পর্ষদের আপার ডিভিশন ক্লার্ককে দিয়ে হলফনামা জমা দেওয়ার কারণে মধুসূদনের উপর চরম ক্ষুব্ধ হয় আদালত। শিক্ষকের স্থানান্তর সংক্রান্ত একটি আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টের পূর্ববর্তী নির্দেশ ছিল, পূর্ব বর্ধমান জেলা শিক্ষা পর্ষদের চেয়ারম্যানকে আদালতে হলফনামা জমা দিতে হবে। কিন্তু চেয়ারম্যানের পরিবর্তে পর্ষদের একজন আপার ডিভিশন ক্লার্ক এই হলফনামা জমা দেওয়ায় চরম ক্ষুব্ধ হয় আদালত। সেই কারণে পর্ষদ চেয়ারম্যানকে ছুটিতে পাঠানোর নির্দেশ দেন ক্ষুব্ধ বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।
এদিন মধুসূদন বাবু আদালতে জানান তিনি করোনা ও ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ছিলেন। শারীরিক অসুস্থতার কারণেই তিনি এই কাজ করেছেন বলে আদালতকে জানান। বিচারপতির কাছে ক্ষমাপ্রার্থনাও করেন তৃণমূল বিধায়ক। মধুসূদনের বক্তব্য শুনে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘অসুস্থ হলে পদত্যাগ করুন। অন্য লোক কাজ করবেন। আমি মনে করি আপনি শারীরিকভাবে এই পদে কাজ করতে অপারগ।’ জেলা পর্ষদের চেয়ারম্যানকে ছুটিতে পাঠানোর নির্দেশের পাশাপাশি শিক্ষাসচিবকে আদালতের নির্দেশ, অবিলম্বে এই চেয়ারম্যানকে সরানোর বিষয় উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
মঙ্গলবার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত নয়া মামলায় অবিলম্বে ইডি ও সিবিআইকে যুক্ত করার নির্দেশ দেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। এক ঘণ্টার মধ্যে দুই কেন্দ্রীয় সংস্থার আধিকারিককে আদালতে হাজির হওয়ারও নির্দেশ দেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি পরিকল্পতি অপরাধা। প্রাক্তন পর্ষদ সচিব মানিক ভট্টাচার্য পরিকল্পনা করে এই অপরাধ করেছেন।’ আদালতের নির্দেশে মঙ্গলবার রাতেই প্রেডিডেন্সি সংশোধনাগারে গিয়ে মানিককে জেরা করে সিবিআই আধিকারিকরারা।
বিভিন্ন সময়ে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার বিরুদ্ধে তদন্তে গড়িমসির অভিযোগ উঠেছে। সেই নিয়েও তদন্তকারী সংস্থাকে কার্যত হুঁশিয়ারি দেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘যথাযথভাবে তদন্ত না হলে আমি সহ্য করব না। প্রয়োজন হলে গোটা বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীকে জানাব।’ বিচারপতির কঠোর মনোভাব দেখেই রাতে জেলে গিয়ে মানিককে জেরা করে সিবিআই। বুধবারও মানিককে প্রেসিডেন্সি জেলে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে জানা গিয়েছে সিবিআই সূত্রে।