গতকাল আর জি কর হাসপাতালেই মৃত্যু হয় বছর ১৩-র সায়নিকা হালদারের। আর এই ঘটনার পরেই পুরসভার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তুলেছেন এলাকার মানুষ। তাঁদের দাবি, এলাকার নর্দমা মাঝেমধ্যে পরিষ্কার করা হলেও জল একাধিক জায়গায় জমে থাকে। তাঁর ফলেই ডেঙ্গি ছড়াচ্ছে এলাকায়।
সায়নিকার প্রথমে জ্বর হয় তারপর বমি এবং পেটে ব্যাথা শুরু হলে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে রক্তের নমুনা পরীক্ষা করা হলে ডেঙ্গি ধরা পরে। তারপর বারাসত হাসপাতালে চিকিৎসা শুরু হয়। কিন্ত শারীরিক অবস্থার অবনতি হয় তাঁর।
অবশেষে আর জি কর হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হলে গতকাল মৃত্যু হয় ছোট্ট সায়নিকার। এই ঘটনার পরেই তৎপর হতে দেখা যায় বারাসত পুরসভাকে। এলাকায় নর্দমাগুলিতে মশার লাভার মারার কীটনাশক স্প্রে করতে দেখা যায়।
এই ঘটনা নিয়ে যথেষ্ট আতঙ্কে রয়েছেন এলাকার মানুষ। হালদার পরিবারের এক প্রতিবেশী বলেন, ‘ওই বাচ্চা মেয়েটাই এরকম পরিণতি হবে আমরা কেউই ভাবতে পারিনি পাড়ায়। বৃষ্টি হয়নি অনেকদিন। তা সত্ত্বেও যদি এখনই ডেঙ্গির এরকম অবস্থা হয়, তাহলে লাগাতার বৃষ্টি শুরু হলে ডেঙ্গির বাড়বাড়ন্ত কতটা হতে পারে, সেই ভেবেই আতঙ্ক লাগছে।’
যদিও এই বিষয়ে পুরসভার কোনও আধিকারিকের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। উল্লেখ্য, সপ্তাহ দুয়েক আগে বিধাননগর এলাকাতেই ডেঙ্গির বাড়বাড়ন্ত চোখে পড়েছিল। বর্ষার শুরুতেই বিধানগর পুরনিগম এলাকায় ডেঙ্গির প্রকোপ বেড়েছে। সল্টলেক সংলগ্ন রাজারহাট, নারায়ণপুর ও দত্তবাদে ডেঙ্গি পরীক্ষা কেন্দ্রগুলিতে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে।
গত কয়েক সপ্তাহে বিধাননগর মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের ৪১টি ওয়ার্ডে এক ডজনেরও বেশি নতুন ডেঙ্গি আক্রান্তের খবর পাওয়া গিয়েছে। অর্থাৎ শুধু বারাসত এলাকাই নয়, জেলার আশেপাশের অন্যান্য এলাকাগুলিও ধীরে ধীরে ডেঙ্গির থাবার কবলে যাচ্ছে। আর এর পরিপ্রেক্ষিতেই কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে জেলা প্রশাসনের।
সাধারণত ডেঙ্গির ঘটনা জুলাই মাসে বাড়তে শুরু করে। যা অব্যাহত থাকে অক্টোবর পর্যন্ত। আর এই কারণেই এই ভরা বর্ষায় আতঙ্কে রয়েছেন সাধারণ মানুষ।