WB Vote Result : বড়দের ভোটে ভাঙল ছোটদের সিট, হিংসায় ক্ষতি চেয়ার-টেবিলের, ওরা বসবে কোথায়!


এই সময়: ভোট আসে। ভোট যায়। আর স্কুলে-স্কুলে ভোটগ্রহণ কেন্দ্র ঘিরে যে তাণ্ডব চলে, তার ক্ষত সহজে সারে না। যার জেরে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় পড়ুয়ারা। শনিবারের পঞ্চায়েত ভোটও ব্যতিক্রম হলো না। দুষ্কৃতী-দৌরাত্ম্যে রাজ্যের জেলায়-জেলায় ভোটগ্রহণ কেন্দ্র হয়েছিল, এমন কয়েকশো স্কুলে চেয়ার, টেবিল, বেঞ্চ ভাঙচুরে মাথায় হাত বহু স্কুলের প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকার। এখন এই ভাঙা ফার্নিচার সারানোর টাকা মিলবে কোথা থেকে, কী ভাবে? আর এ সব সারানো না হলে ছাত্রছাত্রীরা স্কুলে গিয়ে কোথায় বসবে, কী ভাবেই বা পড়াশোনা হবে, তা নিয়েও দেখা দিয়েছে প্রশ্ন।

West Bengal Panchayat Election Violence : ভোটে একাধিক স্কুলে ভাঙচুর, ক্ষতিপূরণের দাবি প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকাদের
পঞ্চায়েত ভোটে দেদার ভাঙচুরে দিনহাটা, ডোমকল, ইসলামপুর, ডায়মন্ড হারবার, দাসপুর, বাসন্তী-সহ নানা এলাকার বহু স্কুল ক্ষতিগ্রস্ত বলে খবর। এমন বহু স্কুল সোমবার খোলেইনি। অনেক জায়গায় এ সবের মধ্যেও পুনর্নির্বাচন হয়েছে। উত্তর ২৪ পরগনার দক্ষিণ চাতরা হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক কৃষ্ণাংশু মিশ্র জানাচ্ছেন, একটি করে কাঠের চেয়ার, টেবিল ও বেঞ্চ তৈরি করতে অন্তত ১০ হাজার টাকা প্রয়োজন হয়। সেই হিসেবে ক্ষতির পরিমাণ নির্দিষ্ট ভাবে বোঝা না গেলেও সেটা যে কম নয়, তা বোঝা কঠিন না। বহু স্কুলে ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের দরজা পর্যন্ত ভেঙে ফেলা হয়েছে। বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠনের আশঙ্কা, প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলে এই ক্ষতির পরিমাণ কোটি ছুঁইছুঁই।

Kolkata Schools : স্কুলে বাড়ছে হিংসা, পড়ুয়াদের মনের মেরামতিতে বিশেষ ক্লাস
একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বক্তব্যেই ক্ষতির পরিমাণের আঁচ মেলে। দক্ষিণ বনগাঁর বেলতা হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক সুখেন্দুশেখর ঘোষ সোমবার বলেন, ‘আজ স্কুলে গিয়ে দেখি, যে দুটো ঘরে বুথ হয়েছিল, তার ১০টা ফ্যানেরই ব্লেড কে বা কারা বেঁকিয়ে দিয়েছে। সব মিলিয়ে ১৫ হাজার টাকা ক্ষতি। আমি সেক্টর অফিসার ও পঞ্চায়েত সমিটির সভাপতিকে গোটা বিষয়টা জানিয়েছি।’ নির্বাচনী কাজে ব্যবহৃত ক্ষতিগ্রস্ত স্কুলগুলির জন্য ক্ষতিপূরণের দাবি তুলেছেন অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টার্স অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসেস-এর রাজ্য সম্পাদক চন্দন মাইতি। তাঁর কথায়, ‘বহু স্কুলে দুষ্কৃতীরা তাণ্ডব চালিয়ে চেয়ার, টেবিল, বেঞ্চ ইত্যাদি ভেঙেছে। সেই ক্ষতি কবে পূরণ হবে, কেউ জানে না।’

West Bengal Panchayat Vote : কোথাও স্কুল ছুটি, কোথাও পরীক্ষা স্থগিত
মধ্যশিক্ষা পর্ষদের কর্তারা এ ব্যাপারে সংবাদমাধ্যমে মুখ খুলতে রাজি হননি। তাঁদের বক্তব্য, এখনও ভোট প্রক্রিয়া চলছে। সোমবারও বহু স্কুলে ভোট হয়েছে। আজ, মঙ্গলবার অনেক স্কুলে ভোট গণনাও হবে। এই পর্ব মিটলে স্কুল কর্তৃপক্ষ তাঁদের প্রমাণ-সহ চিঠি দিলে সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।

Panchayat Election 2023 : ভোটের ডিউটিতে শিক্ষকরা, বন্ধ কিছু স্কুল, সাসপেন্ড ক্লাস
এ প্রসঙ্গেই উঠছে, মাধ্যমিক-উচ্চ মাধ্যমিকের কথা। পরীক্ষা কেন্দ্রে ভাঙচুর চালালে, যে স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা পরীক্ষা দিতে আসত, সেই স্কুল থেকে জরিমানা আদায় করা হতো। এ বার অবশ্য মধ্যশিক্ষা পর্ষদ নির্বিঘ্নে পরীক্ষা সম্পন্ন করতে আরও কড়াকড়ি করেছিল। পরীক্ষা কেন্দ্রে তিনটি করে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়। পরীক্ষা শুরুর আগে ও পরে জিপিএস অন করে ছবি তুলে রাখার নির্দেশ ছিল। কেন্দ্রে গোলমাল হলে, তার ছবি-সহ লিখিত অভিযোগ জানানোর কথা বলা হয়েছিল পর্ষদকে। কোন স্কুলে, কখন গোলমাল হয়েছে, তার প্রমাণ রাখতেই এই ব্যবস্থা। যে প্রতিষ্ঠানের পড়ুয়ারা এমন কাণ্ড ঘটাবে, সেই স্কুল যদি ক্ষতিগ্রস্ত পরীক্ষা কেন্দ্রের ক্ষতিপূরণ না মেটায়, তা হলে পরীক্ষার্থীদের ফল ‘উইথহেল্ড’ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়।

Crime News : ছাত্রীদের শৌচাগারে সিসিটিভি! অধ্যক্ষকে টেনে-হিঁচড়ে বের করে বেধড়ক মারধর অভিভাবকদের
কিন্তু ভোটের কাজের জন্য স্কুল অধিগ্রহণে রিকুইজিশন দেয় নির্বাচন কমিশন। সে ব্যাপারে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের কোনও ভূমিকা নেই। ফলে অশান্তির জেরে স্কুলে স্কুলে চেয়ার, টেবিল, বেঞ্চ ভাঙলে পর্ষদের সরাসরি কোনও দায়ও নেই।

Schools at Hooghly : শিক্ষক ডাস্টার ছুড়ে মারায় নাক ফাটল ছাত্রের, চরম উত্তেজনা হুগলির স্কুলে
এখন প্রশ্ন, এই সব ক্ষতিগ্রস্ত স্কুলে আসবাব ও অন্যান্য জিনিসপত্র সারানো হবে কী ভাবে? শিক্ষা দপ্তরের এক শীর্ষকর্তা জানান, স্কুলে আসবাব সারাতে ২০১৮ সালে সর্বশিক্ষা মিশন শেষ টাকা দিয়েছিল। তারপর থেকে আলাদা ভাবে কোনও বরাদ্দ হয়নি। এখন ভরসা ‘কম্পোজিট গ্রান্ট’। একটা সময়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল-পিছু আসবাব, মেরামত ইত্যাদি খাতে লাখ টাকা বরাদ্দ হতো। এখন তা কমতে কমতে হয়েছে ৫০ হাজার টাকা। তা-ও আবার পড়ুয়া সংখ্যার উপর নির্ভরশীল



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *