Matua Community : মতুয়া ভোটে ধস, চিন্তা বাড়ল গেরুয়া শিবিরের – bjp managed to keep its vote bank intact in matua affected areas in the last assembly polls but could not in panchayat election result


সুপ্রকাশ মণ্ডল
সারা রাজ্যে ভোটে বিপর্যস্ত হলেও গত বিধানসভা ভোটে মতুয়া-প্রভাবিত এলাকায় নিজেদের ভোট ব্যাঙ্ক অটুট রাখতে পেরেছিল বিজেপি। সে বার জোড়াফুল শিবিরের হাতে থাকা বেশ কয়েকটি আসনও তারা ছিনিয়ে নিয়েছিল। কিন্তু পঞ্চায়েত ভোটে ধস নামল বিজেপির সেই মতুয়া ভোট ব্যাঙ্কেও। নদিয়া-উত্তর ২৪ পরগনা তো বটেই, অন্য এলাকাতেও মতুয়া ভোটব্যাঙ্কে রক্তক্ষরণ চিন্তা বাড়াচ্ছে গেরুয়া শিবিরের।

Bengal Panchayat Election Results 2023 : বাড়ল সিট, তবু ধস ভোটব্যাঙ্কে, তাই কি মুখে সন্ত্রাস
পুরভোটের ফল আগেই খারাপ হয়েছে। গ্রাম বাংলার ভোটেও মতুয়াদের শিবির বদল আগামী লোকসভা ভোটে রক্তচাপ বাড়াতে পারে বিজেপির। তবে সে কথা মানতে নারাজ মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি তথা বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর। তাঁর নিজের বুথে বিজেপির পরাজয় সত্ত্বেও তিনি মনে করছেন, মতুয়া ভোট তাঁদের সঙ্গেই রয়েছে।

নদিয়া, উত্তর ২৪ পরগনা, দুই দিনাজপুর-সহ উত্তরবঙ্গের বেশ কিছু এলাকা মতুয়া ভোটার প্রভাবিত। ২০০৮ সালের পঞ্চায়েত ভোট থেকেই মতুয়ারা বামেদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়া শুরু করেন। ২০১০-এর পুরভোটে শহরাঞ্চলের মতুয়া ভোটাররাও জোড়াফুল শিবিরের দিকে ঝোঁকেন। পরের বছর বিধানসভা ভোটেও মতুয়া ভোটের সিংহভাগ তৃণমূলের ঝুলিতে যায়।

Mamata Banerjee : ভাণ্ডার ভরে আস্থা জানাল গ্রামবাংলা
কিন্তু খেলা ঘুরে যায় ২০১৯-এর লোকসভা ভোটে। সে বার তৃণমূলের দখলে থাকা বনগাঁ এবং রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্র বিজেপির দখলে যায়। ২০২১-এর রাজ্য দখলের ভোটেও এই দুই লোকসভা কেন্দ্রের অধিকাংশ বিধানসভা আসনই বিজেপি দখল করে। সৌজন্যে সেই মতুয়া ভোট। এই দুই ভোটে যথাক্রমে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ঠাকুরনগরে এসে আশ্বাস দিয়েছিলেন, নাগরিকত্ব আইন চালু করে মতুয়াদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। তার পর কয়েক বছর পার হয়ে গেলেও নাগরকিত্ব নিয়ে কার্যত কিছুই হয়নি। সেটাই পঞ্চায়েত ভোটে মতুয়াদের মন-বদলের মূল কারণ কিনা, তা সময় বলবে, তবে পঞ্চায়েত ভোটের ফলে স্পষ্ট, মতুয়া ভোটের সিংহভাগই বিজেপির হাত ছাড়া হয়েছে।

CPIM Congress Alliance : কংগ্রেস আর বামের জোট কিছু এগোল শূন্য থেকে
উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ, বাগদা এবং গাইঘাটা ব্লকে গ্রামপঞ্চায়েত ৩৮টি। আসন সংখ্যা ৯২৪। এর মধ্যে বনগাঁয় তিন গ্রাম পঞ্চায়েতের আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছিল তৃণমূল। ২০১৮ সালে বনগাঁ মহকুমায় ৪টি পঞ্চায়েত দখল করেছিল বিজেপি। এ বার এই চারটিতেই জয় পেয়েছে তৃণমূল। বনগাঁ ব্লকের ১৬টি গ্রাম পঞ্চায়েতের সবকটিই দখল করেছে জোড়াফুল শিবির। গাইঘাটা ব্লকের ১৩টি পঞ্চায়েতের মধ্যে ১২টি দখল করেছে তৃণমূল। ইছাপুর পঞ্চায়েতটি ত্রিশঙ্কু হয়েছে। এই পঞ্চায়েত এলাকাতেই বাড়ি বিজেপির সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতিমন্ত্রী শান্তুনু ঠাকুরের। তুলনায় কিছুটা ভালো ফল হয়েছে বাগদা ব্লকে। এই ব্লকে ৯টি পঞ্চায়েতের মধ্যে ৩টি দখল করেছে বিজেপি। পঞ্চায়েত সমিতি থেকেও কার্যত উধাও হয়ে গিয়েছে বিজেপি।

Alipurduar Panchayat Result: ফিকে একুশের উত্তুরে হাওয়া! পঞ্চায়েতে আলিপুরদুয়ারে জোর ফিরেছে তৃণমূলের, ১ ভোটে হার BJP জেলা সভাপতির
নবজোয়ার কর্মসূচিতে মতুয়াদের পুণ্যভূমি ঠাকুরনগরের ঠাকুরবাড়িতে এসেছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিযোগ, বিজেপির সাংসদ-বিধায়ক এবং কর্মীদের বাধায় মূল মন্দিরে পুজো দিতে পারেননি তিনি। এর জবাব মতুয়ারা ভোট বাক্সে দেবেন বলে জানিয়েছিলেন অভিষেক। ঘটনা খানিক তেমনই হলো।

নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জ, রানাঘাট দক্ষিণ, রানাঘাট উত্তর-পূর্ব এবং উত্তর-পশ্চিম, চাকদহ, হরিণঘাটা এবং কল্যাণী বিধানসভা ২০২১-এ তৃণমূলের হাত থেকে ছিনিয়ে নিয়েছিল বিজেপি মতুয়া ভোটের জোরেই। এ বারের পঞ্চায়েত ভোটে কৃষ্ণগঞ্জ ছাড়া কার্যত উল্টো ফল হয়েছে বিজেপির। কৃষ্ণগঞ্জের ৫টি পঞ্চায়েতের মধ্যে ২টি দখল করেছে তৃণমূল, বাকিগুলিতে জিতেছে বিজেপি।

WB Panchayat Election Result : ব্যালট বাক্সে নবজোয়ার? বলবে বাংলা
কিন্তু বাকি বিধানসভাগুলিতে ধস নেমেছে বিজেপির ভোট ব্যাঙ্কে। স্বভাবতই প্রশ্ন উঠেছে, মতুয়ারা কি তা হলে মুখ ফিরিয়ে নিলেন বিজেপির থেকে? শান্তনু ঠাকুরের অবশ্য দাবি, ‘২০১৮ সালের পঞ্চায়েত ভোটে আমাদের যা ফল হয়েছিল, এ বার তার থেকে ভালোই হয়েছে। তবে গত লোকসভা এবং বিধানসভা ভোটের নিরিখে ফল কিছুটা খারাপ হলেও মতুয়ারা বিজেপির সঙ্গেই রয়েছেন। সিপিএম ভোট কাটায় তৃণমূলের ফল ভালো হয়েছে।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *