শুক্রবার একটু হাঁফ ছাড়ার সুযোগ পেয়ে সাতসকালেই নবদ্বীপ শহরের গোঁসাই বাজারে যথারীতি সব্জি বিক্রি করতে চলে আসেন। গৌরাঙ্গ বলেন, ‘আমার মতো ফাইভ পাশ সব্জি বিক্রেতাকে দল প্রার্থী করেছে, গ্রামের মানুষ আমাকে জিতিয়েছে, এটাই বড় পাওনা। তাই দল এবং এলাকার মানুষের মর্যাদা রক্ষা করার দায়িত্ব আমার।’ তাঁর কথায়, ‘পঞ্চায়েতে জিতে অনেকে অন্যপথে গিয়ে টাকা কামান বলে শুনেছি। আমি সেসব পথে নেই। সকালে সব্জি নিয়ে কয়েক ঘণ্টা বাজারে বসতে পারলেই আমার সংসার চলে যাবে। দুপুরে, বিকেলে ও রাতে মানুষের জন্য কাজ করব।’
প্রথম বার ভোটে দাঁড়িয়েই জিতেছেন গৌরাঙ্গ। তাঁর বাড়ি স্থানীয় গাজনতলায়। গ্রামের কোনও মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া, মুমূর্ষু মানুষের রক্তের প্রয়োজনে রক্ত জোগাড় করে দেওয়া, অনেক দিন আগে থেকেই সমাজসেবা করেন গৌরাঙ্গকে। সেই গৌরাঙ্গ এখন বলছেন, ‘দায়িত্ব আরও বেড়ে গেলো।’ বাজারের এক ব্যবসায়ী ফোড়ন কেটে বলেন, ‘লঙ্কায় গিয়ে ক’দিন রাবণ না হয়ে থাকিস সেটাই দেখব।’
এ দিন নবদ্বীপের বাজারে সব্জি নিয়ে বসতেই বাজারের অন্য ব্যবসায়ীরা তাঁকে আবদার করে বলেন, ‘ভোটে যখন জিতেছো ভাই, এ বার মাংস-ভাত চাই-ই চাই।’ গৌরাঙ্গ হাসিমুখে তাঁদের বলেছেন, ‘পাড়ার ক্লাবের পিকনিকে ডাল-ভাত-তরকারি বা গ্রামের নাম সংকীর্তনে খিচুড়ি রান্না, আমিই করে থাকি। রান্নাবান্না করাটা আমার শখ। নিজের হাতে একদিন খিচুড়ি-সব্জির ঘ্যাঁট রান্না করে সবাইকে খাইয়ে দেব।’