কানাঘুষো জল্পনা চলছিল দীর্ঘদিন। সেই জল্পনাকে সত্যি করে সোমবার সিউড়ি পুরসভার চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করলেন প্রণব কর। পাশাপাশি ছাড়লেন ১৫ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদও। যা নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা। সিউড়ি পুরসভা বর্তমানে তৃনমূলের দখলে আছে। সোমবার সিউড়ি সদর মহকুমাশাসক অনিন্দ্য সরকারের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন প্রণব কর।
পদত্যাগপত্রে প্রণব কর লেখেন, ‘আমি ডাইবেটিস রোগে আক্রান্ত চিকিৎসক ছয়মাস বেড রেস্টের পরামর্শ দিয়েছেন। সিউড়ি পুরসভা চরম অর্থনৈতিক সঙ্কটে ভুগছে। সিউড়ী বিধায়ক তহবিল থেকে সাহায্য করা হয় না। বারবার বলা সত্ত্বেও সিউড়ির বিধায়ক অসহযোগিতা করছেন। এই অবস্থায় আমার পক্ষে চেয়ারম্যানের পদে থেকে পুরসভা চালানো কষ্টকর হয়ে গিয়েছে।’
প্রণব কর আরও জানান, পারিবারিক সমস্যা এবং শারীরিক অসুস্থতার জন্য পদত্যাগ করলাম। কাউন্সিলর পদ থেকেও পদত্যাগ করেছি। পদত্যাগ করার বিষয়ে দল আমাকে কোনো নির্দেশ দেয় নি। অন্য কোনও দলে যাব না রাজনীতি ছেড়ে বাড়ীতে বসে যাবো সেটা পরের বিষয়। অনুব্রত মণ্ডল আমাকে চেয়ারম্যান পদে বসিয়েছিলেন। আমার বিরুদ্ধে কোনও দুর্নীতির অভিযোগ নেই আমি স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করলাম।
বিষয়টি নিয়ে বিজেপি জেলা সহসভাপতি দীপক দাস বলেন, ‘ উনি নির্বাচিত প্রতিনিধি ছিলেন না। ভয় দেখিয়ে পুলিশের সহায়তায় সিলেক্টেড হয়েছিলেন। পায়ের তলায় মাটি সরে যাচ্ছিল।’ উল্লেখ্য, পুরসভার কাজকর্ম ঠিকঠাক হচ্ছে না এবং চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানের সঙ্গে কাউন্সিলরদের বোঝাপড়ার অভিযোগ তুলে তৃণমূল জেলা নেতৃত্বকে চিঠি পাঠিয়েছিল সিউড়ি পুরসভার তেরোজন তৃণমূল কাউন্সিলর। গত ৩০মে বিকালে সিউড়ি তৃণমূল কার্যালয়ে সাংসদ শতাব্দী রায় এবং সিউড়ি বিধানসভাকেন্দ্রের তৃণমূল বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী বিক্ষুব্ধ কাউন্সিলরদের নিয়ে আলোচনা করে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছিল।
যদিও সেই আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন না সিউড়ি পুরসভার নয় নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায় এবং তেরোনং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কুন্দন দে। পঞ্চায়েত নির্বাচন মিটতে ফের মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে এই ইস্যু। স্বাভাবিকভাবেই প্রণব করের হঠাৎই এই পদত্যাগের পর নতুন কে হবেন? সিউড়ি পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান উজ্জল চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘কে চেয়ারম্যান হবে তার সিদ্ধান্ত দল নেবে আমাদের বিগত দিনে যা সমস্যা হয়েছিল তা বসে আলোচনার মাধ্যমে মিটে গিয়েছে।’