গ্রামের যোগাযোগ ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজতে তৈরি হচ্ছে নতুন নতুন রাস্তা। এর জন্য খরচ হয় কোটি কোটি টাকা। রাস্তা তৈরির কাজ যাতে ঠিকমতো এগোয়, তার জন্য নজরদারি আরও জোরদার করছে রাজ্য সরকার। তার জন্য মোবাইল অ্যাপ এবং ওয়েব পোর্টাল তৈরি করছে পঞ্চায়েত দপ্তর। এর নাম দেওয়া হয়েছে ‘পথশ্রী মোবাইল অ্যাপ’। এই অ্যাপের সাহায্যে কলকাতায় বসেই প্রত্যন্ত গ্রামে কোথায় রাস্তার কাজ কেমন চলছে, কী ভাবে রাস্তা মেরামত করা হচ্ছে, সবটাই জানতে পারবেন নবান্নের কর্তারা।
কোথাও কোনও গাফিলতি হলে প্রয়োজনীয় নির্দেশও দিতে পারবেন তাঁরা। পঞ্চায়েত দপ্তরের এক আধিকারিকের দাবি, এই নতুন সিস্টেম চালু হলে গ্রামের রাস্তা তৈরির কাজ আরও মসৃণ হবে। রাস্তা তৈরিতে যে সব অনিয়মের অভিযোগ ওঠে, তাতেও রাশ টানা যাবে। নবান্ন সূত্রে খবর, প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা এবং আরআইডিএফ প্রকল্পে গ্রামীণ এলাকায় যে সব রাস্তা তৈরি হয়েছে, সেগুলোর উপর নজরদারি করতেই অ্যাপ এবং পোর্টাল তৈরি হচ্ছে। রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষকর্তারা ছাড়াও জেলাশাসক, জেলা পরিষদের কর্মকর্তা, ব্লক আধিকারিক, ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট রুরাল ডেভলপমেন্ট এজেন্সি এবং সুপারিন্টেন্ডিং ইঞ্জিনিয়ার পদমর্যাদার আধিকারিকরা এই অ্যাপ ও পোর্টাল ব্যবহার করতে পারবেন।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, রাস্তা তৈরির ওয়ার্ক অর্ডার বেরিয়ে গেলেই দায়িত্বপ্রাপ্ত ইঞ্জনিয়াররা অ্যাপের ব্যবহার শুরু করবেন। রাস্তা তৈরির কাজ শুরু হওয়ার আগে এবং কাজ শেষ হওয়ার পরে ছবি তুলে তা জিও ট্যাগিং করা হবে। রাস্তা যাতে সহজে শনাক্ত করা যায়, এর জন্য প্রতি ১০-২০ মিটার অন্তর জিও লোকেশন ম্যাপ ব্যবহার করা হবে। কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে ইনস্পেকশন রিপোর্টের কপিও আপলোড করা হবে পথশ্রী অ্যাপে। রাস্তার ছবিও অ্যাপে দেখতে পাওয়া যাবে।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের ঠিক আগে গোটা রাজ্যজুড়ে মোট ১২ হাজার কিলোমিটার গ্রামীণ রাস্তা তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। তার জন্য খরচ হবে আনুমানিক ৩ হাজার কোটি টাকা। সেই মতো টেন্ডার ডাকার প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। তার মধ্যে বেশ কিছু রাস্তার কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। তার মধ্যেই পঞ্চায়েত ভোট এসে যাওয়ায় এখনও বেশির ভাগ রাস্তার কাজ শুরু করা যায়নি। পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন প্রক্রিয়া শেষ হলেই ওই সব রাস্তার কাজ শুরু হয়ে যাবে। তার উপর নজর রাখতে অ্যাপের সাহায্য নেওয়া হবে।
রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়নমন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার বলেন, ‘গ্রামীণ পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য সড়কের উন্নয়ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মুখ্যমন্ত্রী চাইছেন, এই কাজে যাতে কোনও ঢিলেমি না হয়। তার জন্য আমরা যেমন নজর রাখছি, তেমনি প্রযুক্তির সাহায্য নেওয়া হবে। যাতে সরকারি টাকার কোনও অপব্যবহার না হয়।’