প্রবীর চক্রবর্তী: পঞ্চায়েত ভোটে দেদার সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলেছে বিরোধীরা। তবে ভোটের দিন নিহতদের তালিকায় অনেকেই তৃণমূল কংগ্রেসের। কোনও কোনও মহল থেকে দাবি করা হচ্ছে ৩৫৫ ধারা জারি না হলে বাংলায় ভোট করা অসম্ভব। ৩৫৫ ধারা জারি নিয়ে শুভেন্দুকে বিঁধলেন ডেরেক ও’ব্রায়েন। ভিডিয়ো ট্যুইট করে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে বিঁধলেন ব্রায়েন। পঞ্চায়েতের সন্ত্রাসের পেছনে হাত কার তা এখন স্পষ্ট।
আরও পড়ুন-রাতভর বৃষ্টি, প্লাবিত লোকালয়, ফুঁসছে নদী! জারি লাল সতর্কতা…
শুভেন্দুর বিরুদ্ধে বলতে গিয়ে একটি ভিডিয়ো ট্যুইট করেছেন ডেরেক। সেখানে শুভেন্দুর বক্তব্যকে উদ্ধৃত করে লিখেছেন, এমন পরিবেশ তৈরি করতে হবে যাতে ৩৫৫ লাগবে। আমি জানি কী ভাবে তা করতে হয়। ভিডিয়োতে ওই বক্তব্যই শোনা গিয়েছে শুভেন্দুর মুখে।
পঞ্চায়েত ভোটে হিংসার যে অভিযোগ বিরোধীরা তুলেছে তাতে তার পাল্টা হিসেবে শুভেন্দুর বক্তব্যকেই হাতিয়ার করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। দলের নেতৃত্বদের বক্তব্য, শুভেন্দু বলেছেন রাজ্যে এমন পরিবেশ তৈরি করতে হবে যেন ৩৫৫ ধারা জারি করার পরিবেশ তৈরি হয়। তৃণমূল নেতৃত্বের বক্তব্য়, বিরোধী দলনেতা ও বিজেপির অভিসন্ধি হল রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটিয়ে ৩৫৫ ধারা প্রয়োগের পরিবেশ তৈরি করা। বিষয়টি নিয়ে পাল্টা প্রচারের তোড়জোড় করছে তৃণমূল কংগ্রেস।
শুভেন্দুর ওই ভিডিয়ো ট্যুইট করে কুণাল ঘোষ লিখেছেন, এটা একেবারে ষড়যন্ত্র। কেন্দ্রের হস্তক্ষেপে উনি এমনই একটা পরিবেশ তৈরি করতে চান। উনি স্বীকার করছেন সেই পরিবেশ কীভাবে সৃষ্টি করতে হয়। এটাই হচ্ছে হিংসার মূল কারণ। ওঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
EXPLOSIVE VIDEO REVEALS WHO WAS BEHIND VIOLENCE IN BENGAL RURAL POLLS@SuvenduWB BJP Leader of the Opposition in Bengal on camera!
“We have to create an atmosphere where Article 355 (emergency provisions) will have to be implemented. I know how to get all this done.” pic.twitter.com/vWuiwu2SUj
— Derek O’Brien | ডেরেক ও’ব্রায়েন (@derekobrienmp) July 13, 2023
বিরোধী দলনেতার ওই ভিডিয়ো নিয়ে তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের দয়ায় তৈরি হয়েছিল লোডশেডিংয়ে জেতা বিরোধী দলনেতার পরিচিতি। প্রকাশ্যে টাকা নিয়ে ধরা পড়ে তিনি বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। কেন্দ্রের সঙ্গে হাত মিলিয়ে উনি বাংলা বিদ্বেষী কাজকর্ম করে চলেছেন। কীভাবে বাংলার মানুষকে বঞ্চনা করা যায়, কীভাবে বাংলাকে বদনাম করা যায় তার চেষ্টা করে চলেছেন। যখনই তা হচ্ছে তাতে তিনি উল্লসিত হয়ে উঠছেন। বারবার তানি বলছেন বাংলায় ৩৬৬ জারি করতে হবে। মজার ব্যাপার হল তাঁর দলের নেতারাই তাঁকে সমর্থন করছেন না। গতকালই তাঁদের দলের মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যকে বলতে শুনেছি, আমরা ৩৫৫ কিংবা ৩৫৬ ধারা জারির পক্ষে নেই। অর্থাত্ বিজেপির মধ্য়ে তিনি নিজেই কোণঠাসা। বাংলার মানুষ ঐক্যবদ্ধ ভাবে এর মোকাবিলা করবেন।
ভোট পরবর্তী বাংলায় আস ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিমের সদস্য রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেছেন, এরাজ্যে ৩৫৫ ধারা প্রয়োগের পরিবেশ রয়েছে। এনিয়ে শান্তনু সেন বলেন, ফ্যাক্চ ফাইন্ডিং টিম গেল রাজ্যপালের কাছে। রাজ্যপাল সাংবিধিনাক প্রধান হয়ে সমান্তর প্রশাসন চালাচ্ছেন। রবিশঙ্কর প্রসাদের মন্ত্রিত্ব চলে গিয়েছে। এখন তিনি মোদী-শাহকে খুশি করে ফের মন্ত্রীত্ব পেতে চাইছেন। তাই তিনি বাংলাকে বদনাম করা চেষ্টা করবেন।
এনিয়ে বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য বলেন, কে কোন প্রেক্ষিতে কী বলেছেন তা আমার জানা নেই। সাধারণ মানুষকে জিজ্ঞাসা করুন। কংগ্রেস ও তৃণমূলের কোনও পার্থক্য নেই। কংগ্রেস রাতের অন্ধকারে এক কলমের খোঁচায় নির্বাচিত সরকারকে ফেলে দিত। তাদের তো এই ধরনের চিন্তা হবেই। বিজেপি যদি এই সরকারটাকে ফেলতে চাইত তাহলে এখন যারা কথা বলছেন তারা এভাবে কথাই বলতে পারতেন না।