Nusrat Jahan : নুসরত দিয়েছেন সুযোগ! বঙ্গ বিজেপির ফার্স্ট বেঞ্চে জায়গা পেতে ঝোড়ো ইনিংস শঙ্কুর – shankudeb panda raised his voice against actress nusrat jahan know his total political career from tmc to bjp


উত্থান দেখেছেন, পতনেরও সাক্ষী। সর্বহারা জমিদার জমি পুনরুদ্ধারে কী রকম মরিয়া হতে পারে, তা তিনি ভালোই টের পাচ্ছেন। দীর্ঘ সময় ধরে ক্ষমতার ধারে কাছেও নেই। বাংলার রাজনীতিতে যখন ‘প্রভাবশালী’-দের ছাড়াছাড়ি, তিনিই বা বাদ যান কেন। সুযোগও এসে গিয়েছে। পরিবর্তিত বাংলায় তখন শিক্ষা ক্ষেত্রে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন শঙ্কুদেব পণ্ডা। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রাক্তন ফার্স্ট সিটিজেনের প্রভাব দেখে রসিক রাজনীতিকরা বলতেন, বাংলার শিক্ষায় অনিলায়নের পর শঙ্কুয়ান শুরু হয়েছে।

কিন্তু, চিরদিন কাহারও সমান নাহি যায়। সারদা-নারদায় নাম জড়ানোর পাশাপাশি দলের অভ্যন্তরীণ অঙ্কের হিসেবে পরপর ভুল করে বসেন শঙ্কু। ক্ষমতার নিউক্লিয়াস থেকে যান ছিটকে। দলবদল করে কামব্যাকের চেষ্টা অবশ্য করেছিলেন। তবে লাভ হয়নি। রাজনীতির কারবারীদের একাংশের মতে, বিজেপিতে শঙ্কুদেব পণ্ডা সেকেন্ড ক্লাস সিটিজেন।

Nusrat Jahan Case: ‘লোন নিয়ে মিথ্যে বলছেন! অবিলম্বে গ্রেফতার করা হোক নুসরতকে’, পালটা দাবি শঙ্কুদেবের
অভিনেত্রী তথা তৃণমূল সাংসদ নুসরত জাহানের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ ইস্যুতে ফের প্রথম সারিতে আসার সুযোগ পেয়েছেন শঙ্কু। নুসরত তথা তৃণমূলকে প্যাঁচে ফেলার দায়িত্ব তাঁকেই দিয়েছে বিজেপি। বাংলার সাপলুডোর রাজনীতির বহুকাঙ্খিত মইয়ের নীচে দাঁড়ানোর সুযোগ ভালো ভাবেই কাজে লাগিয়েছেন এক সময়ের ফায়ারব্র্যান্ড ছাত্রনেতা। তাঁর ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইকে’ ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ে সাংবাদিক বৈঠক করতে বাধ্য হয়েছেন অভিনেত্রী-সাংসদ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘নুসরতের লড়াই, নুসরতকেই লড়তে হবে’। এদিকে আরেক লড়াই চলছে জোরকদমে। ক্ষমতা ফিরে পাওয়ার। মইয়ের নীচ থেকে লাফ দিয়ে উপরে কি উঠতে পারবেন শঙ্কু স্যার?

Nusrat Jahan Rudranil Ghosh: ‘সেদিনই গ্রেফতার হওয়া উচিত ছিল…’, নুসরত নিয়ে মুখ খুললেন রুদ্রনীল
ছাত্রাবস্থা থেকেই রাজনীতিতে

একটা সময় ছিল তৃণমূলের অন্যতম প্রধান নেতা ছিলেন শঙ্কুদেব পণ্ডা। কিন্তু পরবর্তীকালে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে পরিবর্তন আসে। সারদাকাণ্ডে নাম জড়ানোর পর তাঁর সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয় তৃণমূলের। এক সময়ে তৃণমূল ভবনে তাঁর প্রবেশেও নিষেধাজ্ঞা জারি হয়। যদিও শুরুর দিকে চিত্রটা এরকম ছিল না। ছাত্রাবস্থা থেকেই রাজনীতির সঙ্গে গভীরভাবে যুক্ত থেকেছেন শঙ্কুদেব। সেই সময় বাম ছাত্র সংগঠনের বিপরীতে গিয়ে দক্ষিণপন্থী রাজনৈতিক শিবিরে রীতিমতো দাপটের সঙ্গে কাজ করেছেন তিনি।

Nussrat Jahan: নুসরতের বিরুদ্ধে ২৪ কোটি টাকার প্রতারণার অভিযোগ! ইডি-কে নথি যোগালেন শঙ্কুদেব, মুখে কুলুপ অভিনেত্রীর
সাংবাদিক শঙ্কু
পেশাগতভাবে শঙ্কুদেব ছিলেন সাংবাদিক। টেলিভিশন সাংবাদিকতার সঙ্গে যুক্ত থেকেছেন বহু বছর। ২০০৭ সালে নন্দীগ্রামের তৎকালীন বাম বিধায়ক মহম্মদ ইলিয়াসের বিরুদ্ধে স্টিং অপারেশন চালিয়ে রাতারাতি তোলপাড় ফেলে দেন রাজ্য রাজনীতিতে। অনেকে বলেন, সেটিই ছিল বঙ্গ রাজনীতির প্রথম স্টিং অপারেশন। আর সেই অপরেশনই তাঁকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তথা তৃণমূল কংগ্রেসের কাছাকাছি এনে দেয়। একটা সময় তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতি ছিলেন শঙ্কু। সামলেছেন দলের অন্যতম সাধারণ সম্পাদকের পদও।

নাম জড়ায় সারদা ও নারদাকাণ্ডে
এ পর্যন্ত ঠিকঠাকই চলছিল। কিন্তু সমস্যা তৈরি হল সারদাকাণ্ডে শঙ্কুদেবের নাম জড়ানোর পর। সিবিআই-ইডির জেরার মুখে পড়তে হয় তাঁকে। এমনকী কালো কাপড়ে মুখ ঢেকে ইডি দফতরে ঢুকতেও দেখা যায় শঙ্কুকে। তদন্তকারী সংস্থাগুলি যখন রীতিমতো জোরকদমে তদন্ত চালাচ্ছে, ঠিক সেই সময়ই শঙ্কুকে দলের সমস্ত পদ থেকে সরিয়ে দেয় তৃণমূল। এমনকী যে তৃণমূল ভবন একসময় ছিল শঙ্কুর সর্বক্ষণের ঠিকানা, সেখানেও তাঁর ঢোকার ওপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। সেই শুরু, তারপর থেকে ক্রমশই দলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়তে থাকে তাঁর। এখানেই শেষ নয়, নারদা স্টিং অপারেশনের ভিডিয়োতেও দেখা যায় শঙ্কুকে। যদিও সেই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি এই সময় ডিজিটাল।

ছবিও তৈরি করেছেন শঙ্কু
এরই মাঝে আবার নিজের কেরিয়ারকে অন্যভাবে সাজানোর পরিকল্পনা করেন শঙ্কুদেব পণ্ডা। নামেন ছবির কাজে। সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম আন্দোলনের ওপরে ভিত্তি করে ২০১৭ তৈরি করেন ছবি, নাম ‘কমরেড’। ছবিটি বক্স অফিসে সেভাবে সাফল্য পায়নি। সেই সময় মোটামুটি বেশ কিছুদিন কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গেই শঙ্কুর যোগাযোগ থাকার তেমন কোনও খবর পাওয়া যায়নি।

পদ্ম শিবিরে যোগদান
এরপর আবারও সক্রিয় রাজনীতির অলিন্দে শঙ্কুদেব পণ্ডা। ২০১৯ সালে যোগ দেন বিজেপিতে। সেই সময় বিজেপিতে ছিলেন মুকুল রায়। তাঁর হাত ধরেই শঙ্কু ফের রাজনীতিতে ফেরেন। তবে বিজেপিতে আসার পরেও যে খুব একটা প্রথম সারিতে দেখা গিয়েছে শঙ্কুকে তেমনটা অবশ্য মনে করেন না রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের অনেকেই। এমনকী মুকুল রায় বিজেপি ছেড়ে ফের তৃণমূলে যোগদানের কিছুদিন পর একবার দলের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছাড়তেও দেখা যায় শঙ্কুকে। যদিও সেই সময় পরিস্থিতি সামাল দেয় বিজেপি। আপাতত পদ্ম শিবিরেই রয়েছেন তিনি।

Nusrat Jahan Video : ‘ইন্টারেস্টের সঙ্গে সব টাকা দিয়ে দিয়েছি’, জানালেন নুসরত

দীর্ঘ সময় পরে সুযোগ এসেছে। রাজনীতির ঘূর্ণি পিচে চালিয়ে খেলা শুরুও করে দিয়েছেন শঙ্কু। লোকসভা ভোটের আর কয়েক মাস বাকি। বিজেপিতে জোর কদমে চলছে সংগঠনের ফুটিফাটা মেরামতির কাজ। শোনা যাচ্ছে, শীঘ্রই জেলা সভাপতি স্তরে বড়সড় রদবদল হবে। সেই সুযোগে পদপ্রাপ্তি হলে মন্দ কি! ফলে জান লড়িয়ে দিচ্ছেন শঙ্কু। চাপাচাপি করে বসতে তাঁর আপত্তি নেই। কিন্তু, বঙ্গ বিজেপির ফার্স্ট বেঞ্চে একটা সিট তাঁর চাই-ই চাই।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *