তার ভিত্তিতে ২০১২ সালে তাদের নিয়োগ করা হয়েছিল। সেই নিয়োগ মামলা এখন হাইকোর্টে বিচারাধীন। এই অবস্থায় ৩১ জুলাই সোমবার থেকে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কাছ থেকে মুচলেখা সংগ্রহের কাজ চলছে । পূর্ব মেদিনীপুরের স্কুল পরিদর্শনের অফিস থেকে ওই শিক্ষক-শিক্ষিকাদের হলফনামা ফর্ম ও নোটিশের কপি নিতে হবে বলে জানানো হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আপত্তি তুলেছিলেন শিক্ষক শিক্ষিকারা।
এভাবে মুচলেকা-হলফনামা জমা দেওয়ার নির্দেশে ব্যাপক অসন্তোষ শিক্ষক মহলে। একাধিক নিয়োগ প্রক্রিয়া হাইকোর্টে বিচারাধীন। আদালতের কাছে যে মামলার জন্য পর্ষদ দায়বদ্ধ রয়েছেন, সেখানে কারণ ছাড়াই শিক্ষক শিক্ষিকাদের জড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে দাবি করে প্রতিবাদ জানিয়েছেন তারা।
জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সাংসদ সভাপতি এ বিষয়ে বলেন, ২০১২ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে ২০১৬ সালে হাইকোর্টে একটি মামলা হয়েছিল। কারও আত্মীয় ইন্টারভিউ বোর্ডে ছিলেন কীনা তা শিক্ষকদের কাছে জানতে চেয়ে একটি ঘোষণা পত্র জমা দেওয়ার শর্ত দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই সময় সেটি হাইকোর্টে জমা দেওয়া হয়নি। এখন ফের বিষয়টি হাইকোর্ট চেয়েছে তাই শিক্ষক-শিক্ষিকাদের থেকে একটি চাওয়া হয়েছে । কোন শিক্ষক-শিক্ষিকার আত্মীয় ইন্টারভিউ বোর্ডে থাকলে তাকে ব্যাখ্যা দিতে হবে।
গত শনিবার ২৯ জুলাই স্কুল শিক্ষা পর্ষদের অধিকার অফিসে আসেন জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সাংসদ সভাপতি। সেখানে জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক, প্রাথমিক ৪৫টি চাকরি স্কুল পরিদর্শক এবং শিক্ষক সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। সেখানেই মুচলেখা আদায় বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। তারপর রাতে জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক সকল অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকের কাছে চিঠি পাঠান । সেই চিঠিতেই বলা হয় ২০১২ সালে নিযুক্ত শিক্ষক শিক্ষিকারা নিজের এলাকায় এসআই অফিস থেকে ৩১ জুলাই এবং নোটিশের কপি সংগ্রহ করবেন ।আর অবশ্যই নোটারি পাবলিক কিংবা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছ থেকে তা এফিডেভিট করতে হবে।
কোর্টে এই এফিডেভিট জমা দেওয়ারই কাজ চলছিল। হঠাৎ ভবানীপুর থানার পুলিশের তরফ থেকে ফোন করে ডাকা হয় শিক্ষকদের। বিকাল সাড়ে চারটের সময় থানায় আসতে বলা হয়। তড়িঘড়ি করে স্কুল শিক্ষক শিক্ষিকারা ছুটে আসেন ভয়ে ভয়ে। সকলের মনে একটাই ক্ষোভ, ‘স্কুলের শিক্ষা প্রাঙ্গণ ছেড়ে কেনই হঠাৎ থানায় ডাকল? আমরা কি কোনও অপরাধী!’ শিক্ষক-শিক্ষিকারা থানায় এসে জিজ্ঞাসা করেন এমন আচরণের কারণ কী?
সূত্রের খবর, শিক্ষক-শিক্ষিকাদের জানানো হয়েছে এসআই অফিসের যে কপি জমা দেওয়া হচ্ছে, তারই একটি জেরক্স কপি থানাতে জমা দিতে হবে। এই নিয়ে শিক্ষক যশোরাজ ব্রহ্মচারী বলেন, ‘আমাদের এই ধরনের কোন শিক্ষা দফতর থেকে সার্কুলার নেই, যে থানাতে জমা দিতে হবে। তাই হঠাৎ ফোন যেতে অনেকেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। তবে পুলিশের সঙ্গে কথা বলে যা জানতে পেরেছি জেলা পুলিশের তরফ থেকে থানাতে একটি অর্ডারে সুবাদে এরা ডেকেছিলেন এবং কপি চেয়েছেন।’ তবে বিষয়টি নিয়ে যথেষ্ট ক্ষোভ ছড়িয়েছে।