কমলাক্ষ ভট্টাচার্য: রাজ্যের তৃণমূল কংগ্রেস সরকার গঠনের পর সিপিএম বলেছিল। এবার সেই একই কথাই বললেন কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতিমন্ত্রী। বিজেপি বৈঠকের আগে শান্তনু ঠাকুর বলেন, তৃণমূল ভেবে নিয়েছে এরা চিরস্থায়ী। এরা চিরস্থায়ী নয়। আগামী ৫ মাসের মধ্যে এদের সরকার পড়ে যাবে। আমি গ্যারান্টি দিয়ে বলে যাচ্ছি। এদিকে, শান্তনু ঠাকুরের পর এনিয়ে ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করলেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তাঁর দাবি যে কোনও সময় এই সরকার পড়ে যেতে পারে।
আরও পড়ুন- ‘আগামী পাঁচ মাসের মধ্যে ওদের সরকার পড়ে যাবে’, তৃণমূলকে হুঁশিয়ারি শান্তনু ঠাকুরের
গতকালই ফের রাজ্যে ৩৫৫ ধারা জারির কথা বলেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। আর আজ দলের বৈঠকে যোগ দিতে এসে সুকান্ত মজুমদার বলেন, এই সরকারে যেকোনও সময় পড়ে যেতে পারে। অসুবিধের তো কিছু নেই! একটি সরকার কীভাবে চলে? বিধায়কদের সমর্থনে চলে। হাঠাত্ বিধায়করা মনে করলেন আমরা সমর্থন করব না। আমরা অন্য় কাউকে সমর্থন করব। বিধায়কদের মনে হতেই পারে। না হওয়ার তো কিছু নেই। আবার এমন গণ আন্দোলন তৈরি হল যে বিধায়করা হঠাত্ হাত জোড় করে বললেন আজ থেকে আমরা আর বিধায়ক নেই। রাজনীতি সম্ভাবনার ক্ষেত্র। সবকিছুই হতে পারে। কোনও সম্ভাবনাই অস্বীকার করা যায় না।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর কাছে হিংসা নিয়ে দরবার করেছে রাজ্য বিজেপি। ৩৫৫ ধারা জারিরও দাবি করা হয়েছে। তার পরেই শান্তনু ঠাকুর ও সুকান্ত মজুমদার একযোগে যা বলছেন তা রাজনৈতিক ভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজ্নৈতিক মহল। তাহলে কি মহারাষ্ট্রের মতো ঘোড়া কেনাবেচার একটা সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে? সেই ইঙ্গিতই কি দিতে চাইলেন সুকান্ত? শুরু হয়ে গেল জল্পনা। শান্তনু ঠাকুর বলেছিলেন ৫ মাসের মধ্য়ে এই সরকার পড়ে যাবে। আর সুকান্তু মজুমদার বলছেন যে কোনও সময় পড়ে যেতে পারে তৃণমূল সরকার। কীভাবে সরকার পড়বে তার রাস্তাও দেখিয়ে দিয়েছেন সুকান্ত।
রাজ্য বিজেপি সভাপতির চাঞ্চল্যকর ওই মন্তব্য নিয়ে তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ বলেন, ভোটে ওরা গো হারা হেরেছে। এরকম একটি পরাজয়ে ওদের নেতৃত্বের যোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। বাংলা বিজেপির ভোট কমছে, সিট কমছে, বিজেপি কর্মীরা আশাহত ও গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে দীর্ণ। পুরনো বিজেপি, তত্কাল বিজেপি ইত্যাদি। ওরা না সব সময়ে দেখবেন একটা তারিখ দেব। একটা মাস বলবে। একটা ক্যালেন্ডার রাজনীতি করবে।
এদিন সুকান্ত মজুমদার আরও বলেন, বাংলায় কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপের প্রয়োজন রয়েছে। তা না হলে হিংসা বন্ধ হবে না। সঠিক সময় সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে আগেই বলেছি এটা প্রশাসনিক সিদ্ধান্তের বিষয়। ঠিক সময়েই তা নেওয়া হবে। উল্লেখ্য, রাজ্যে নির্বাচন পরবর্তী হিংসা নিয়ে আগেই ট্যুইটারে তোপ দেগেছিলেন সুকান্ত মজুমদার। তিনি লেখেন, ‘পঞ্চায়েত ভোটে রাজ্য জুড়ে ভোটের আগের রাত থেকে ব্যালট বাক্স খুলে ছাপ্পা, ভোটের দিন সন্ত্রাস করে ছাপ্পা, বৈধ ব্যালট লুঠ করে ফেলে দেওয়া, গণনাকেন্দ্রে বিডিও সহ অন্যান্য প্রশাসনিক আধিকারিকদের মদতে তৃণমূলী দুষ্কৃতীদের সাহায্যে কারচুপি করে তৃণমূলকে জেতানোর ঘটনা তো ছিলোই। বালুরঘাট ব্লকের বিডিও সাহেব নতুনত্ব যোগ করলেন। “গণনাকেন্দ্র থেকে মেমরি কার্ড-সহ আস্ত সিসিটিভি ক্যামেরা উধাও। বিডিও সাহেবের গলায় অনৈতিক কাজগুলো কাঁটার মতো বিঁধে গেছে, না পারছেন গিলতে না পারছেন বার করতে। আইনের নজর থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখতেই সিসিটিভি উধাও করে দেওয়া হল না তো ? পশ্চিমবঙ্গের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের স্বার্থে প্রত্যেকটি ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ আমরা মহামান্য উচ্চ আদালতের নজরে আনব এবং এর বিরূদ্ধে বৃহত্তর আন্দোলনে নামব’।