BJP নেতার বাবা সুফল চন্দ্র ঘোষ কল্যাণী থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।তার ছেলেকে পরিকল্পনা করে খুন করা হয়েছে।হোটেলের ঘর থেকে মৃতদেহ উদ্ধারের পর মর্গে পাঠানো হয়।সুদীপের মাথার পিছনে আঘাতের চিহ্ন ছিল বলে অভিযোগ পত্রে লিখেছেন তিনি।
সম্প্রতি হুগলিতে সাংগঠনিক পদে রদবদল হয়।পুরনো মণ্ডল সভাপতিদের সরিয়ে নতুন মণ্ডল সভাপতি করা হয়।সুদীপ ঘোষকে করা হয় ধনিয়াখালি-২ এর সভাপতি।গত চার তারিখ চুঁচুড়ায় BJP-র হুগলি জেলা কার্যালয়ে নতুন মণ্ডল সভাপতিদের নিয়ে কার্যকারিনী বৈঠক ছিল।সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন না সুদীপ।BJP নেতা তিন তারিখ বিকালে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন।মাকে ফোনে বলেছিলেন মগড়ায় আছেন, পাঁচ তারিখ সকালে ফিরবেন। কিন্তু, পাঁচ তারিখ তার মৃতদেহ উদ্ধার হয় কল্যাণীর হোটেল থেকে।হোটেলের ঘর থেকে মদের বোতল পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।সুদীপ দুই সন্তান আছে।
সুদীপের স্ত্রী অঞ্জলি জানান, ‘যারা আমার স্বামীকে খুন করেছে, তারা শাস্তি পাক। প্রয়োজনে সিবিআই তদন্ত করুক। শ্বশুর-শাশুড়ি সহ আমি অনেক বার বলেছিলাম পার্টি ছেড়ে দিতে । শুধু দলকে ভালোবাসতো বলে BJPতে থেকে গিয়েছে । আজ দলকে ভালবাসতে গিয়ে নিজের প্রাণটাই চলে গেল। প্রশাসনের কাছে আমার দাবি, আমার স্বামীকে যারা হত্যা করেছে তারা যেই হোক না কেন, যেন শাস্তি পায়। আমার স্বামীকে পরিকল্পনা করে দূরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আমরা কেউ যাতে খোঁজ না পাই সেই জন্যই তাকে দূরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।’
সুদীপের বাবা সুফল বাবুর অভিযোগ, ‘ছেলে BJP দলের সক্রিয় কর্মী। এলাকায় ভালো সংগঠন তৈরি করেছিল । আর তার এই উত্থানে শাসকদল বিপদে পড়ে যাচ্ছিল। তাদের সংগঠনের লোক কমে যাচ্ছিল। তাই ছেলেকে সরিয়ে দিতে পারলে শাসকদলের সংগঠন চাঙ্গা হয়ে উঠবে বলে আমার ধারণা। ছেলেকে পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে। ছেলে BJP করত তাই তার প্রতিদ্বন্দ্বিত ছিল শাসক দল। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে হুমকি দিয়েছিল।’
হুগলি জেলা BJP-র সভাপতি তুষার মজুমদার বলেন, ‘পুলিশকে না জানিয়ে হোটেল কর্তৃপক্ষ মৃতদেহ নামিয়েছে। ময়নাতদন্তের পরেও তার মাথায় একটি দাগ ছিল, পায়েতেও কালশিটে দাগ পড়েছিল । তাই আমরা কোনভাবে মনে করছি না এটা স্বাভাবিক মৃত্যু। পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিক থেকে দলের রাজ্য নেতৃত্বেকে বিষয়টি জানিয়েছি । ওই রাতের যে সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ্যে আনতে হবে ।’
যদিও শাসকদলের বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে হুগলি সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি অরিন্দম গুইন বলেন, ‘এই ঘটনার তদন্ত করছে পুলিশ। তৃণমূল কংগ্রেসের এত দুর্দিন আসেনি যে BJP-র কোনও মণ্ডল সভাপতিকে মারতে যাবে। এসব ফালতু কথা। মণ্ডল সভাপতি বাড়ি গুরাপে, সে হোটেলে কেন যাবে ? হোটেলে সে আনন্দ করতে গিয়েছিল না কিসের জন্য গিয়েছিল সেটা পুলিশ তদন্ত করে দেখছে।’