পঞ্চায়েত ভোটের ফলাফল পর্যালোচনা করে বাংলার বেশ কয়েকজন বিজেপি সাংসদের ভূমিকা নিয়ে ওই বৈঠকে প্রশ্ন তুলেছেন আরএসএস নেতৃত্ব। আগামী ১৮ এবং ১৯ অগস্ট কলকাতায় সঙ্ঘের বিশেষ বৈঠক বসছে। সেখানে প্রদীপ জোশী, সুনীল আম্বেকরের মতো আরএসএসের শীর্ষ নেতারা হাজির থাকবেন। গেরুয়া শিবিরের একাংশের দাবি, নিজেদের সাংগঠনিক শক্তির পর্যালোচনা করার পাশাপাশি বাংলার বিজেপি সাংসদদেরও চূড়ান্ত মুল্যায়ন হবে সেখানে। লোকসভা ভোটে প্রার্থী বাছাইয়ের সময় সঙ্ঘের সেই রিপোর্ট কার্ডকে যে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব যথেষ্ট গুরুত্ব দেবে তাতে কোনও সন্দেহ নেই।
শুধু নিজের সংসদীয় কেন্দ্রে জনসংযোগের নিরিখেই নয়, সংসদে কোন সাংসদ কতটা সক্রিয় সেটাও বিবেচনায় রাখছে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। সংসদে ‘পারফরম্যান্স’-এর নিরিখে এ রাজ্যের বিজেপি সাংসদের মধ্যে সব থেকে ‘সেফ’ জায়গায় আছেন বালুরঘাটের সাংসদ তথা রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। সম্প্রতি তিনি সেরা সাংসদের শিরোপাও পেয়েছেন।
কিন্তু পঞ্চায়েত ভোটের ফলাফলের নিরিখে সুকান্তর সংসদীয় এলাকায় ভালো ফল করতে পারেনি বিজেপি। সংসদে এবং নিজের লোকসভা কেন্দ্রে ছোটাছুটির দিক থেকে দিলীপ ঘোষও বিজেপিতে সুনাম কুড়িয়েছেন। কিন্তু সুকান্তর মতো তিনিও পঞ্চায়েত ভোটে নিজের কেন্দ্রে দলকে সাফল্যের মুখ দেখাতে পারেননি। দার্জিলিং-এর সাংসদ রাজু বিস্তাও যথেষ্ট সক্রিয় নিজের লোকসভা কেন্দ্রে। বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বও তাঁর কাজে খুশি বলে জানা গিয়েছে। রাজুকে দলের সর্বভারতীয় মুখপাত্রের পদ দেওয়া হয়েছে।
তবে উত্তরবঙ্গ এবং জঙ্গলমহলের কয়েকজন সাংসদের উপর খাঁড়া ঝুলছে বলে বিজেপি সূত্রে খবর। সোমবার দিল্লির বৈঠকে আরএসএস নেতৃত্ব সুকান্ত মজুমদার, শুভেন্দু অধিকারীদের কাছ থেকে জানতে চেয়েছেন, জঙ্গলমহল এবং উত্তরবঙ্গে বিজেপির এতজন সাংসদ থাকা সত্ত্বেও পঞ্চায়েত ভোটে আশানুরূপ ফল হলো না কেন? তার প্রেক্ষিতেই জঙ্গলমহল এবং উত্তরবঙ্গের বেশ কয়েকজন বিজেপি সাংসদের ভূমিকা নিয়ে কাটাছেঁড়াও হয়েছে ওই বৈঠক।
রাজ্য বিজেপির এক শীর্ষ নেতার কথায়, ‘সাধারণত জেতা আসনে আমরা প্রার্থী বদল করি না। কিন্তু এ বছর সেই রীতি ভাঙতে চলেছে। দেশের প্রতিটি লোকসভা কেন্দ্র নিয়ে দলে আলোচনা চলছে। যেখানেই জয় নিয়ে সংশয় আছে, সেখানে চোখ-কান বুজে প্রার্থী বদল করা হবে। এ রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটে ব্যাপক সন্ত্রাস হয়েছে। তাই পঞ্চায়েত ভোটের ফলাফলের নিরিখে সাংসদদের পারফরম্যান্স বিচার না-ও করা হতে পারে। তবে বেশ কয়েকজন সাংসদ যে গায়ে হাওয়া লাগিয়ে ঘুরছেন, সেটা তো খালি চোখেই দেখা যাচ্ছে।’