বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের পর্যবেক্ষণ, ‘এটা পরিকল্পিত দুর্নীতি। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের তৎকালীন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য এই দুর্নীতি করেছেন।’ উল্লেখ্য, পলাশিপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য এক সময় রাজ্য প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি ছিলেন। তাঁর আমলে হাজার হাজার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। দুর্নীতির অভিযোগ মানিক এখন জেলবন্দি। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এদিন ফের একবার আদালতে মানিকের নাম শোনা যায় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের মুখে।
মঙ্গলবার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত একটি মামলা দায়ের হল কলকাতা হাইকোর্টে। সুকান্ত প্রামাণিক নামে এক জনৈক ব্যক্তি আদালতে মামলা দায়ের করেন। সেই মামলাটি বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে ওঠে। সুকান্তর হয়ে সওয়াল করেন আইনজীবী দিব্যেন্দু চট্টোপাধ্যায়। বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, নিয়োগ দুর্নীতির ছকের পিছনে যুক্ত মানিক ভট্টাচার্য। অতীতে আদালতের নির্দেশে তাঁকে পর্ষদ সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। পরবর্তীকালে ইডির হাতে গ্রেফতার হয়ে এখন প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে বন্দি মানিক।
নিয়োগ দুর্নীতিতে মানিতে স্ত্রী ও পুত্রও জেলবন্দি। অন্য একটি মামলায় জেলবন্দি বিধায়কের হলফনামা চেয়েছিল আদালত। আজ আদালতে হলফনাম জমা দিতে আসেন মানিকের মেয়ে স্বাতী ভট্টাচার্য। কিন্তু বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় তাঁর থেকে হলফনামা জমা নেননি। প্রেসিডেন্সি সংশোধনার কর্তৃপক্ষকে আদালতের নির্দেশ, মানিক যাতে জেলে বসে হলফনামা দিতে পারে, সেই ব্যবস্থা যেন করা হয়।
অন্যদিকে মঙ্গল অন্য একটি মামলায় শিক্ষা দফতরকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে কলকাতা হাইকোর্ট। ২০১৬ সালে আদালতের রায় না মানার জন্য এই নির্দেশ দেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় ২০১১ সালে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ মামলায় এই নির্দেশ দেওয়া হয় এদিন। একই সঙ্গে পূর্ববর্তী নির্দেশ বহাল রেখে শিক্ষা দফতর কী পদক্ষেপ করল তা ১০ দিনের মধ্যে আদালতকে রিপোর্ট আকারে জানানোর নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। একই সঙ্গে শিক্ষা দফতরের প্রধান সচিবকে ভর্ৎসনা করে আদালতের মন্তব্য, ‘স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে না পারলে দায়িত্বে থাকার অধিকার নেই।’