ভবানন্দ সিংহ: ভোট পরবর্তীতে উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুর ব্লকের খুন্তি অঞ্চলের বুধাগছ, দিঘিরপাড় গ্রামে তৃণমুলের একটি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে এলাকা ঘুরে দেখলেন তৃণমূল বিধায়ক আব্দুল করিম চৌধুরী। পঞ্চায়েত ভোটে করিম চৌধুরীর অনুগামীরা নির্দল প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় তৃণমূল কংগ্রেস আশ্রিত দুস্কৃতিরা করিম অনুগামীদের বাড়ি ভাঙচুর, মারধর করছে বলে অভিযোগ করলেন তিনি। শুধু তাই নয়, এরকম চললে রাজ্যসভার ভোটাভুটিতে তিনি অংশ নেবেন না বলেও হুঁশিয়ারিও দেন তিনি।
আরও পড়ুন-‘আগামী পাঁচ মাসের মধ্যে ওদের সরকার পড়ে যাবে’, তৃণমূলকে হুঁশিয়ারি শান্তনু ঠাকুরের
খুন্তি এলাকায় এক গৃহবধূর অভিযোগ, বাড়িঘর সব ভেঙে দিয়েছে। বাইরে থেকে লোকজন এসে মানুষকে মানুষকে মারধর করছে। গুলি করছে। আমরা তো নির্দল। শাসক পার্টির লোকজন এসব করছে। আট দিন ধরে এসব চলছে। রোজ এসে ধমক দিয়ে যাচ্ছে। বলছে, বাইরে থেকে লোক এসেছে। তাদের বাইরে বের করে দে। ঘরের গাড়ি ভেঙে দিয়েছে, চেয়ারটেবিল ভেঙে দিচ্ছে। বলছে কেন টিকিট নিয়েছো। আমাদের কাছে আত্মসমর্পন করো।
করিম চৌধুরী বলেন, খুন্তি অঞ্চলের মানুষের উপরে অত্যাচার শুরু হয়েছে। তাই বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসেছি। গত ৮ তারিখ থেকে এখনওপর্যন্ত ওরা এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। এমন অবস্থা যে এলাকায় কোনও পুরুষ নেই। সবার ঘরে গিয়ে তাল্লশি করছে কারও ঘরে কেউ এসেছে কিনা। হুমকি দিচ্ছে। পুলিস এলাকায় ঢুকতে চাইলে তাদের আগেই আটকে রেখে দিচ্ছে। বলছে কিছু হয়নি। তৃণমূলের অত্যাচারী নেতা জাকিরের নেতৃত্বে এসব হচ্ছে। ইলেকশন কমিশনকে লিখেছি, ডিএমকে লিখেছি। দিদি সব জানে। আশ্চর্য হয়ে যাচ্ছি যে দিদি কেন কিছু বলছেন না। এরকম সন্ত্রাস চললে রাজ্যসভার নির্বাচনে আমি ভোট দিতে যাব না। বিধানসভায় কোনও বিল এলে আমি সরকারকে সমর্থন করব না। এখানে এই খুন্তি অঞ্চলে এসে দেখলাম ঘরবাড়ি সব ভাঙা, ঘরে ঢুকে বাইক ভেঙেছে, চেয়ার টেবিল ভেঙেছে। যাদের বাড়ি ভাঙা হয়েছে তার নির্দল করেন। আমার অনুগামী তারা। কিছু দুষ্কৃতীকে টিকিট দিয়ে দেওয়া হল। আমরা নির্দল হয়ে দাঁড়ালাম। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কীভাবে এটা সহ্য করছেন? কিছু লোকের ঘেরাটোপের মধ্যে উনি হয়তো পড়ে রয়েছেন।
এদিকে, তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে তৃণমূলের ইসলামপুর ব্লক সভাপতি জাকির হোসেন বলেন, আমার এলাকায় সস্ত্রাস আমি বরদাস্ত করি না। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যয়া ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বার্তা হল সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স। ওই বার্তাকে পাথেয় করেই আমি কাজ করি। ভোটের পর খুন্তি অঞ্চলের প্রতিটি বুথ ঘুরে ঘুরে আমি বলেছি কোথায় কোনও যেন সমস্যা না হয়। দলের নাম করে কেউ যদি গন্ডগোল করতে চান তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্য়বস্থা নেওয়া হবে। এমনকি আমাদের কথায় যাতে কেউ আঘাত না পায় তা আমি স্পষ্ট করে দিয়েছি। খুব শান্তিপূর্ণ পরিবেশকে উস্কে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। এটা কাম্য নয়। ওঁর সমস্যা আমাকে নিয়ে। তা যদি হয় তাহলে তা রাজনৈতিকভাবেই সমাধান করতে হবে। কিন্তু মানুষকে ভুল বুঝিয়ে মানুষকে উত্ত্যক্ত করা ঠিক নয়। উনি জানেনই না কোথায় কী ঘটেছে। ওঁর সকাল হয় বেলা বারোটায়। আজকের দিনে এই রাজনীতি চলে না। ওখানে গ্রাম নাকি পুরুষ শূন্য হয়ে গিয়েছে। ভোটের দিন যারা এলাকায় গুলি চালিয়েছে তাদের পুলিস এখন খুঁজছে। তাতে আমাদের কোনও ভূমিকা নেই।