সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজভবনে অমিতাভকে ডেকে পাঠিয়ে শুক্রবারের মধ্যে ইস্তফা দিতে বলা হয়। সেই মতো এ দিন অমিতাভ ইস্তফাপত্র পাঠিয়ে দেন। এর আগে ১৩ ও ১৭ জুলাই যথাক্রমে ম্যাকাউট ও উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্যদেরও আগাম কোনও কারণ না জানিয়ে সরিয়ে দিয়েছিল রাজভবন। এক মাসের মাথায় অবসরের বয়স হওয়ায় সরে যেতে হয়েছিল বর্ধমানের অন্তর্বর্তী উপাচার্যকেও। জুনের প্রথম দিকে এঁরা সবাই উপাচার্যর অফিসের দায়িত্ব নিয়েছিলেন। নেতাজি সুভাষ মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্য চন্দন বসু আবার শিক্ষক ও কর্মীদের একাংশের বিক্ষোভের জেরে ১৮ জুলাই ইস্তফা দিয়েছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর, শুক্রবার তাঁর ইস্তফা গ্রহণের কথা জানিয়ে রাজভবন চিঠি পাঠিয়েছে ক্যাম্পাসে। আচার্য-রাজ্যপালের খামখেয়ালিপনা নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে শিক্ষামহলে।
শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বিধানসভায় তাঁর ঘরে এ ব্যাপারে প্রশ্নের উত্তরে বলেন, ‘উচ্চশিক্ষায় এই নৈরাজ্যের অবসান ঘটাতেই আমরা স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগে সার্চ কমিটি গঠনে বিল পাশ করিয়েছি।’ অমিতাভ সংবাদমাধ্যমের একাংশকে বলেন, ‘এটা একেবারেই রাজ্যপালের অগ্রাধিকার। আমি কিছু জানি না। উনি নিয়োগ করেছিলেন। উনিই সরে যেতে বলেছেন।’ অমিতাভ অবশ্য উপাচার্যর অফিস ও গাড়ি ব্যবহার করতেন না। বিশেষ ভাতাও নিতেন না। তবে যাদবপুরের মতো প্রতিষ্ঠানে মাত্র দু’মাসের মাথায় উপাচার্যকে সরিয়ে দেওয়া রাজভবনের অস্থিরমতির নামান্তর হিসেবেই দেখছেন শিক্ষামহলের অনেকে।
রাজ্যের শাসক-ঘনিষ্ঠ এডুকেশনিস্টস’ ফোরামের তরফে অধ্যাপক ওমপ্রকাশ মিশ্র এক বিবৃতিতে অভিযোগ করেন, ‘বিভিন্ন রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়ে যখন-তখন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য নিয়োগ ও তাঁদের অপসারণের বিষয়টি গভীর উদ্বেগজনক। এই জাতীয় খামখেয়ালি সিদ্ধান্তের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থিরতা তৈরিতে আচার্যর সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা রয়েছে।’ ওয়েবকুটা’র সাধারণ সম্পাদক এবং যাদবপুরের অধ্যাপক কেশব ভট্টাচার্যর কথায়, ‘শিক্ষার স্বার্থ না দেখে শুধু কর্তৃত্ব রাখতে গিয়ে রাজ্যপাল যে ভাবে প্রবীণ শিক্ষকদের অপমান করছেন, আমরা তার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা করছি।’ যাদবপুরের ক্ষেত্রে এ দিন রাত পর্যন্ত নতুন কাউকে দায়িত্ব দেওয়ারও খবর নেই।