অর্ণবাংশু নিয়োগী: ‘প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতির কিং পিন কে? দুর্নীতির পিছনে কার মাথা’? ইডি-র কাছে জানতে চাইলেন হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহা। তাঁর প্রশ্ন, ‘তদন্ত কী অনন্তকাল চলবে? এটা কী ধরনের তদন্ত হচ্ছে’?
আরও পড়ুন: Panchayat election 2023: ভোট হিংসার বলি আরও ১, ভোররাতে NRS-এ মৃত্যু মুর্শিদাবাদের তৃণমূলকর্মীর
শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি মামলায় এক যোগে তদন্ত করছে সিবিআই ও ইডি। সেই তালিকায় এবার জু়ড়ে গিয়েছে পুর নিয়োগে দুর্নীতিও! কীভাবে? শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি এখন ইডি-র হেফাজতে অয়ন শীল। তাঁর বাড়ি থেকে পুর নিয়োগ সংক্রান্ত একাধিক নথি উদ্ধার করেছেন তদন্তকারীরা। ইডি সূত্রের খবর, উদ্ধার হওয়া সেইসব নথিতে কাঁচড়াপাড়া, নিউ ব্যারাকপুর, টিটাগড়, বরানগর, কামারহাটি, হালিশহর, দক্ষিণ দমদম, উত্তর দমদমের মত একাধিক পুরসভার নাম রয়েছে। এরপরই মামলা গড়ায় কলকাতা হাইকোর্টে।
এদিন হাইকোর্টে সেই মামলার শুনানিতে প্রশ্নের মুখে পড়ল ইডি। বিচারপতি অমৃতা সিনহার মন্তব্য, ‘আপনারা যখন দুর্নীতির একটা গ্রহণযোগ্য জায়গায় পৌছবেন, তখন তদন্তের প্রয়োজনীয়তা আদৌ কি থাকবে। কাঙ্খিত গতিতে আপনাদের তদন্ত চলছে না। টাকা নিয়ে চাকরি পেয়েছেন কারা, খুঁজে বের করুক সিবিআই’।
কী প্রতিক্রিয়া রাজনৈতিক মহলে? তৃণমূল নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, ‘কোন ইডি-কে বলেছেন? আমাদের ভারতীয় ইনফোর্সমেন্ট ডিপার্টমেন্টকে বলেছেন বিচারপতি অমৃত সিনহা? এই ইডি-র যিনি মাথায়, দিল্লিতে এদের বস, তাঁকেই তো সুপ্রিম কোর্ট বলেছে সম্পূর্ণ অবৈধ নিয়োগ। যাঁদের মাথা নিয়োগ হয়েছে অবৈধভাবে, সেই ইডি আবার কার অবৈধ, কে বৈধ বার করবে! এতো সরর্ষের মধ্যে ভুত, এটা কি জানেন না বিচারপতি অমৃতা সিনহা’।
বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্যের মতে, ‘পশ্চিমবঙ্গের মানুষও তো সেটা চাইছে। কতদিন কাঁটা বেছে মাছ খাবেন, চুটোপুঁটি! বড় মাথা কোথায়! কাতলা কোথায়! আমরা চাই, তদন্তের গতি ত্বরান্বিত হোক। তৃণমূলের যাঁরা বক্তব্য রাখছেন, তদন্তের গতি বেড়ে গেল তাঁরাও তো বলবেন প্রতিহিংসা। আর থেমে গেল, কিছু বসে আছে, বলবে দিদি-মোদী গটআপ! এই প্রশ্ন শুনে শুনে আমরা ক্লান্ত, বিরক্ত। আমরা চাই দ্রুত শেষ হোক। এই চোর-পুলিস খেলা অনেক দিন চলেছে’।
আরও পড়ুন: Kolkata Metro: শহরের মেট্রো স্টেশনগুলি ভবঘুরেদের আস্তানা! কোনও পরিত্রাণ নেই?
এর আগে, পুর-নিয়োগে দুর্নীতি মামলার সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যায় রাজ্য। কিন্তু পুর-নিয়োগ তদন্তে অন্তবর্তীকালীন স্থগিতাদেশ জারি করে মামলাটি ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয় হাইকোর্টেই। শেষপর্যন্ত পুর নিয়োগ দুর্নীতি সিবিআই তদন্তের নির্দেশই বহাল রাখেন হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহা।