কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, ৯০৭ জন একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষকের নামের তালিকা প্রকাশ করল, যাদের বিরুদ্ধে OMR-এ কারচুপির অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ, বেআইনিভাবে ওই প্রার্থীদের নম্বর বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ১ থেকে প্রায় ৫০ নম্বর পর্যন্ত নম্বর বাড়ানো হয়েছে। এই দুর্নীতি সামনে আসায় সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ৯০৭ জনের তালিকা প্রকাশ এসএসসি-র। তাতে থাকা ৭০০-এর বেশি চাকরিপ্রার্থী নিয়োগ পেয়েছেন।
উল্লেখ্য, ৯০৭ জন শিক্ষকের তালিকার মধ্যে ৩০০ নম্বরে রয়েছে তৃণমূল নেত্রী কবিতা বর্মনের নাম। তিনি বর্তমানে বালিজল হাইস্কুলের শিক্ষিকা। স্কুল সার্ভিস কমিশন সূত্রে তথ্য অনুযায়ী, ৫৫ এর মধ্যে ৫৩ নম্বর পেয়েছেন তিনি।
জানা গিয়েছে ২০১৬ সালে পরীক্ষা দিয়েছিলেন বিদায়ী জেলা সভাধিপতি কবিতা বর্মন৷ এরপর ২০১৮ সালে সেপ্টেম্বর থেকে বালিজোল হাই স্কুলে বাংলা বিভাগের শিক্ষিকা পদে যোগদান করেন তিনি। দুর্নীতির অভিযোগ উড়িয়ে উত্তর দিনাজপুর জেলা পরিষদের বিদায়ী সভাধিপতি ও তৃণমূল নেত্রী কবিতা বর্মনের দাবি, কোনও দুর্নীতি হয়নি। সংবাদ মাধ্যমের প্রশ্নের জবাবে কবিতা বর্মন বলেন, ‘এখানে আমার নাম কী করে এল জানি না। কমিশনই জানেন তারা কী কারণে ওই তালিকা বানিয়েছেন।’ তাঁর দাবি, এখানে কোনও দুর্নীতির ব্যাপার নেই। আমি পরীক্ষা দিয়ে সমস্ত নিয়ম মেনেই চাকরি পেয়েছি।’
শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ভুয়ো শিক্ষকদের তালিকা ফের প্রকাশ হতেই জেলায় জেলায় গুঞ্জন ছড়িয়েছে। কোথায় কোন স্কুলে কে বাদ পড়ল বা কার নাম তালিকায় উঠেছে তা নিয়ে জোর চর্চা চলছে। এরই মধ্যে চাঞ্চল্য উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জে। খোদ বিদায়ী জেলা সভাধিপতির নাম ভুয়ো শিক্ষকদের তালিকায়। ঘটনায় তোলপাড় জেলা। সাদা “OMR” শিট জমা দিয়ে শিক্ষকতার চাকরি করার অভিযোগ উঠল উত্তর দিনাজপুর জেলা পরিষদের তৃণমূলের বিদায়ী সভাধিপতির বিরুদ্ধে। স্কুল সার্ভিস কমিশনের ওয়েবসাইটে নাম প্রকাশিত হলে দেখা যায় তালিকায় ৩০০ নম্বরে নাম জ্বলজ্বল করছে বিদায়ী জেলা সভাধিপতি কবিতা বর্মনের।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে কবিতা বর্মন বলেন, ” ২০১৬ সালে পরীক্ষা দিয়ে ২০১৮ সালে চাকরি পেয়েছি। নিয়মনীতি মেনেই চাকরি হয়েছে।” কী কারণে এই তালিকায় তার নাম এল তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন তিনি। প্রয়োজনে আদালতের দ্বারস্থ হবেন বলেই জানিয়েছেন তিনি। কবিতা বর্মনের স্বামী প্রফুল্ল বর্মন জানিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে মর্মাহত তিনি। ছোট থেকেই ভালো ছাত্রী ছিলেন কবিতা। নিয়ম নীতি মেনেই তার চাকরি হয়েছে। রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির জন্য ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করেছেন তিনি। প্রয়োজনে আদালতের দারস্থ হবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
উল্লেখ্য, এর আগে হাইকোর্টের নির্দেশে ওয়েবসাইটে ভুয়ো শিক্ষকদের নামের তালিকা প্রকাশ হতেই জেলায় জেলায় ভুয়ো শিক্ষক চিহ্নিত হয়েছে। আবারও আদালতের নির্দেশে ভুয়ো শিক্ষকদের তালিকা প্রকাশ হতেই শিক্ষার মান নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।