ডেঙ্গির চোখ রাঙানিতে নাজেহাল অবস্থা সরকারি হাসপাতালে। রোগীর চাপ সামলাতে গলদঘর্ম অবস্থা হাসপাতালের কর্মরত চিকিৎসক থেকে শুরু করে স্বাস্থ্যকর্মীদের। ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিদিনই তীব্র হওয়ায় বেডে জায়গা নেই রোগীদের। ঘটনা নদিয়ার শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালের।
গত কয়েক মাস ধরে গোটা জেলা জুড়ে বেড়েই চলেছে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা। অনেকটাই ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে রোগী পরিবারগুলিকে। বেডে জায়গা না থাকার কারণে মেঝেতেই শুয়ে চিকিৎসা চলছে অনেক ডেঙ্গি আক্রান্ত রোগীদের। সেই চিত্র ধরা পরল শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে। হাসপাতালের কর্মরত এক নার্স বলেন, ‘আমাদের কাজের চাপ তো প্রচণ্ড বাড়ছে। কখনও পরপর শিফটে কাজ করতে হচ্ছে। ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ার কারণেই চাপ বাড়ছে। তবে যতটা সম্ভব পরিষেবা দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে।’
হাসপাতাল সূত্রে খবর, একটি মহিলা ওয়ার্ডে রয়েছে চল্লিশটি বেড। আর ডেঙ্গি আক্রান্ত রোগী রয়েছে ৮০ জনেরও বেশি। তার মধ্যেও অন্যান্য রোগীদেরও চলছে চিকিৎসা। রোগীর পরিবারের সদস্যের দাবি, আরও বেড সংখ্যা বাড়লে হয়তো চিকিৎসা ক্ষেত্রে অনেকটাই সুবিধা হত রোগীদের। অন্যদিকে, হাসপাতলে কর্মরত স্বাস্থ্য কর্মীদের দাবি, দিনরাত এক করে তারা কাজ করছেন। কিন্তু কিছুতেই সামাল দিতে পারছেন না।
এখন একটাই দুশ্চিন্তা তাদের, প্রতিদিনই যেভাবে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে কিভাবে তা সামাল দেবেন। রোগীদের সামলাতে গিয়ে নিজেরাও বেসামাল হয়ে যাচ্ছে বলে জানাচ্ছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। তবে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লেও মুখে কুলুপ শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালের সুপারের। তাঁকে প্রশ্ন করলে সাংবাদিকদের কোনও প্রশ্নের উত্তর দিতে চাননি তিনি।
নদিয়ায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে তিনজনের মৃত্যুর খবর এখনও পর্যন্ত পাওয়া গিয়েছে। এর মধ্যে রানাঘাট এলাকা থেকে দুজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। দুদিন আগেই শান্তিপুর পুরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডে ৬ জন ডেঙ্গি আক্রান্ত হন।
নদিয়া জেলায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যার নিরিখে গত সপ্তাহ শীর্ষে ছিল সারা রাজ্যে। পুর ও পঞ্চায়েত সমিতি এলাকার হিসেব অনুযায়ী রানাঘাট পুরসভা ৫৭ জন এবং রানাঘাট ব্লক-১ ১৬ জন আক্রান্ত হন গত সপ্তাহে। ডেঙ্গি রোধে বিশেষ ব্যবস্থা নিতে শুরু করে শান্তিপুর পুরসভা। এলাকায় এলাকায় পরিদর্শনে যান পুরসভার প্রতিনিধিরা। কোথাও জল, আবর্জনা জমে আছে কিনা তার পর্যবেক্ষণ শুরু করেন।