মঙ্গলবার অনন্ত মহারাজের বাড়িতে যান কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক। অনন্তের চকচকার বাড়িতে যাওয়ার আগে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে নিশীথের কথা হয় বলেও জানা গিয়েছে। সূত্রের খবর, শাহের থেকে সবুজ সংকেত পাওয়ার পরেই অনন্তের সঙ্গে আলোচনায় বসেন নিশীথ। সাক্ষাৎ শেষে নিশীথ জানান, অনন্তকে রাজ্যসভার প্রার্থী হওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে তিনি সেই প্রস্তাব গ্রহণ করেছেন বলে জানান মহারাজও।
প্রসঙ্গত, পঞ্চায়েত ভোট পর্ব মেটার পরেই আগামী ২৪ জুলাই বাংলার সাত রাজ্যসভা আসনে হতে চলেছে নির্বাচন। তার জন্য ইতিমধ্যেই ৬ প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে তৃণমূল। সেই ৬ জনের মধ্যে রয়েছেন ডেকের ও’ব্রায়েন, সুখেন্দুশেখর রায় এবং দোলা সেন। বাকি ৩টি আসনে নতুন মুখ নিয়ে এসেছে রাজ্যের শাসকদল। তাঁরা হলেন সাকেত গোখলে, সামিরুল ইসলাম ও প্রকাশ চিক বরাইক।
উপহার পাঠিয়েছিলেন মমতা
প্রসঙ্গত, গতবছর অনন্ত মহারাজকে ভাইফোঁটার উপহার পাঠিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর পাঠানো উপহার নিয়ে কোচবিহারের (Cooch Behar) চকচকায় অনন্ত মহারাজের বাড়িতে যান তৃণমূল নেতা রবীন্দ্রনাথ ঘোষ ও পরমানন্দ দাস। মুখ্যমন্ত্রীর পাঠানো ধুতি, পাঞ্জাবি, চাদর, দই, মিষ্টি ও ফুলের তোড়া অনন্ত মহারাজের হাতে তুলে দেন তাঁরা। মুখ্যমন্ত্রীর পাঠানো উপহার গ্রহণ করে তাঁকে ধন্যবাদ জানান গ্রেটার কোচবিহারের নেতা। তবে শুধু উপহার গ্রহণ করেই থেমে থাকেননি মহারাজ, বিনিময়ে মুখ্যমন্ত্রীর জন্যও উপহার পাঠান তিনি। মমতার জন্য উপহার হিসেবে ভিন রাজ্যের বিশেষ চাদর, গামছা ও ঐতিহ্যবাহী পান-সুপারি তুলে দেন রবীন্দ্রনাথ ঘোষের হাতে৷
সেই দিনের সেই উপহার বিনিময়কে অবশ্য সৌজন্য সাক্ষাৎ হিসেবেই বলেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। তবে রাজনৈতিকমহলের একংশের অনুমান ছিল, আগামী লোকসভা নির্বাচনের আগে অনন্ত মহারাজের সঙ্গে সম্পর্ক মজবুত করতেই এই ‘উপহার রাজনীতি’ করেন তৃণমূল নেত্রী। কিন্তু তারই মাঝে অনন্ত মহারাজকে রাজ্যসভার প্রার্থী করার মধ্যে দিয়ে বিজেপি মোক্ষম ‘রাজনৈতিক চাল’ দিল বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের কেউ কেউ।
এদিকে পরিসংখ্যান বলছে কোচবিহারে গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে ২০১৮ সালের নির্বাচনের চেয়ে এবার অনেকটাই ভাল ফল হয়েছে বিজেপির। যদিও গত বিধানসভা নির্বাচনে যে শীতলকুচিতে গুলি চলেছিল, সেখানে প্রতিটি পঞ্চায়েতই গিয়েছে তৃণমূলের দখলে। সেই দিক থেকেও দেখতে গেলে অনন্ত মহারাজকে রাজ্যসভার প্রার্থী করে আগামী লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি অ্যাডভান্টেজে থাকল বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা।
