চিঠিতে শান্তা ছেত্রী লিখেছেন, ‘আমার বিনীত অনুরোধ, পার্বত্য এলাকার বিজ্ঞানসম্মতভাবে অর্থনৈতিক উন্নতির জন্য একটি কমিটি গঠন করা দরকার। আর সেই কমিটির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী পার্বত্য এলাকার জন্য় নির্দিষ্টভাবে তৈরি করা উচিত অর্থনৈতিক বাজেট।’
এই বিষয়ে আমলা, রাজনীতিবিদ, শিক্ষাবিদ এবং ছাত্র-সহ সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রের সদস্যদের নিয়ে তৈরি সংগঠন ইন্টিগ্রেটেড মাউন্টেন ইনিশিয়েটিভ বা IMI পাহাড়ের জন্য একটি পৃথক মন্ত্রক বা অন্তত স্বতন্ত্র নীতির প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়ে আসছে। সংগঠনের সদস্য ফ্যান্ট্রি মেইন জাসওয়াল সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা মনে করি (সরকারের) নীতিগুলি পাহাড়ি এলাকার বাস্তবতাকে বিবেচনায় মধ্যে নেয় না। প্রকল্পগুলি দিল্লিতে তৈরি করা হয় এবং আর সেগুলির মধ্যে বেশিরভাগই সমভূমির জন্য উপযুক্ত।’
পালটা দুর্নীতির অভিযোগ তুলছে বিজেপি
এদিকে শান্তা ছেত্রীর এই চিঠি প্রসঙ্গে দার্জিলিং পাহাড় বিজেপির সভাপতি কল্যাাণ দেওয়ান বলেন, ‘যদি পাহাড়ের জন্য আলাদা ফান্ড আসে, তাহলে সেটা নিয়েও দুর্নীতি হবে। এর আগে রাজ্য সরকারকে কেন্দ্রীয় সরকার যে টাকা দিয়েছে, তা নিয়ে অনেক দুর্নীতি হয়েছে। আগে এই দুর্নীতি বন্ধ করা উচিত, তারপরেই কেন্দ্রের কাছে আলাদা বাজেট চাওয়া দরকার।
প্রসঙ্গত, উন্নয়নের দাবিতে বারেবারেই আন্দোলন হয়েছে পাহাড়ে। উঠেছে পৃথক রাজ্য গোর্খাল্যান্ডের দাবি। যে দাবিতে বারেবারেই উত্তাল হয়েছে পাহাড়। চলেছে বনধ আন্দোলন। একটানা দীর্ঘদিন বনধ চলেছে পাহাড়ে, ঝরেছে রক্ত, খুন হয়ে হয়েছে পুলিশ কর্মীকেও। এদিকে আবার জিটিএ-র মাধ্যমে পাহাড়ে উন্নয়নের প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে রাজ্য সরকার। বর্তমানে জিটিএ-র চিফ এক্সিকিউটিভ পদে রয়েছে ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার প্রধান অনীত থাপা। সম্প্রতি দীর্ঘ দুই দশকেরও বেশি সময় পরে পঞ্চায়েত নির্বাচন হয়েছে পাহাড়ে। সেখানেও বিপুল জয় পেয়েছে বিজিপিএম। পাহাড়ে তৃণমূলের ‘বন্ধু দল’ হিসেই কাজ করছেন অনীত থাপারা। আর এই সবেরই মাঝে পৃথক বাজেটের দাবিতে চিঠি দিলেন শান্তা ছেত্রী। এক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে, দার্জিলিং লোকসভা আসনটি বর্তমানে বিজেপির দখলে। সেক্ষেত্রে আগামী লোকসভা ভোটের আগে এই দাবিকে নতুন করে উষ্কে দেওয়ার মধ্যে তৃণমূলের বিশেষ কোনও রাজনৈতিক কৌশল রয়েছে কি না, এখন সেই দিকেই নজর ওয়াকিবহালমহলের।