ভোটের আগে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার বন্ধের হুঁশিয়ারি শোনা গিয়েছিল। তাঁর গলায় যাতে রাজ্য শুরু হয় শোরগোল। লক্ষ্মীর ভাণ্ডার বন্ধের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ” আসলে যেটা অভিযোগ আমার বিরুদ্ধে করা হয়েছে তা ঠিক নয়। শহরের রাজনীতি এবং গ্রামের রাজনীতির মধ্যে কিছুটা পার্থক্য আছে। কেননা শহরের মানুষ রাজনৈতিক ভাবে যথেষ্টই সচেতন। তবে গ্রাম বাংলার মানুষরা সরল-সাদাসিধে হওয়ায় তাদের যে যা বোঝায় সেটাই তারা বুঝে নেয়। নির্বাচনের আগে আমি যখন প্রচারে যাই, তখন এক বৃদ্ধ মহিলাকে আমি জিজ্ঞেস করি যে আপনি লক্ষীর ভাণ্ডার পেয়েছেন। তার উত্তরে সে বলে হ্যাঁ পেয়েছি। আমি তখন তাকে জিজ্ঞেস করি যে লক্ষীর ভাণ্ডার কে দিয়েছে? তার উত্তরে বয়স্ক মহিলাটি আমায় বলে ব্যাঙ্কের ম্যানেজার দিয়েছে। এই উত্তর শুনে আমি অবাক হই। ”
এখানেই শেষ নয়, তাঁর মন্তব্যের স্বপক্ষে তিনি বলেন, ”বিভিন্ন সময়ে সাধারণের সঙ্গে কথা বলে আমি জানতে পারি যে, সবুজ সাথীর সাইকেল দেয় স্কুলের প্রধান শিক্ষক, কন্যাশ্রী-রূপশ্রীর টাকা দেয় ব্যাঙ্কের ম্যানেজাররা। তখন আমি উপলব্ধি করি যে ,আমাদের প্রচারেই কিছু খামতি রয়েছে। আমরা হয়তো ঠিকমতো সাধারণ মানুষকে বোঝাতে পারছি না। তখনই আমি বিভিন্ন গ্রামে গ্রামে ঘুরে প্রচারে গিয়ে সোজাভাবে সাধারণ মানুষকে বোঝানোর চেষ্টা শুরু করি। সেই সময়ই ভোট না দিলে লক্ষীর ভাণ্ডার বন্ধ করে দেব বলতে বোঝাতে চেয়েছিলাম যে, ভোট যদি তৃণমূল কংগ্রেসকে সাধারণ মানুষ না দেয়, তাহলে তো তৃণমূল কংগ্রেস সরকারে ক্ষমতায় থাকতে পারবে না, ক্ষমতায় না থাকলে তৃণমূলের নেওয়া প্রকল্পগুলি বন্ধ হয়ে যাবে। সেই কারণেই আমি লক্ষীর ভাণ্ডার বন্ধ হয়ে যাওয়ার কথা বলেছিলাম। আমার কথার উলটো মানে বের করে বিরোধীরা মানুষকে ভুল বুঝিয়েছে।”
পঞ্চায়েত নির্বাচনে ছাপ্পা ভোট এবং গণনাকেন্দ্রে কারচুপির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “গোটা করণদিঘী ব্লকে শান্তিপূর্ণভাবেই ভোট হয়েছে। কিছু কিছু জায়গায় বিরোধীরা গন্ডগোল করেছিল। আবার নিজেরাই অভিযোগ করেছিল। তাদের অভিযোগ ছিল ওই কেন্দ্রগুলিতে পুনঃনির্বাচন করাতে। আমরাও বলেছিলাম পুনঃনির্বাচন হোক। কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়েই শান্তিপূর্ণভাবে পুর্ননির্বাচন হয়েছে। এবং সবগুলোতেই আমরাই জিতেছি। এবং গণনাকেন্দ্রে আমাকে কেন্দ্রীয়বাহিনী ‘ফলোআপ’-এ রেখেছিল। তবে খারাপ ব্যবহার করেনি, আমার প্রতিটা গতিবিধি তারা নজরে রেখেছিল। আমি আমার বুথে প্রার্থীর হয়ে কাউন্টিং এজেন্ট হিসেবেই ছিলাম এবং কাউন্টিং শেষে বিজেপি কর্মীদের আগেই আমরা বেরিয়ে গিয়েছিলাম। আমি যদি সেখানে কোনও রকম গন্ডগোল কিংবা কারচুপি করতাম তাহলে তো আমরা পরে বের হতাম। আমরা তা করিনি। বিরোধীরা শুধু একটাই কাজ করেছে তা হল আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছে। সত্যি যদি আমি কারচুপি করতাম তাহলে ৩৯টা পঞ্চায়েত সমিতির আসনে ২৭ টা জিততাম না। বিরোধীরা বেশ কিছু জায়গায় সামান্য পরিমাণ ভোটে জিতেছে। কারচুপি করলে সেটা কি সম্ভব হতো? আমরা সাধারণ মানুষের পাশে ৩৬৫ দিন কাজ করি বলেই করণদিঘি ব্লকের ১৩টি গ্রাম পঞ্চায়েতে জয়ী হয়েছি। এবং ৩৯টি পঞ্চায়েত সমিতির আসনের মধ্যে ২৭ টি আসনে ও জেলা পরিষদের ৩টি আসনেই জয়ী হয়েছি।”