সেই সময় বহু মানুষ উচ্ছেদের সুবাদে প্রাপ্য ক্ষতিপূরণ এবং বসবাসের জায়গা পেয়েছেন। তাঁদের অনেকেই ক্ষতিপূরণ পেলেও পুনর্বাসনের উপযুক্ত জায়গা পাননি বলে অভিযোগ। হলদিয়া বন্দরের জায়গাতেই তাঁদের বসবাস। হলদিয়ার বিষ্ণুরামচক, সাওতানচক, পাতিখালি, ব্রজনাথচক, চিরঞ্জীবপুর, পরমানন্দচক সহ বেশ কিছু জায়গায় উদ্বাস্তু পরিবারের লোকজন বাস করেন।
শিল্পাঞ্চলে কাজের সূত্রে বহু মানুষ বেশ কিছু রাস্তা এবং খালপাড়ে নিজেদের থাকার প্রয়োজনে অস্থায়ী ঘর তৈরি করে সংসার পেতে বসেছেন। দীর্ঘ কয়েক বছর চেষ্টা করেও তাঁদের তুলতে ব্যর্থ হয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। হাইকোর্টের অনুমতি নিয়ে পুলিশের সহায়তায় ফের উচ্ছেদ অভিযান করতে তৎপর হন বন্দরের সংশ্লিষ্ট কর্তাব্যক্তিরা।
১০০০ পরিবারকে চিহ্নিত করা হয়, যারা দীর্ঘদিন হলদিয়া বন্দরের জায়গায় বসে আছে। পুলিশের সহযোগিতা নিয়ে এদিন অভিযান করা হয়। তবে বন্দরের এমন পদক্ষেপ কোনোভাবেই মানতে নারাজ হলদিয়া উদ্বাস্তু ক্ষতিগ্রস্ত বস্তি উন্নয়ন সমিতির সদস্যরা।
উচ্ছেদ হওয়া এক ব্যক্তি বলেন, ‘এভাবে পুনর্বাসন না দিয়ে বন্দর কর্তৃপক্ষ আমাদের সঙ্গে ঠিক কাজ করছেন না। আমরা আজ থেকে না, বহু বছর ধরে এখানে বসবাস করছি। এবার আমরা কোথায় যাব কেউ কি ভেবে দেখেছেন! আমরা এই নিয়ে আন্দোলন গড়ে তুলব।’ এদিন প্রাথমিক পর্যায়ের উচ্ছেদ অভিযান হয়। পরবর্তী সময়ে বাকি এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান করা হবে বলে বন্দর কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
হলদিয়া বন্দরের এক আধিকারিক বলেন, ‘এই বিষয়ে আমাদের কাছে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশনামা রয়েছে। অনেকদিন যাবত মামলা চলার পর হাইকোর্ট এই রায় দিয়েছেন। ওই পরিবারগুলিকে আজকে না, অনেকদিন আগে থেকে সরে যাওয়ার জন্য বলা হচ্ছিল।’ যদিও থাকার জায়গা ও ব্যবসা করে সংসার চালানোর পথ বন্ধ করে দেওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন বসবাসকারী মানুষজন।
বন্দরের অডিট রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রায় ১০০ একর জমি বেদখল হয়ে রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে। বন্দর কর্তৃপক্ষ, তাঁদের জমি থেকে বস্তি উচ্ছেদের জন্য আইনি পদক্ষেপ শুরু করতেই সংঘাত বেঁধেছিল উদ্বাস্তুদের সঙ্গে। আর আজকের এই উচ্ছের আগুনে ঘি ঢালল বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।