পরিবার সূত্রে খবর, ওই দুই মহিলা মালদার পাকুয়া হাটে লেবু বিক্রি করতে যান। সেখানে তাঁদের বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগ ওঠে। এরপরেই তাঁদের মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। এই বিষয়ে নিগৃহীতার মেয়ে বলেন, ‘মা পাকুয়াহাটে লেবু বিক্রি করতে গিয়েছিল। একজন মিষ্টি বিক্রেতা বলে ওরা চুরি করেছে। তারপরেই সবাই মিলে মারতে শুরু করে।’ ঘটনায় তাঁর মা ও তাঁর কাকিমাকেই পুলিশ গ্রেফতার করেছে বলে জানান নির্যাতিতার মেয়ে। ইতিমধ্যেই ঘটনার একটি ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। যদিও সেই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি এইসময় ডিজিটাল। ভিডিওতে সিভিক ভল্যান্টিয়ারের পোশাক পরা দু’জনকে ওই মহিলাদের ভিড়ের হাত থেকে বাঁচানোর চেষ্টা করতেও দেখা গিয়েছে। যদিও ওই ভিডিও বা ঘটনা নিয়ে পুলিশের তরফে এখনও পর্যন্ত কোনও প্রতিক্রিয়া আসেনি।
এদিকে এই ঘটনাকে ঘিরে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজ। বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা অমিত মালব্য টুইটে লেখেন, ‘পশ্চিমবঙ্গে আতঙ্ক অব্যাহত রয়েছে। মালদার বামনগোলা থানার পাকুয়া হাট এলাকায় দুই আদিবাসী মহিলাকে নগ্ন করে নির্মমভাবে নির্যাতন ও মারধর করা হয়েছ। ঘটনাস্থলে পুলিশ নীরব দর্শক হয়ে দাঁড়িয়েছিল। মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে ১৯ জুলাই সকালে। এটি একটি এমন ট্র্যাজেডি যাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন ‘ভেঙে’ যাওয়া উচিত ছিল এবং তিনি আক্রোশের পরিবর্তে তদন্ত করাতে পারতেন। কারণ তিনি বাংলার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও। কিন্তু তিনি কিছুই করেননি। তিনি বর্বরতার নিন্দা করেননি বা দুঃখপ্রকাশ করেননি কারণ, এটি মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে তাঁর নিজের ব্যর্থতাকে প্রকাশ করে।’ একইভাবে সরব হতে দেখা যায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুরকেও। তিনি বলেন, ‘মহিলাদের বিরুদ্ধে যে কোনও অপরাধই অপরাধ। কোন সরকার ক্ষমতায় রয়েছে, তার উপরে অত্যাচার নির্ভর করে না। বাংলা, বিহার ও রাজস্থানেও এই ধরনের ঘৃণ্য অপরাধ হচ্ছে, সেখানে কি বিরোধীরা প্রতিনিধি দল পাঠাবে?’ এই ঘটনার প্রতিবাদে জেলা এসপি অফিস ঘেরাও করে বিজেপি।
পালটা রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের নেত্রী তথা রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা বলেন, ‘একটা বড় হাট, সেখানে অনেকে অনেক কিছু বিক্রি করেন। সেখানে চুরি হয়েছে। দুই মহিলা চোর ছিল, যাঁরা তাঁদের ধরেন তাঁরাও মহিলা। ধস্তাধস্তি হয়, সকলেই গরীব। সেই সময়ই পোশাক খুলে যায়। সেটাকে রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে কেন দেখা হচ্ছে? সিভিক ভলান্টিয়াররা গিয়ে মারামারি থামানোর চেষ্টা করেন। মহিলারা হাতে আইন তুলে নিয়েছে, এটাও ঠিক নয়। পুলিশ মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে।’