জানা গিয়েছে, ভোট সন্ত্রাস আটকাতেই কলকাতার পঞ্চসায়রে ই এম বাইপাস সংলগ্ন একটি বাড়িতে রাখা হয়েছিল বিরোধী দলগুলির কয়েকজন জয়ী প্রার্থীদের। বৃহস্পতিবার রাতে তিন-চার জন দুষ্কৃতি এসে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে অপহরণ করে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় পঞ্চসায়ের থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন প্রাক্তন মন্ত্রী ও প্রবীণ সিপিএম নেতা কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়।
কলকাতার এক গেস্ট হাউস থেকে বিজেপির তিন জয়ী প্রার্থী ও এক বাম সমর্থিত নির্দল প্রার্থীকে অপহরণের অভিযোগ উঠেছে। দলীয় সূত্রে খবর, পঞ্চায়েতে দলবদল ও ঘোড়া কেনাবেচা ঠেকাতে ওই গেস্ট হাউস ভাড়া করা হয়। সেখানে জানানো হয়েছিল সামনে বিয়ে আছে। তাই কয়েকজন আত্মীয় সেখানে থাকবেন। সেখান থেকেই তিন বিজেপির জয়ী প্রার্থী ও এক বাম সমর্থিত নির্দল প্রার্থীকে জোর করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ।
ওই তিন প্রার্থী দক্ষিণ ২৪ পরগণার মথুরাপুর ব্লকের কৃষ্ণচন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের জয়ী প্রার্থী। পঞ্চশায়ের থানা এলাকার পিয়ারলেস হসপিটালের কাছের গেস্ট হাউসে মাঝরাতে একাধিক ভাড়া গাড়িতে করে বেশ কয়েকজন আসেন। তিন চার জন ভেতরে ঢুকে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে জয়ী প্রার্থীদের তুলে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ। বাকি কয়েকজন লুকিয়ে থাকায় বেঁচে যান। ঘটনার কথা জানতে পেরেই সিপিআইএমের বর্ষীয়ান নেতা কান্তি গঙ্গোপাধ্যায় পঞ্চশ্বর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
প্রাক্তন মন্ত্রী ও সিপিএম নেতা কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ‘অপহৃতদের মথুরাপুর এক নম্বর ব্লকে কর্ম তীর্থের গেস্ট হাউসে অপহরণ করে রাখা হয়েছে। পুলিশের ভূমিকা নক্কারজনক। সিসিটিভি ফুটেজ দেওয়া সত্ত্বেও কোনও পদক্ষেপ নেয়নি প্রথমে। এমনকী খুঁজতেও যায়নি। জিডি নম্বর দেয়নি। সংবাদ মাধ্যমে খবর সম্প্রচারের পরই তৎপর হয়েছে।’ শুক্রবার এই জয়ী প্রার্থীরা কলকাতা হাইকোর্টে নিজেদের নিরাপত্তার জন্য আবেদন করতে যেত তার আগেই এই অপহরণের বাড়াচ্ছে রহস্য। অপহৃত প্রার্থীদের উদ্ধারে কোর্টের হস্তক্ষেপ চাইবেন বলে জানিয়েছেন প্রবীণ সিপিআইএম নেতা।
দক্ষিণ ২৪ পরগণার মথুরাপুর ব্লকের কৃষ্ণচন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের মোট আসন ১৫ টি। তৃণমূল কংগ্রেস জয় পেয়েছে ৪টিতে। সিপিআইএম পেয়েছে ৩টি। বিজেপি ৬টি ও নির্দল পেয়েছে ২ টি আসন। তৃণমূল কংগ্রেস বোর্ড গঠনের জন্য জোর করে বিরোধীদের চাপ দিচ্ছিলেন বলে অভিযোগ। সেই চাপের ভয়ে মাথা নত না করে মঙ্গলবার রাতে পঞ্চশ্বর থানা এলাকার গেস্ট হাউসে আশ্রয় নেন কৃষ্ণচন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরোধী জয়ী প্রার্থীরা। সেখান থেকেই সশস্ত্র অবস্থায় এসে তাদেরকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ।