গত শুক্রবার রাতে মদ্যপ অবস্থায় এসে নিজের স্ত্রীকে মারধর করছিলেন পেশায় রাজমিস্ত্রী প্রভাস মাহাতো, অভিযোগ এমনই। প্রাণ বাঁচাতে স্ত্রী বাড়ি থেকে পালিয়ে গেলে প্রভাসের রাগ গিয়ে পড়ে তাঁর সন্তানদের উপর। নিজের তিন মেয়ে ও এক শিশু পুত্র কে বেধড়ক মারধর করে সে।
পরে স্থানীয়রা ওই শিশুদের উদ্ধার করে পুরুলিয়া মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে এলে মধুমিতা মাহাতো (৭) সেদিনই মারা যায়। বাকিদের উন্নত চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় ঝাড়খণ্ডের রাঁচিতে। জানা যায়, প্রতিটি শিশু মাথায় আঘাত পায়।
গ্রামটি পুরুলিয়া জেলায় হলেও ঝাড়খণ্ডের রাঁচি সংলগ্ন। তাই তাদের বাচ্চাদের RIMS-এ নিয়ে যাওয়া হয় বলে জানা যায়। সেখানে চিকিৎসা চলাকালীন অবস্থায় শনিবার রাতে মারা যায় জয়দেব মাহাতো (৩) এবং সোমবার রাতে মারা যায় অর্পিতা মাহাতো (৮)। হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে এখনও পাঞ্জা লড়ছে পাঁচ বছরের আশা মাহাতো।
ঘটনার দিন থেকেই ফেরার ছিল অভিযুক্ত বাবা প্রভাস মাহাতো। তাঁকে হন্যে হয়ে খুঁজছিল পুলিশ। নির্মম এই ঘটনায় জেলা জুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এই বিষয়ে পুরুলিয়া জেলা পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘অভিযুক্ত বাবা তাঁর চার সন্তান কে মারধর করেছে। তার মধ্যে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁকে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।’
নারকীয় এই ঘটনায় জড়িত অভিযুক্তের কঠিন শাস্তি দাবি করেছেন অনেকেই। এই ঘটনার কথা শোনার পর পুরুলিয়া শহরের এক বিশিষ্ট অধ্যাপক বলেছেন, ‘এই ঘটনায় আমরা প্রত্যেকে শিহরিত। সমাজ ধীরে ধীরে কোনদিকে মোড় নিচ্ছে, সেটার এক জ্বলন্ত উদাহরণ। নিজের সন্তানদের অইভাবে কেউ মারতে পারে বলে বিশ্বাসই হচ্ছে না। কঠোর শাস্তি চাই।’
শহরের এক শিশু বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘শিশুদের উপরে হাত তোলা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। অন্য কোনও শিশুর উপরেও কখনও হাত তোলা যায় না। এতে শিশু মনে বিরূপ প্রভাব ফেলে। সেখানে ওই ব্যক্তি নিজের সন্তানদের মেরে ফেললেন, ভাবতেই পারছি না।’