জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: সচিন তেন্ডুলকরের (Sachin Tendulkar) পর ভারতীয় ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় ব্যাটিং সুপারস্টারের নাম বিরাট কোহলি (Virat Kohli)। বিরাট নিজেকে নিয়ে গিয়েছেন গগনচুম্বী উচ্চতায়। সর্বকালের অন্যতম সেরা ব্যাটার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন তিনি। জনপ্রিয়তার নিরিখে বিশ্বের প্রথমসারির অ্যাথলিটদের মধ্যে বাইশ গজের ‘কিং’। সোশ্যাল মিডিয়ায় ২৫২ মিলিয়ন মানুষ ফলো করেন কোহলিকে। স্টক গ্রো সম্প্রতি কোহলির মোট সম্পত্তির পরিমাণের রিপোর্ট নিয়ে এসেছে সামনে। যা দেখে বোঝা যাচ্ছে টাকার সিংহাসনেই অধিষ্ঠিত ‘রাজা’! তাঁর সম্পত্তির অঙ্ক মাথা ঘুরিয়ে দেওয়ার মতোই। কোহলির মোট সম্পত্তির পরিমাণ ১ হাজার ৫০ কোটি টাকা। কোনও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার এত টাকা উপার্জন করেন না। আর কোহলির যাবতীয় ব্যবসা-বাণিজ্য দেখেন একজন ব্য়ক্তিই। তিনি আর কেউ নন স্বয়ং বিরাটের বড় ভাই বিকাশ কোহলি (Vikas Kohli)
আরও পড়ুন: WATCH | Rinku Singh: ‘আমি খুবই আবেগপ্রবণ’! ভেঙে পড়লেন নাইট নক্ষত্র, সবের জন্য কলকাতাকেই কুর্নিশ
বেশ কয়েক বছর ধরেই বিরাটের পার্টনার বিকাশ। বিরাটের সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসা দ্য ওয়ানএইট ব্র্যান্ড। ওয়ানএইট পোশাক, সুগন্ধী ও জুতো বিক্রি করে থাকলেও, তাদের পরিচিতি রেস্তোরাঁ ও বারের জন্য। দিল্লি এনসিআর-এ ওয়ানএইট কমিউন রেস্তোরাঁকে টেক্কা দেওয়ার মতো আর একটি রেস্তোরাঁ নেই। এতটাই এক্সক্লুসিভ সেটা। সচিন তেন্ডুলকর থেকে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় হয়ে বীরেন্দ্র শেহওয়াগ, অজয় জাদেজার মতো ক্রিকেট নক্ষত্ররা হোটেল ব্য়বসায় পা রেখে দ্রুতই ফিরেছিলেন প্যাভিলিয়নে। তবে বিরাট শুরুতে হোঁচট খেলেও, পরে বলে বলে সেঞ্চুরি করেছেন। ২০১৭ সালে কোহলি প্রথম হোটেল ব্যবসায় পা রেখেছিলেন। নয়াদিল্লির আরকে পুরমে চালু করেছিলেন নুয়েভা। শুরুতে চার-ছক্কা হাঁকালেও পরে সেই রেস্তোঁরা মানুষের মন থেকে মুছে যায়। এখন কোহলির ওয়ানএইট কমিউনের চেইন রেস্তোরাঁ রমরমিয়ে চলছে দিল্লি, কলকাতা পুণে এবং মুম্বইতে।
বিকাশের হাত ধরে বিরাটের ওয়ানএইট ব্র্যান্ড সারা দেশ জুড়ে চুটিয়ে ব্যবসা করেছে। চলতি বছর ১১২ কোটি টাকার মুনাফা অর্জন করেছে ওয়ানএইট। এমনটাই রিপোর্ট একাধিক ওয়েবসাইটের। বিকাশ নিজেও ক্রিকেট অন্তপ্রাণ। দাদার মতোই ফিটনেস ফ্রিক। আরসিবি-র ক্রিকেটারদের সঙ্গে প্রায়ই পার্টি করেন বিকাশ। গুরুগ্রামের বাসিন্দার হরিয়ানায় রসেছে রাজপ্রাসাদ। তাঁর ইনস্টাগ্রামে চোখ রাখলে বোঝা যাবে যে, অত্যন্ত দামি ঘড়ি সংগ্রহ করার সখ।
কোহলি ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের ‘এ প্লাস’ ক্যাটেগরির ক্রিকেটার। রোহিত শর্মা, জসপ্রীত বুমরা ও রবীন্দ্র জাদেজার সঙ্গেই কোহলি বার্ষিক ৭ কোটি টাকা উপার্জন করেন বিসিসিআই থেকে। টেস্টপিছু কোহলি ম্যাচ-ফি পান ১৫ লক্ষ টাকা। পঞ্চাশ ওভারের ক্রিকেটে সেই অঙ্কটা ৬ লক্ষ টাকা ও দেশের জার্সিতে টি-২০ ম্যাচ খেলে তিনি পান ৩ লক্ষ টাকা। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের আইকন তিনি। আইপিএলের ১৪ ম্যাচের জন্য তাঁর আরসিবি-র সঙ্গে চুক্তি ১৫ কোটি টাকার। ব্ল্যু ট্রাইব, ইউনিভার্সাল স্পোর্টসবিজ, এমপিএল ও স্পোর্টস কনভোর মতো সাতটি স্টার্ট-আপ ব্র্যান্ডকে এনডোর্স করেন কোহলি। তাঁর মোট ব্র্যান্ড এনডোর্সমেন্টের সংখ্যা ১৮টি। প্রতিটি বিজ্ঞাপন শ্যুট করার জন্য বার্ষিক সাড়ে সাত থেকে দশ কোটি টাকা নিয়ে থাকেন তিনি। বলিউড ও স্পোর্টস ইন্ডাস্ট্রি মিলিয়ে এত টাকা আর কোনও সেলেব চার্জ করেন না। ব্র্যান্ড এনডোর্স করেই কোহলির পকেটে ঢোকে ১৭৫ কোটি টাকা।
এবার আসা যাক সোশ্যাল মিডিয়ায়। ইনস্টাগ্রামে কোহলি বিজ্ঞাপন সংক্রান্ত পোস্ট করার জন্য ৮.৯০ কোটি টাকা নিয়ে থাকেন। ট্যুইটারের ক্ষেত্রে ২,৫ কোটি টাকা। কোহলির মুম্বই (৩৪ কোটি টাকা) ও গুরুগ্রামে (৮০ কোটি টাকা) দু’টি প্রাসাদোপম বাড়ি রয়েছে। ৩১ কোটি টাকার গাড়িই আছে তাঁর। এসব বাদ দিলেও কোহলি আরও কিছু গল্প রয়েছে। তিনি এফসি গোয়া ফুটবল ক্লাবের অন্যতম মালিক। টেনিস টিম ও প্রো-রেস্টলিং টিমও আছে কোহলির।