তৃণমূল প্রার্থী সাইনা সুলতানা খানাকুলের মাইনান এলাকার বাসিন্দা। ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় তৃণমূলকে আক্রমণ করতে আসরে নেমে পড়েছে বিরোধীরা। অভিযোগ, ফাঁকা ওএমআর শিট জমা দিয়ে শিক্ষকতার চাকরি করার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের জেলা পরিষদের জয়ী প্রার্থী সাইনা সুলতানার বিরুদ্ধে।স্কুল সার্ভিস কমিশনের ওয়েবসাইটে বুধবার আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী ৯০৭ জন শিক্ষকের নামের তালিকা প্রকাশিত হয়। তাতে দেখা যায় ওই তালিকায় ৬০৯ নম্বরে নাম রয়েছে হুগলি জেলা পরিষদের তৃনমূলের এই জয়ী প্রার্থীর নাম।
জানা গিয়েছে, ২০১৬ সালে পরীক্ষা দিয়ে ছিলেন তৃণমূল নেত্রী সাইনা সুলতানা। এর আগে বাঁকুড়ার রাঙা মাটি উদবাস্তু কলোনিতে চাকুরি করতেন তিনি। তারপর রাজহাটি বন্দর হাইস্কুলে শিক্ষিকার চাকরিতে যোগদান করেন। বুধবার ৯০৭ জনের যে তালিকা প্রকাশ করা হতেই তাতে তাঁর নাম পাওয়া যায়। এই বিষয়ে প্রশ্ন উঠতেই সরব তৃণমূল নেত্রী।
হুগলি জেলা পরিষদের জয়ী তৃণমূল প্রার্থী সাইনা সুলতানা বলেন, ‘বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।’ এছাড়াও তাঁর দাবি, ‘শুধু উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষক নিয়োগই না, এই পরীক্ষা ছাড়াও ২০১৬ সালে আপার প্রাইমারিতেও পাশ করি। শুধু এরাজ্যের না, কেন্দ্রীয় সরকারের বহু পরীক্ষাতেও আমি পাশ করেছি। কোনও অনিয়ম থাকলে তাহলে পুরোটাই তদন্ত করে দেখা হোক।’ শাসক দলের প্রার্থী বলে অভিযোগের আঙুল বলে দাবি সুলতানার।
অপরদিকে, রাজহাটি বন্দর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক নবেন্দু সামন্ত বলেন, ‘উনি এই স্কুলে চাকরি করতেন। এটা তো শিক্ষা দফতর ও কোর্টের বিষয়।’ সবমিলিয়ে ভুয়ো তালিকায় নাম থাকায় তীব্র অস্বস্তিতে জেলা তৃণমূল শিবির। উল্লেখ্য, ২০১১ সাল থেকেই রাজনীতির ময়দানে এলাকায় পরিচিত মুখ সাহিন সুলতানা। এর আগে ২০১৩ সালে খানাকুল থেকে দাঁড়িয়ে জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ হিসেবে নির্বাচিত হন। ২০১৮ সালে জাঙ্গিপাড়া থেকে ৪৮ নম্বর আসনে পঞ্চায়েত ভোটে দাঁড়িয়ে জেতেন। ২০২৩ সালেও তিনি হুগলি জেলা পরিষদের ৪৫ নম্বর জেলা পরিষদ আসনে দাঁড়িয়ে জয়ী হয়েছেন।
উল্লেখ্য, একাদশ-দ্বাদশের ২০১৬ সালে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় একাধিক অভিযোগ সামনে আসে। তার মধ্যে অভিযোগ ওঠে সাদা খাতা জমা দিয়েও চাকরি পেয়েছেন অনেকে, কোথাও আবার ওএমআর-এ কারচুপি করে বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে নম্বর। ১ থেকে ৫০ নম্বর অবধি বাড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এর ভিত্তিতেই অভিযুক্ত শিক্ষকদের নাম প্রকাশের নির্দেশ দেয় আদালত। নির্দেশের পরই ৯০৭ জন উত্তীর্ণ ও নিযুক্ত প্রার্থীর নাম প্রকাশ করে স্কুল সার্ভিস কমিশন। তাতে হুগলির তৃণমূল প্রার্থী সাহিন সুলতানার নাম নজরে আসে। এছাড়া বৃহস্পতিবারই উত্তর দিনাজপুরের তৃণমূল নেত্রী ও জেলা পরিষদের বিদায়ী সভাধিপতি কবিতা বর্মনের নামও এই লিস্টে রয়েছে।