Trending News: লাঠি হাতে পাহারায় চাঁদ, নওদায় গাছ ভরা সংসার টিয়াদের – murshidabad naoda resident protecting parrots and other birds all day and night


বয়স সত্তরের ঘরে। কিন্তু এখনও মেরুদন্ড সোজা। সোজা মেরুদন্ড লাঠিহাতে আর অদম্য ইচ্ছাশক্তিতে তিন দশক ধরে টিয়াদের পাহারা দিয়ে আসছেন নওদা ব্লকের চাঁদপুর গ্রামপঞ্চায়েতের কুঠিবাড়ির সেলিম মিঞা ওরফে চাঁদ মিঞা। এখন এলাকায় পাখিদের পাহারাদার নামেই চাঁদ মিঞা পরিচিত।

আমতলা গোপালপুর ঘাট রাজ্য সড়কের একপাশে চাঁদ মিঞার একতলা পাকা বাড়ি। আর বাড়ির ঠিক বিপরীত পাশে রয়েছে ব্রিটিশ আমলের বিশাল এক কড়াই গাছ। ওই গাছের কোটরে কোটরে ঘর হাজার তিনেক লাল ঠোঁটের পাখির। বাড়ির ছাদে লাঠি হাতে বসে চোরাশিকারদের হাত থেকে টিয়াদের সন্তানের মতো পাহারা দেন। গভীর রাত পর্যন্ত ছাদে বসেই পাহারা দেন। চোরা শিকারিদের পাখি ধরার ফাঁদ ভাঙতে ক্ষেতেও হানা দেন। এক দুবছর নয়। তিন দশক এভাবেই টিয়াদের পাহারাদার হয়ে বেঁচে আছেন সেলিম মিঞা।

Panchayat Election : ‘ভোটে আয় আয়….. এখন খোঁজ নাই’, নেতাদের আচরণে ক্ষুব্ধ আহতদের পরিবার

ব্রিটিশ আমলে এই গ্রামে ছিল বিশাল নীলকুঠি। আর সেখান থেকেই গ্রামের নাম হয়েছে কুঠিবাড়ি। গ্রামের আনাচে কানাচে এখনও ব্রিটিশদের বসতির ভগ্নাববেশ রয়েছে। সেই ব্রিটিশ আমল থেকেই রাস্তার গা ঘেঁষে শাখা প্রশাখা মেলে দাঁড়িয়ে রয়েছে বিশালাকার কড়াই গাছ। চাঁদ মিঞার দাবি, ছোট থেকেই টিয়াদের কিচির মিচির কলতানে ঘুম ভাঙত। সকাল হলেই দল বেঁধে উড়ে যেত বাচ্চাদের কোটরে রেখে। ছোট থেকেই সবুজ রঙের লাল ঠোঁটের পাখিদের ভালোবাসায় আটকা পড়েন চাঁদ মিঞা। রোজ দুবেলা পাখিদের উড়ে যাওয়া আর ঘরে ফেরার দৃশ্য চাঁদ মিঞাকে কাছে টেনে নিয়েছিল।

Paschim Medinipur News : পাখিদের খাবার জোগাতে বট, অশ্বত্থের চারা বিলি করেন সুভাষ

পেশায় দর্জি চাঁদ মিঞা কাঁচি, সুচ সুতো হাতেই বার্ধক্য পা দিয়ে সংসারের হাল ছেড়ে দিয়েছেন ছেলেদের হাতে। প্রথম প্রথম রাত জেগে পাখিদের পাহারা দেওয়া মেনে নিতে পারেনি পরিবারের লোক। গ্রামের মানুষও পাখি পাগল বলে টিপ্পনি কাটত। কিন্তু কারও কথায় কান দেয়নি চাঁদ মিঞা। ছেলে সাদ্দাম মিঞা পেশায় পরিযায়ী শ্রমিক। রাজমিস্ত্রির কাছে বছরের বেশিরভাগ ভিন রাজ্যে কাটে। সাদ্দাম মিঞা বলেন, বাবার পাখির নেশাকে আমরা পাগলামি বলেই ভাবতাম। পরে বুঝলাম চোরা শিকারিদের হাত থেকে টিয়াদের বাঁচিয়ে রেখে এই গ্রামের মুখ উজ্জ্বল রেখেছেন বাবা। সবাই যখন বাবার প্রশংসা করে তখন খুব গর্ব হয়।

Chandrayaan 3 Live Update: চন্দ্রযান ৩-এ রয়েছে ছেলের মেধা-পরিশ্রম, ঘুম উড়েছে ISRO-র বাঙালি গবেষক পরিবারের

কুঠিবাড়ির কড়াই গাছে হাজার হাজার টিয়ার বাসা দেখতে এখন দূর দূরান্ত থেকে লোক আসে। গাছের নীচে পথচারীরা দু দণ্ড বসে পাখিদের কলতান শোনে আর পাখিদের অতন্দ্র প্রহরী হয়ে হাত পাঁচেক লম্বা বাঁশের লাঠি নিয়ে ছাদে বসে থাকেন চাঁদ মিঞা। সকাল বিকাল দু’বেলা ক্ষেতে হানা দিয়ে চোরা শিকারীদের ফাঁদ ভেঙে দিয়ে আসেন।

Hilsa Fish : ইলিশের ঢল, কিন্তু কতটা সুবাসিত বং হৃদয়?
বয়স বাড়ছে। এরপর আর হয়ত তিনি পাখিদের পাহারা দিতে পড়বেন না। ছেলেরা অধিকাংশ সময়ে ভিনরাজ্যেই থাকে । কার হাতে এই দায়িত্ব তুলে দেবেন? এই চিন্তায় কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে ৭৪ বছরের সেলিম মিঞা ওরফে চাঁদ মিঞাকে।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *