নামখানার উত্তর চন্দনপিঁড়ির বাসিন্দা নিহত কিশোরের নাম মইদুলতুল্লা। মনিরার স্বামী এজাহারতুল্লা পরিযায়ী শ্রমিক। চারদিন আগেই কাজের সূত্রে ভিন রাজ্যে পাড়ি দিয়েছেন তিনি। বাড়িতে দুই ছেলে-মেয়েকে নিয়ে থাকতেন মনিরা। মইদুল ভাইবোনের মধ্যে ছোট। মঙ্গলবার রাতে প্রতিবেশী যুবক হানিফ মনিরার বাড়িতে আসে। হানিফের বাড়িতে আসা নিয়ে মায়ের উপর চোটপাট করে দুই ছেলে-মেয়ে। কিন্তু ছেলে-মেয়ের আপত্তি অগ্রাহ্য করেই হানিফ রাতে মনিরার বাড়িতে থেকে যায় বলে অভিযোগ।
সেই রাতে দু’জনের ঘনিষ্ঠ মুহূর্ত দেখে ফেলে মইদুল। তার পর থেকেই ছেলেকে মুখ বন্ধ রাখার জন্য চাপ দিতে থাকে মনিরা ও হানিফ। বুধবার যথারীতি স্কুলে যায় ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র মইদুল। অভিযোগ, স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পর সন্ধে থেকে ছেলেকে মারধর করে মনিরা। তার পর হানিফের সঙ্গে মিলে শ্বাসরোধ করে তাকে খুনের পর দড়ি দিয়ে ঝুলিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
হানিফের মৃত্যুর পর ছেলে আত্মঘাতী হয়েছে বলে প্রতিবেশীদের কাছে কান্নাকাটি শুরু করে মনিরা। কিন্তু গোটা ঘটনায় এলাকার মানুষের সন্দেহ বাড়ে। তখনই মনিরাকে আটকে রেখে মারধর শুরু করে প্রতিবেশীরা। চাপের মুখে ছেলেকে খুনের কথা স্বীকার করে নেয় ওই মহিলা। নামখানা থানার পুলিশ এসে মনিরাকে গ্রেপ্তার করে। বৃহস্পতিবার বিকেলে কাকদ্বীপ মর্গে নিহত কিশোরের দেহের ময়নাতদন্ত হয়।
ভাইকে খুন করার ঘটনায় কান্নায় ভেঙে পড়ে মায়ের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছে মনিরার মেয়ে রশিদা খাতুন। বছর আঠেরোর কিশোরীর অভিযোগ, ‘প্রায়ই বাড়িতে যাতায়াত করত ওই হানিফ। ও বাড়িতে এলেই ভাই রেগে যেত। মা এবং হানিফ মিলেই ভাইকে গলা টিপে খুন করেছে। পরে আত্মহত্যা বলে চালানোর জন্য গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঘরের ভেতরে ঝুলিয়ে রেখেছিল।
এ ভাবে আমার ভাই আত্মহত্যা করতে পারে না।’ মনিরার প্রতিবেশী সালেহা বিবি বলেন, ‘মনিরা আর হানিফের সম্পর্ক নিয়ে পাড়ার লোকজন কানাঘুষো করত। ওর ছেলে সেটা জেনে ফেলেছিল। কিন্তু তার জন্য মা হয়ে ছেলেকে নিজে হাতে খুন করতে পারল! একবারের জন্য ওর হাত কাঁপল না!’