Ananta Maharaj : রাজ্যসভায় অনন্ত মহারাজের মনোনয়নে না-খুশ আরএসএস – controversy has started over giving rajya sabha ticket to ananta maharaj


এই সময়: তারা চেয়েছিল শমীক ভট্টাচার্যর মতো কোনও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকেই এ রাজ্য থেকে রাজ্যসভায় পাঠানো হোক। কিন্তু আরএসএসের এই ‘সামান্য চাওয়াকে’ গুরুত্ব না দিয়ে রাজবংশী নেতা অনন্ত মহারাজকেই রাজ্যসভার ভোটে টিকিট দিয়েছেন বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। সূত্রের খবর, প্রার্থী নির্বাচন নিয়ে আরএসএসের সঙ্গে বঙ্গ-বিজেপি নেতৃত্বর যে বৈঠক হয়েছিল, সেই আলোচনায় একবারও ওঠেনি অনন্তর নাম। তারপরও কী ভাবে রাজ্যসভার প্রার্থী হিসেবে কোচবিহারের ওই রাজবংশী নেতার নাম ঘোষণা করে দেওয়া হলো, তা নিয়ে জলঘোলা হতে শুরু করেছে গেরুয়া শিবিরে।

Ananata Maharaj Controversy : অনন্ত মহারাজের নাম-পরিচয় নিয়ে বিতর্ক! রাজ্যসভার BJP প্রার্থীকে নিয়ে বিস্ফোরক তৃণমূল নেতা
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের সুপারিশেই অনন্তর শিকে ছিড়েছে বলেও বিজেপির অন্দরের খবর। বৃহস্পতিবার বিধানসভায় গিয়ে মনোনয়নও জমা দিয়েছেন অনন্ত মহারাজ। তিনি ছাড়াও ওই একটি আসনের জন্য বিজেপি প্রতীকে আরও একজন এদিন মনোনয়ন জমা দিয়েছেন বিধানসভায়। তিনি উত্তরবঙ্গের বিজেপি নেতা রথীন্দ্রনাথ বসু। তাৎপর্যপূর্ণ হলো, শমীক ছাড়া আরও দুটি নাম আরএসএসের পছন্দের তালিকায় ছিল, তাঁদের মধ্যে একজন এই রথীন্দ্রই। অন্যজন রাহুল সিনহা।

Ananta Maharaj : রাজ্যসভা সাংসদ হয়েই গ্রেটার কোচবিহারের দাবি? মুখ খুললেন অনন্ত মহারাজ
বিজেপির যুক্তি, অনন্তর মনোনয়ন ত্রুটিগত কারণে বাতিল হয়ে গেলে রথীন্দ্র ভোটে লড়বেন। আগামী সোমবার মনোনয়ন প্রত্যাহার করার শেষ দিন। ফলে সেই যুক্তি অনুযায়ী, অনন্তর মনোনয়নপত্র বাতিল না হলে সোমবারের মধ্যে রথীন্দ্রকে মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিতে হবে। আর সেটা না হলে বিজেপির দুই প্রার্থীর মধ্যে ভোট ভাগাভাগি হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা। এ ক্ষেত্রে রথীন্দ্রর প্রতিক্রিয়াও যথেষ্ঠ ইঙ্গিতপূর্ণ। তিনি বলেন, ‘দলই আমাকে মনোনয়ন জমা দিতে বলেছে। প্রত্যাহার করে নিতে বললে তাই করব।’

Suvendu Adhikari On Abhishek Banerjee : নাম না করে কিম জং উনের সঙ্গে অভিষেকের তুলনা! ধারাবাহিক ‘গোলাবর্ষণ’ শুভেন্দুর
এ বারই প্রথম পশ্চিমবঙ্গ থেকে রাজ্যসভায় একজন সাংসদ পেতে চলেছে বিজেপি। ফলে কাকে প্রার্থী করা হবে, তা নিয়ে বেশ কিছু সপ্তাহ ধরেই চর্চা চলছিল দলে। সাধারণত, যে কোনও নির্বাচনে প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে আরএসএসের মতামতকে গুরুত্ব দেয় বিজেপি। সেই মতো এ বারও বাংলার সঙ্ঘ নেতাদের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল তাঁরা কাকে চাইছেন এ রাজ্য থেকে রাজ্যসভার সাংসদ হিসেবে। সূত্রের খবর, সঙ্ঘের তরফে বিজেপির তিন বর্ষীয়ান নেতা শমীক ভট্টাচার্য, রথীন্দ্র বসু এবং রাহুল সিনহার নাম প্রস্তাব করা হয়েছিল।

Ananta Maharaj : অনন্ত মহারাজকে রাজ্যসভার প্রার্থী ঘোষণা BJP-র, পঞ্চায়েতেই লোকসভার ঘুঁটি সাজাল পদ্ম ব্রিগেড?
তবে শমীকই যে তাঁদের প্রথম পছন্দ সেটা বিজেপি নেতৃত্বকে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন বাংলার সঙ্ঘ নেতারা। তাঁদের যুক্তি ছিল, শমীকের মতো সুবক্তা, ওয়াকিবহাল এবং অভিজ্ঞ রাজনীতিক বঙ্গ-বিজেপিতে খুঁজে পাওয়া যাবে না। তাই তাঁর মতো কেউ রাজ্যসভায় বিজেপির প্রতিনিধিত্ব করলে আখেরে লাভ হবে বাংলারই। পশ্চিমবঙ্গের এক শীর্ষ আরএসএস নেতার কথায়, ‘আমরা চেয়েছিলাম কোনও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকেই এ রাজ্য থেকে রাজ্যসভায় পাঠাক বিজেপি। সেই নিরিখে শমীক ভট্টাচার্যই এক নম্বরে।

Rajyasabha Election Bengal : ৩ নতুন মুখ! রাজ্যসভার ৬ আসনের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করল তৃণমূল
ওঁকে রাজ্যসভায় পাঠালে সংসদে বিজেপি যেমন একজন ভালো বক্তা পাবে, তেমনই এ রাজ্যের পুরোনো বিজেপি নেতা-কর্মীদেরও বার্তা দেওয়া যাবে। শমীক ছাড়াও রাহুল সিনহা এবং রথীন্দ্র বসু আমাদের পছন্দের তালিকায় ছিলেন। আমাদের চাওয়া সামান্যই ছিল।’ ওই আরএসএস নেতার সাফ কথা, ‘অনন্ত মহারাজের নাম নিয়ে আমাদের সঙ্গে বিজেপি আলোচনাই করেনি। কোনও স্বঘোষিত মহারাজকে রাজ্যসভায় পাঠানো হচ্ছে জানলে আমরা অবশ্যই আপত্তি তুলতাম।’

প্রশ্ন হলো, আরএসএসের আপত্তি সত্ত্বেও ওই রাজবংশী নেতা বিজেপির প্রার্থী হলেন কী ভাবে? সূত্রের খবর, অনন্তর জন্য শাহি দরবারে সুপারিশ করেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তথা কোচবিহারের সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক। মন্ত্রকে সহকারীর অনুরোধ ফেলতে পারেননি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।

S Jaishankar : মেয়াদ ফুরোনোর আগেই ফের মনোনয়ন জমা, রাজ্যসভার প্রার্থী হচ্ছেন জয়শঙ্কর
বিজেপির একাংশের দাবি, ২০২৪-এর লোকসভা ভোটে নিজের আসনটি নিয়ে রীতিমতো দুশ্চিন্তায় রয়েছেন নিশীথ। তাই গ্রেটার কোচবিহারের নেতা অনন্ত মহারাজকে রাজ্যসভায় পাঠিয়ে তিনি কোচবিহারের রাজবংশী ভোট নিজের দিকে টানতে চাইছেন। কিন্তু একটি লোকসভা আসন নিশ্চিত করতে গিয়ে বঙ্গভঙ্গের পক্ষে সওয়াল করা কাউকে রাজ্যসভায় পাঠানো কতটা যুক্তিযুক্ত তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে আরএসএসও। তবে অনন্তর রাজ্যসভায় যাওয়ার মসৃণ পথেও কিন্তু রথীন্দ্রর কাঁটা রয়ে গিয়েছে। আর সেই কাঁটাটা কৌশলে সঙ্ঘই বিছিয়েছে বলে মনে করছে গেরুয়া শিবিরের একাংশ।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *