার ভরতপুর এক নম্বর ব্লকের সিজগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের সৈয়দকলুট গ্রামে নির্দল প্রার্থীদের সমর্থনে নির্বাচনী প্রচার সারলেন বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। এদিন সৈয়দকুলুট গ্রামে বিশাল মিছিল করে ভোট প্রচার করার পর একটি পথসভা করেন তিনি। পথসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে সরাসরি ভরতপুর ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি থেকে শুরু করে মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূলের সভাপতি শাওনি সিংহ রায় ও চেয়ারম্যান অপূর্ব সরকার-এর বিরুদ্ধে একাধিক ক্ষোভ উগরে দেন হুমায়ুন।
পাশাপাশি, মানুষের অধিকার বুঝে নেওয়ার জন্য নির্দলকে ভোট দেওয়ার আবেদন করেছেন বিধায়ক হুমায়ুন। আট তারিখ ভরতপুর জুড়ে চোর ও লুটেরাবাজদের দিন শেষ হবে বলে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন। দলের একাংশের বিরুদ্ধে এভাবে প্রচারে অংশ নেওয়ায় শুরু হয়েছে গুঞ্জন।
তবে জেলা তৃণমূল সূত্রে খবর, বিষয়টি নিয়ে পঞ্চায়েত নির্বাচনের মুখেই কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া না হলেও নির্বাচন মেটার পর কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। যদিও পঞ্চায়েত নির্বাচনের নির্ঘণ্ট প্রকাশ হওয়ার পর থেকেই তৃণমূলের ‘হুমায়ুন’ বাড়তে শুরু করে। নিজের সমর্থিত ব্যক্তিদের প্রার্থী না করা হলে দলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করবেন বলে আগেই জানিয়েছিলেন তিনি।
প্রার্থীতালিকা প্রকাশের নিজের নিকট ব্যক্তিদের টিকিট না পেতে দেখে হুঙ্কার দেন তৃণমূলের বিধায়ক। এবার সরাসরি নির্দল প্রার্থীদের সমর্থনে প্রচারে নামতে দেখা গেল তাঁকে। যা নিয়ে দলের অভ্যন্তরেই শুরু হয়েছে জল্পনা। দলের জেলা সভাপতির সঙ্গে বিধায়কের এরকম প্রকাশ্যে মতবিরোধ পঞ্চায়েত নির্বাচনেও প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।