প্রদ্যুৎ দাস: অসাধু মৎস্য শিকারিদের দাপটে হারিয়ে যাচ্ছে জলপাইগুড়ি জেলার রুপোলি শস্য ঝিলা মাছ। জেলার অধিকাংশ নদীতে অবৈধ ভাবে চলছে ব্যাটারির মাধ্যমে ইলেকট্রিক শক দিয়ে মাছ শিকার। এই কারণেই একদিকে যেমন হারিয়ে যাচ্ছে ঝিলা মাছ, তেমনই এই মাছের পোনাও মারা যাচ্ছে। বেশি ক্ষতি হচ্ছে মাছটির বংশবিস্তারে। এর ফলে ক্ষতি হচ্ছে নদীর বাস্তুতন্ত্রেরও। এ নিয়ে উদ্বিগ্ন পরিবেশপ্রেমী থেকে সাধারণ মানুষও। তবে এই মাছশিকার আটকাতে কে পদক্ষেপ করবে? বন দফতর নাকি মৎস্য দফতর? এই প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে।
আরও পড়ুন: Bengal Weather Update: কলকাতা-সহ সারা রাজ্য কি এবার ভেসে যাবে শ্রাবণের বিপুল বর্ষায়? দহন কমবে?
জলপাইগুড়ি বনবিভাগের অন্তর্গত মোরাঘাট জঙ্গলের কখনও ভেতর দিয়ে কখনও বাইরে দিয়ে এঁকেবেঁকে বয়ে গিয়েছে নোনাই নদী, আংরাভাসা, ডুডুয়া, গরাতি। জেলার এই সমস্ত নদীতে এক সময় প্রচুর পরিমাণে মিলত নদীয়ালি এই ‘ঝিলা’ মাছ। স্বাদের জন্য এই মাছের চাহিদা বাজারে প্রবল।
কেমন দেখতে ঝিলা মাছ?
রুপোর মতো চকচকে, পাখনা ও লেজ সোনালি রঙের। অত্যন্ত সুস্বাদু এই মাছ বাজারে ৪৫০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়।
প্রচুর চাহিদা কিন্তু আগের মতো সেভাবে পাওয়া যায় না। তাই চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়ে ঝিলা মাছের জোগান দিতে গিয়ে শক দিয়ে মাছ মারার প্রবণতা বাড়ছে। বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত পরিবেশপ্রেমীরা। অতীতেও এই প্রবণতা দেখা দিয়েছিল এই নদীতে। বন দফতরের একাধিক অভিযানে সেই প্রবণতা অনেকটাই কমে। ফের একবার নোনাই নদীতে ইলেকট্রিক শক দিয়ে মাছ মারার প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। অবিলম্বে এই প্রবণতা বন্ধের লক্ষ্যে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে পরিবেশপ্রেমী সংস্থা থেকে শুরু করে স্থানীয়রা। আর এভাবে মাছ শিকারের কারণে নদীর বাস্তুতন্ত্রে আঘাত আসছে। শকের কারণে মূলত মারা যায় অপেক্ষাকৃত ছোট আকৃতির মাছগুলিই। যার ফলে মাছের বংশবৃদ্ধিতে সমস্যা হয়।
বন দফতরের সূত্রে জানানো হয়েছে, জঙ্গলের আওতাভুক্ত এলাকায় বন দফতরের তরফে রুটিনমাফিফ বিষয়টি দেখা হয়। এভাবে কেউ মাছ ধরতে দেখা গেলে তাঁর বা তাঁদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপও করা হয়। তবে জঙ্গলের বাইরের এলাকা বন দফতরের এক্তিয়ারে পড়ে না। সেখানকার নদীতে কেউ এভাবে মাছ ধরলে তা বন্ধ করা তাদের পক্ষে সম্ভব হয় না।
আরও পড়ুন: South 24 Parganas: গভীর সমুদ্রে উত্তাল ঢেউয়ে উল্টে গেল ট্রলার! কোথায় ১৭ জন মৎস্যজীবী?
বানারহাট ব্লকের গয়েরকাটা সাকোয়াঝোড়া ১ গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য গোপাল চক্রবর্তী জানিয়েছেন, এভাবে নদী থেকে ব্যাটারির সাহায্যে শক দিয়ে মাছ মারার প্রবণতা ঠিক নয়। প্রশাসনের নজরদারি ও সচেতনতামূলক প্রচারে অভাব রয়েছে। আমি বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলব।