জানা গিয়েছে ওই গ্রামেরই বাসিন্দা উত্তম মণ্ডল। অসুস্থতার কারণে মৃত্যু হয় তাঁর মা মায়ারানি মণ্ডলের। আর দেহ বাড়িতে আনার সময় এবং তারপর শ্মশানে নিয়ে যাওয়ার সময় কার্যত এক কোমর জল পেরিয়েই যাতায়াত করতে হয়েছে তাঁদের।
এই প্রসঙ্গত, মৃতা মায়ারানি মণ্ডলের ছেলে উত্তম মণ্ডল বলেন, ‘মায়ের যে অসুখ, তাঁকে এখান থেকে হাসপাতাল নিয়ে যেতে এত কষ্ট হয়েছে যে বলার কথা নয়। কোনওরকমে পাঁজাকোলা করে এখান থেকে জল পারাপার করে নিয়ে গিয়েছি। মা মারা গিয়েছেন, এখান দিয়েই নিয়ে গিয়েছি। শুধু সৎকার নয়, ছোট বাচ্ছাদেরও স্কুলে যাওয়ার সময় গামছা পরে এপার থেকে ওপারে যেতে হয়। তারপর পোশাক পরে স্কুলে যায় তারা।’ এমনকী মহিলাদেরও কার্যত পোশাক হাঁটুর ওপরে তুলেই জল পারাপার করতে হয় বলে জানাচ্ছেন উত্তমবাবু।
বেড়েছে সাপের উপদ্রব
অঞ্জলি মুখোপাধ্যায় নামে এক মহিলা বলেন, ‘আজ ১০ বছর এভাবে জল পারাপার করে যাতায়াত করছি। ছেলেমেয়েরাও স্কুলে যাচ্ছে গামছা পরে। গামছা পরে পারাপার করছে, তারপর পোশাক পরে স্কুলে যাচ্ছে। বিকল্প রাস্তা নেই, কোথায় যাব আমরা? যাতায়াতের পথে সাপে কামড়াচ্ছে, ৫ জনকে সাপ কামড়েছে। প্রশাসনকে অনেকবার জনিয়েছি।’ গ্রামের এক বয়স্কা মহিলা বলেন, ‘যাতায়াতের অসুবিধা, সাপ কামড়াচ্ছে, ছেলেমেয়েরা গামছা পরে পারাপার করছে স্কুলে যাওয়ার জন্য। আমরা চাই রাস্তাটা ভাল করে দিক।’
প্রসঙ্গত, রাজ্যে চলছে ভরা বর্ষা। গতকাল থেকে নিম্নচাপের কারণে কলকাতা-সহ দক্ষিণঙ্গের বিভিন্ন জেলায় চলছে বৃষ্টি। যার জেরে বিভিন্ন নদীতে বেড়েছে জলস্তর। একই কারণে জল জমার খবর আসতে শুরু করেছে বিভিন্ন জায়গা থেকে। বিশেষত নিচু জায়গাগুলি ইতিমধ্যেই জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। সেক্ষেত্রে এই পরিস্থিতিতে খুব স্বাভাবিকভাবেই সমস্যা আরও বেড়েছে মহিষাদলের বেতকুণ্ড গ্রাম পঞ্চায়েতের শুকলালপুরে। গ্রামবাসীরা বারে বারে অভিযোগ জানিয়েও কোনওরকম সুরাহা আজ পর্যন্ত পাননি। সেক্ষেত্রে দেখার দীর্ঘ ১০ বছরের সমস্যার সমাধান আদতে কবে হয়।