রাতে খেয়েদেয়ে ঘুমোনোর পরে এদিন সকালে বন্ধুদের সঙ্গেও আড্ডাও দিয়েছে সে। রবিবার রাতে গ্রেপ্তারের পরে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশকে এমনটাই জানিয়েছে অভিযুক্ত। নিহত তরুণীর বাড়ি শক্তিপুর থানা এলাকায়। শনিবার বিকেলে মুর্শিদাবাদের বড়ঞা থানার কল্যাণপুর-বিছুরগ্রামের একপ্রান্তে বড় পুকুরের পাশে এক তরুণীর মুণ্ডুহীন, ক্ষতবিক্ষত দেহ দেখতে পান স্থানীয়রা। বড়ঞা থানার পুলিশ এসে দেহ উদ্ধারের সময়ে নিহত তরুণী সবুজ রঙের টপ পরে থাকলেও নীচের অংশে কোনও কাপড় ছিল না।
রবিবার সকালে এলাকার যুবক ও সিভিক ভলান্টিয়ার নিহতের মাথার খোঁজে তল্লাশি চালানোর সময়ে জঙ্গলে তাঁর প্যান্ট খুঁজে পায়। শনিবার সন্ধ্যায় মোটরবাইকে এক যুবককে পুকুরের ধার থেকে বেরিয়ে যেতে দেখেন কয়েকজন। রবিবার পুলিশকে সেই সন্দেহের কথা জানানো হয়। গভীর জলাশয়ে কচুরিপানা ভর্তি থাকায় জাল ফেলে কিছু মেলেনি। বিকেলে বৃষ্টির মধ্যে ওই জলাশয়ে ২ জন ডুবুরিকে নামানো হয়। দীর্ঘক্ষণ তল্লাশির পরে সন্ধ্যার আগে কিশোরীর মুণ্ডুটি উদ্ধার করেন তাঁরা। জেলা পুলিশ সুপার সুরিন্দর সিং বলেন, ‘তরুণীর মাথা উদ্ধার হওয়ার পরে পরিচয় দ্রুত মেলে।
ইতিমধ্যে গ্রামবাসীদের বর্ণনা শুনে ওই যুবককে আটক করা হয় পাশের গ্রাম থেকে।’ জানা গিয়েছে, হারুগাছা গ্রামের কয়েক জন যুবক পুকুরের পাশে বসে গল্প করার সময়ে রক্তের দাগ দেখতে পায়। সেই দাগ দেখে একটু এগোতেই পুকুর ধারে তরুণীর মুণ্ডুহীন দেহ দেখে খবর দেয় পুলিশে। গ্রামবাসী গৌতম রায় বলেন, ‘শনিবার খবর পেয়ে ছুটে এসে দেখি মুণ্ডুহীন দেহ পড়ে রয়েছে। তখনই আমাদের মনে হয়েছিল, এলাকায় বাড়ি নয়। তবে পুলিশের নজরদারি আরও বাড়ানো উচিত।’
স্থানীয় বাসিন্দা চিন্ময় রায় বলেন, ‘গ্রামের পরিবেশ এখনও থমথমে। আতঙ্কও রয়েছে। তরুণীকে যেভাবে খুন করা হয়েছে তাতে ওই যুবকের ফাঁসি হওয়া দরকার। পরনের পোশাক না থাকায় আমাদের ধারণা, ধর্ষণের পরে খুন করা হয়েছে মেয়েটিকে। আমরা চাই দোষীর কঠোর শাস্তি হোক।’ স্কুল শিক্ষক জিতেন ঘোষ বলেন, ‘এর আগে এই ধরণের ঘটনা এলাকায় ঘটেনি। যেহেতু গ্রামের এক প্রান্তে এই বড় জলাশয় এবং আশপাশে চাষের জমি রয়েছে তাই সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে এই ঘটনা ঘটিয়েছে। তবে এই গ্রামে ওই যুবক এর আগে এসে দেখে গিয়েছে বলে আমাদের ধারনা।’পুলিশ সুত্রে জানা গিয়েছে অভিযুক্ত খুনের কথা স্বীকার করেছে। সম্পর্কের টানাপড়েনের জেরেই তাঁকে গলা কেটে খুন করেছে সে।