Calcutta High Court : এজলাসে হাজির ‘ইন্টারন্যাশানাল জজ’-কে ঠান্ডা মাথায় সামাল, বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যকে চেনেন? – know about calcutta high court justice sabyasachi bhattacharyya who deals with a trespassers in recent times


ব্যস্ত এজলাস, কলকাতা হাইকোর্টের নয় নম্বর রুমে নিজ আসনে বসে রয়েছেন বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য। সামনে রয়েছেন আইনজীবীরা। বিভিন্ন মামলার কাজকর্ম চলছে। কিন্তু, একটি মামলার ডাক দেওয়া হতেই এগিয়ে এলেন এক চেক শার্ট পরা ছিপছিপে এক ব্যক্তি। জানালেন তাঁর নাম ড এ কে ঘরা। তিনি ইন্টারন্যাশানাল জজ।

এরপরেই পর্যায়ক্রমে চলল ঘটনা। একের পর এক ‘উড়ে আসা’ কথা শান্তস্বরে সামাল দিলেন বিচারপতি। কখনও প্রশ্ন ছুঁড়লেন তিনি, কখনও আগন্তুককে বলার সুযোগ করে দিলেন, শেষমেশ ঝঞ্ঝাহীনভাবে হল ঘটনার নিষ্পত্তিও। ওই ব্যক্তিকে নিয়ে যেমন হাসির একটা হলকা হাওয়া বইছে, তেমনই বিচারপতির প্রশংসার পঞ্চমুখ অনেকেই। পরিস্থিতি যেভাবে সামাল দিয়েছেন তিনি, তাতে ‘মুদ্ধ’ এজলাসে উপস্থিত আইনজীবীদের একাংশ। এই পুরো ঘটনা জানার পর বিচারপতির প্রশংসায় পঞ্চমুখ নেটিজেনদের একাংশ।

Bombay High Court Judge Resigns : ‘আই অ্যাম সরি!’ ভরা এজলাসে নাটকীয় পদত্যাগ হাইকোর্টের বিচারপতির
প্রসঙ্গত, ক্যালকাটা বয়েস স্কুলের প্রাক্তনী সব্যসাচী ভট্টাচার্য। ১৯৯৫ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে LLB(পাঁচ বছরের কোর্স) পাশ করেন তিনি। এরপর অ্যাডভোকেট হিসেবে শুরু হয় তাঁর কর্মজীবন। ২০১৪ সালে ২ জুন থেকে তিনি সিনিয়র অ্যাডভোকেট হিসেবে কর্মরত। ২২ বছর ধরে তিনি কলকাতা হাইকোর্টের ‘অ্যাপিলেট পক্ষ’-এর হয়ে কার্যনির্বাহ করেছেন। ২০১৭ সালে ২১ সেপ্টেম্বর থেকে তিনি কলকাতা হাইকোর্টের অ্যাডিশনাল জজ-এর দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০১৯ সালে ১৬ সেপ্টেম্বর তাঁকে কলকাতা হাইকোর্টের ‘পার্মানেন্ট জজ’ হিসেবে নিয়োগ করা হয়।

Calcutta High Court: ‘সুপ্রিম নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে লাখ লাখ টাকা খরচ…!’ রামনবমী মামলায় রাজ্যের ভূমিকায় ক্ষোভ
‘আমি ইন্টারন্যাশানাল জজ’
আগন্তুককে কী ভাবে সামাল দিলেন বিচারপতি! আগন্তুকের দাবি ছিল ‘ইন্টারন্যাশানাল পার্লামেন্ট কোর্ট’-এর থেকে নিয়োগ করা হয়েছে তাঁকে। শুনে কার্যত থ বিচারপতি। শান্ত স্বরে তিনি জিজ্ঞাসা করেন, “কই কাগজপত্র দেখান দেখি!” আগন্তুকের দেখানো সার্টিফিকেট পুরোপুরি বাংলায় লেখা। আরও তা দেখেই হালকা ছলেই বিচারপতি বলেন, “ইন্টারন্যাশানাল কোর্ট বাংলায় লিখতে বলেছে!”

Justice Abhijit Ganguly : ‘আদানিকে স্কুল বেচে দিন…’, শিক্ষকদের ‘দুর্দশা’ দেখে মন্তব্য ক্ষুব্ধ বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের
ওই ব্যক্তি অসংলগ্ন কথা বলতে দেখে বিচারপতি জানতে চান, “আপনি কি এই মামলায় পার্টি?” আগন্তুকের মন্তব্য, “এটা কোন মামলা?” ধীরে ধীরে গোটা চিত্রটা স্পষ্ট হয়ে যায় বিচারপতির কাছে। কিন্তু, গলার স্বর সামান্যতম উচ্চ করেননি বিচারপতি। শান্তস্বরে পরিস্থিতির সামাল দেন।

কিন্তু, মিস্টার ঘরাও থামার পাত্র নন। তিনি যে ওয়ার্ল্ড পার্লামেন্ট কোর্টে মামলা জিতেছিলন তার ফিরিস্তি দিতে শুরু করেন। পাশাপাশি তাঁর গায়ে হাত দেওয়া হয়েছে, মেরে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে ইত্যাদি ইত্যাদি কথা শুনিয়েই ছাড়বেন তিনি। সঙ্গে দেদার চলল অজ্ঞাত কোনও ভাষার ফোয়ারা। বিচারপতির প্রশ্ন ছিল, “এ কোন ভাষা! আমরা তো বুঝতে পারছি না।” এরসময় যা বোঝার বুঝে তিনি বলেন, “আপনার জায়গা ওখানে নয়, এখানে এসে বসুন।”

IIT Student Death : গরহাজির রাজ্যের কৌঁসুলি! বিরক্ত প্রধান বিচারপতি
ঘরার ‘সুমতি’ বহু দূরে দেখে বিচারপতি আর কথা এগোননি। তিনি বলেন “আপনি সোজা চিফ জাস্টিসের ঘরে চলে যান। সেখানে আপনার মামলা হবে। “

মিস্টার ঘরা এজলাস ছাড়ার কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই এক আইনজীবী মামলা শোনাতে যান। কিন্তু, পূর্বের কয়েক মিনিটের স্মৃতি স্মরণ করে বিচারপতি বলেন, “আগে সকলকে এই দুনিয়ায় ফিরে আসতে দিন”



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *